Advertisement (Custom)

বিজ্ঞাপন
প্রকাশিত: সোমবার, ৫ আগস্ট, ২০২৪
সর্বশেষ সংষ্করণ 2024-08-19T17:37:32Z
গোলাপগঞ্জলিড নিউজ

গোলাপগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিতে নিহত ৬

বিজ্ঞাপন
ছবি : সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক : গোলাপগঞ্জে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচী পালনে পৃথক স্থানে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করলে বিজিবি-পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে ৩ জন ও সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরোও ৩জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও আহত হয়েছেন প্রায় অর্ধ শতাধিক।

গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতরা হলেন - ধারাবহর হাসপাতালের সামনের এক ব্যবসায়ী বারকোট গ্রামের মৃত মকবুল আলীর ছেলে তাজ উদ্দিন (৪০), আমুড়া ইউনিয়নের শিলঘাট গ্রামের কয়ছর আহমদের ছেলে সানি আহমদ (১৮), ঢাকাদক্ষিণ বাজারের ব্যবসায়ী নিশ্চিন্ত গ্রামের তৈয়ব আলীর ছেলে নাজমুল ইসলাম (২২), ঢাকাদক্ষিণ দত্তরাইল গ্রামের আলাউদ্দিনের পুত্র মিনহাজ উদ্দিন (২৪), পৌর এলাকার ঘোষগাও গ্রামের মৃত মোবারক আলীর ছেলে গৌছ উদ্দিন (৪০) ও ঢাকাদক্ষিণ রায়গড় গ্রামের ছুরুই মিয়ার ছেলে হাসান আহমদ (১৫)।

আহতদের সবার নাম পরিচয় তাৎক্ষণিক জানা যায়নি। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত ৭ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা সবাই সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আহতরা হলেন - ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের বারকোট গ্রামের মৃত মিয়ার পুত্র মো: জাবেদ আহমদ (২৩), একই গ্রামের আকিল আহমদের পুত্র ফরহাদ হোসেন (২২), ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের কানিশাইল গ্রামের মৃত শুক্কুর আলীর পুত্র হৃদয় আহমদ (২৫), ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের ফজলু মিয়ার পুত্র হাসিব আহমদ (২৩), একই ইউনিয়নের শরিফ আহমদ (২০)।

এদের মধ্যে হাসিব আহমদ ও শরিফ আহমদের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে। তাদের কোমরে গুলি লেগেছে।

গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা সুদর্শন সেন তাজ উদ্দিন ও সানি আহমদের নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এছাড়াও নাজমুল ইসলামের নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন তার পিতা তৈয়ব আলী এবং সংঘর্ষে মিনহাজ আহমদ, গৌছ উদ্দিন ও হাসান আহমদের নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ পরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী।

জানা যায়, সারাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচী পালনে রোববার সকাল ১১টার দিকে ঢাকাদক্ষিণ বাজারে শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করে। এসময় পুলিশ-বিজিবির সাথে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বাঁধলে উভয় পক্ষে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সংঘর্ষ প্রায় ৩ঘন্টা টানা চলে। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে পুলিশকে ধাওয়া দিয়ে শিক্ষার্থীরা ঢাকাদক্ষিণ গোলাপগঞ্জ রোডের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে নিয়ে আসলে সেখানে পুলিশ ও বিজিবির গুলিতে তাজ উদ্দিন, সানি আহমদ ও নজমুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসান আহমদ নিহত হয়।

এরপর বিকেল ৩টার দিকে গোলাপগঞ্জ পৌর শহরেও শিক্ষার্থীরা মিছিল করে। এসময় ঢাকাদক্ষিণে নিহত তাজ উদ্দিনের লাশ নিয়ে ঢাকাদক্ষিণ বাজারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরাও তাদের সাথে যোগ দিলে মিছিলকারীরা উত্তোপ্ত হয়ে উঠে। এসময় আবারো পুলিশ-বিজিবি ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় ক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা গোলাপগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পুরাতন টিনের ঘর ও নতুন ভবনের সামনে বঙ্গবন্ধু প্রতিকৃতি ভাংচুর করে।

এছাড়াও গোলাপগঞ্জ শাখা ট্রাস্ট ব্যাংকের কয়েকটি গ্লাস ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে ভাংচুর করা হয়। এক পর্যায়ে আন্দোলন কারীরা গোলাপগঞ্জ মডেল থানায়ও হামলার চেষ্টা করে। এসময় শিক্ষার্থীদের দিকে পুলিশ ও বিজিবি রাবার বুলেট সাউন্ড গ্রেনেড ও গুলি ছুড়লে অনেক শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়। সন্ধ্যা ৭টার দিকে গুরুতর আহত গৌছ উদ্দিন ও মিনহাজ আহমদকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

বিজ্ঞাপন

জনপ্রিয় সংবাদ