বিজ্ঞাপন
নিজস্ব প্রতিনিধি : “সীমান্ত হত্যা প্রতিরোধ ও সীমান্ত সুরক্ষায় বিজিবি’র ভূমিকা ও জনসচেতনতা, জননিরাপত্তা ও আস্থা” শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় গজুকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মতবিনিময় সভায় গজুকাটা ক্যাম্প কমান্ডার নূর হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিয়ানীবাজার ব্যাটালিয়ন (৫২বিজিবি) এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোঃ মেহেদী হাসান, পিপিএম।
তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, বিয়ানীবাজার ব্যাটালিয়ন সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলা ও মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা এবং জুড়ী উপজেলায় সর্বমোট ১১৩.৫ কিঃ মিঃ সীমান্ত এলাকায় সীমান্ত রক্ষা, সীমান্ত হত্যা বন্ধ, চোরাচালান দমন, অবৈধ সীমান্ত পারাপার, নারী ও শিশু পাচার, মাদকদ্রব্য পাচার, মানব পাচার এবং অস্ত্র পাচার প্রতিরোধ করাসহ বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছে। এ ছাড়াও সীমান্তে বসবাসরত জনসাধারণের জান-মাল রক্ষা করতেও বিজিবি অঙ্গীকারবদ্ধ রয়েছে। সীমান্তে মানবাধিকার লঙ্গনসহ সীমান্ত চুক্তির যে কোন ব্যত্যয় ঘটলে বিজিবি তার জোরালো প্রতিবাদলিপিসহ কার্যকরী ভূমিকা পালন যাচ্ছে।
প্রধান অতিথি আরো বলেন, বিগত দিন বিয়ানীবাজার ব্যাটালিয়ন কর্তৃক সীমান্ত এলাকায় অসহায় মানুষের পাশে থেকে প্রাকৃতিক দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণকে বিভিন্ন প্রকারের সহযোগিতা প্রদানসহ, শীতকালে শীতবস্ত্র বিতরণ, গরীব দুস্থদের মাঝে জীবনের মান উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ, ইফতার সামগ্রী বিতরণ, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ত্রাণ বিতরণসহ নানাবিধ কর্মকান্ড চালিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে সমসাময়িক সময়ে একটি বিষয় খুব গুরুত্বের সাথে আলোচিত হচ্ছে আর তা হচ্ছে সীমান্ত হত্যা। সীমান্তে যে কোন ধরনের হত্যা কিংবা শারীরিক নির্যাতন একটি গর্হিত কাজ।
বাংলাদেশ সরকার এবং বিজিবি সর্বদাই এর নিন্দা জানিয়ে আসছে। সীমান্ত লঙ্গনের অপরাধে কাউকে গুলি করে হত্যা করা কখনই সমাধান হতে পারে না। কোন ভাবেই আমরা বিচার বর্হিভূত এই ধরনের হত্যাকে সমর্থন করি না। দুই দেশের সীমান্ত রক্ষীদের মধ্যে উঁচু পর্যায়ের বৈঠকে এ বিষয়ে বারবার প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। এই সীমান্ত হত্যায় নিহত পরিবারই একমাত্র স্বজন হারানোর বেদনা ও ক্ষতি সম্পর্কে অবগত। অন্য কেউ এর গভীরতা পরিমাপ করতে পারবে না।
এছাড়াও, সুষ্ঠু সীমান্ত ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাসরত জনসাধারণের সহযোগিতা ও পজেটিভ মনোভাব একান্ত প্রয়োজন। আমরা চাইবো সীমান্ত এলাকায় কোথাও কোন নিয়ম বর্হিভূত ঘটনা ঘটলে সাথে সাথে তা নিকটবর্তী বিজিবি ক্যাম্পে কিংবা ইউনিটে অবগত করার জন্য। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো খুব দ্রুত ঐ সব অনাকাংখিত ঘটনাসমূহের সমাধানকল্পে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে মাদকাসক্তি আমাদের সমাজে এক সর্বনাশা ব্যধিরূপে বিস্তার লাভ করেছে। মাদকদ্রব্যের বিস্তারে বিশ্ববাসী আজ সংকীত। দূরারোগ্য ব্যধির মতই তা তরুন সমাজকে গ্রাস করছে। বিঘ্নিত হচ্ছে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন। এর তীব্র দংশনে ছটফট করছে কত তরুন ও যুব সমাজ। মাদকের ভয়াবহ পরিনতি দেখে আজ প্রশাসন বিচলিত, অভিভাবকগণ আতংকিত, চিকিৎসকরা দিশেহারা। তরুণ যুব শক্তিই দেশের প্রাণ ও মেরুদন্ড। তাই আমি চাইবো মাদক পাচার প্রতিরোধে মাদক পাচার ও সেবন হতে বিরত থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিক, জনসাধারণ বিজিবিকে তথ্য দিয়ে মাদক কারবারীদের ধরিয়ে দিবেন।
পাশাপাশি বিজিবি তার গোয়েন্দা নজরদারীর জালে সবসময় এই গডফাদাকে ধরার পরিকল্পনা প্রণয়ন করছে। মাদক কে না বলুন এবং মাদকের বিরুদ্ধে বিজিবি’র সর্বদাই শক্ত অবস্থান এবং জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে।
প্রধান অতিথি বলেন, আপনাদের সকলের প্রতি আমার অনুরোধ দেশকে ভালোবেসে, দেশের মাটিকে সম্মান করে সীমান্ত এলাকা সংগঠিত যে কোন অপরাধ প্রতিরোধে আপনারা সকলেই বিজিবিকে সহায়তা করবেন। বিশাল এই এলাকায় বিজিবি'র স্বল্প সংখ্যক জনবল দিয়ে চোরাচালান, মাদক পাচার, নারী ও শিশু পাচার, অস্ত্র পাচার ইত্যাদিসহ আন্তঃ রাষ্ট্রীয় অপরাধ প্রতিরোধকরা সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে আপনাদের সঠিক তথ্য, সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য। তবেই দেশটাকে দূর্নীতি মুক্ত করে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে এবং সোনার বাংলা গড়া সম্ভব হবে।