Advertisement (Custom)

বিজ্ঞাপন
প্রকাশিত: সোমবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৪
সর্বশেষ সংষ্করণ 2024-10-21T11:50:03Z
জাতীয়রাজনীতি

রাষ্ট্রপতি ‘মিথ্যা' বলেছেন, পদে থাকার যোগ্যতা নিয়ে ভাবতে হবে : আইন উপদেষ্টা নজরুল

বিজ্ঞাপন

ডেস্ক রিপোর্ট : সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ‘মিথ্যাচার’ করছেন বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

সোমবার সচিবালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, “উনি যদি উনার বক্তব্যে অটল থাকেন, তাহলে উনি রাষ্ট্রপতি পদে থাকার যোগ্যতায় আছেন কি না, সেটা আমাদের উপদেষ্টামণ্ডলীর সবাইকে ভেবে দেখতে হবে।"

ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ অগাস্ট ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা, যার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে।

সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সেদিন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর দেন। সেদিন রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনও বলেন, ”প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এবং আমি তা গ্রহণ করেছি।”

এরপর সুপ্রিম কোর্টের মতামত নিয়ে নোবেলবিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সেই সরকারের শপথ পড়ান।

তার আড়াই মাসের মাথায় গত ১৯ অক্টোবর মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের ‘কোনো দালিলিক প্রমাণ’ তার কাছে নেই।

এ নিয়ে নানা আলোচনার মধ্যে সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

সাংবদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “রাষ্ট্রপতি বলেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র পান নাই, এটা হচ্ছে মিথ্যাচার, উনার শপথ লঙ্ঘনের সামিল।”

ঘটনার পরম্পরা ব্যাখ্যা করে আইন উপদেষ্টা বলেন, “উনি নিজেই ৫ অগাস্ট রাত ১১টা ২০ মিনিটে, পেছনে তিন বাহিনীর প্রধানকে নিয়ে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী উনার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং উনি সেটা গ্রহণ করেছেন। এরপর উনার কাছ থেকে সুপ্রিম কোর্টের অ্যাপিলেট ডিভিশনের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়- এ পরিস্থিতিতে করণীয় কী আছে?

“সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এই উপদেশমূলক এখতিয়ার প্রয়োগ করে জানতে চাওয়া হয়। এটার প্রেক্ষিতে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য বিচারপতিরা মিলে উনারা একটা মতামত প্রদান করেন, রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সের ভিত্তিতে। সেই মতামতের প্রথম লাইন হচ্ছে দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যেহেতু প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন....। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ অ্যাপিলেট ডিভিশনের সব বিচারপতি স্বাক্ষার করেছেন।”

উপদেষ্টা বলেন, “‘প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন এবং রাষ্ট্রপতি জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়েছেন, এর প্রেক্ষিতে একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা যায়’– সুপ্রিম কোর্টের অ্যাপিলেট ডিভিশনের এমন মতামতের ভিত্তিতে একটা নোট আইন মন্ত্রণালয় থেকে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে প্রেরণ করা হয়। এই অভিমতটা উনি দেখেছেন এবং গ্রহণ করেছেন, স্বাক্ষর করেছেন। এরপর উনি নিজে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করেছেন।

“৫ অগাস্ট রাত ১১টার ভাষণে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন এবং তিনি ওটা গ্রহণ করেছেন এমন কথা বলে এবং একের পর এক কার্যাবলীর মধ্য দিয়ে এটা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে, উনি পুরো জাতিকে বার বার নিশ্চিত করেছেন যে, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। প্রায় আড়াই মাস পরে উনি যদি বলেন যে, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগপত্র দেননি, তাহলে এটা স্ববিরোধীতা, শপথ লংঘন। উনি এই পদে থাকার যোগ্যতা আছে কিনা সে সম্পর্কে প্রশ্ন আসে।”

আসিফ নজরুল বলেন, "আপনার যদি শারীরিক বা মানসিক সক্ষমতা না থাকে বা আপনি যদি গুরুতর অসদাচারণ করেন, তখন রাষ্ট্রপতি হিসেবে আর ওই পদে থাকতে পারেন কিনা সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার স্কোপ আমাদের সংবিধানে আছে।"

সংবিধানের প্রথম পরিচ্ছেদের ৫৩ (১) ধারায় বলা হয়েছে, শারীরিক বা মানসিক অসামর্থ্যের কারণে রাষ্ট্রপতিকে পদ থেকে অপসারণ করা যাবে। তবে সেজন্য সংসদের দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন হয়।


বিজ্ঞাপন

জনপ্রিয় সংবাদ