বিজ্ঞাপন
ডেস্ক রিপোর্ট : সিলেটের বিয়ানীবাজারে আলোচিত ৪শ বস্তা চিনি ছিনতাইয়ের ঘটনায় সদ্য বিলুপ্ত উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক তাহমিদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার (১৬ জুন) ভোরে পৌর শহরতলীর নিদনপুর এলাকায় তার নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিয়ানীবাজার থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবদুলাল ধর গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জাহিদুল হক তাহমিদ নিদনপুর গ্রামের নুরুল হকের ছেলে। তাহমিদ চিনি ছিনতাইকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলার এজহারভুক্ত আসামী না হলেও তার একটি অডিও কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। কল রেকর্ডে কীভাবে ছিনতাই করা চিনি বণ্টন করা হয়েছে তা প্রকাশ পেয়েছে।
এর আগে এই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে, ট্রাকভর্তি চিনি ছিনতাইয়ের ঘটনায় এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার ও ৮০ বস্তা চিনি উদ্ধার করা হলেও অবশিষ্ট ৩২০ বস্তা চিনি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে পুলিশ বলছে, চিনি উদ্ধারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
বিয়ানীবাজার থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবদুলাল ধর বলেন, চিনি ছিনতাইয়ের ঘটনায় সন্দেহের ভিত্তিতে জাহিদুল হক তাহমিদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার সকালে তাকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে রিমাণ্ডের আবেদন করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, ট্রাকভর্তি চিনি ছিনতাইয়ের ঘটনার সাথে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তার ও অবশিষ্ট ৩২০ বস্তা চিনি উদ্ধারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
এর আগে চিনি ছিনতাইয়ের পর গত সোমবার ৮০ বস্তা চিনি ও একটি পিকআপ ভ্যান উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন মঙ্গলবার এজাহারভুক্ত দুই আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার হোসাইনপুর গ্রামের মো. খলিল মিয়ার ছেলে মো. লিটন মিয়া (২৬) ও বড়লেখা উপজেলার শাহবাজপুর বোবারগুল এলাকার মোস্তফা উদ্দিনের ছেলে হাসান (২১)। তাদের মধ্যে লিটন মিয়া বর্তমানে বিয়ানীবাজার পৌরসভা এলাকার দাসগ্রামের লিচু টিলাস্থ ছাত্তার মিয়ার বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছেন।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার (৮জুন) ভোর ৬টার দিকে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের বিয়ানীবাজার অংশের চারখাই লালপুর এলাকায় সরকারি নিলাম থেকে কেনা বদরুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ীর ২৪ লাখ টাকার ৪শ বস্তা চিনি ও চিনি বহনকারী একটি ট্রাক অস্ত্রের মুখে ছিনিয়ে নিয়ে যায় একদল দুর্বৃত্ত। এরপর ছিনতাইকাণ্ডে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নাম জড়িয়ে পড়ে। এরপর গত বুধবার (১২ জুন) বিয়ানীবাজার উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাগর ও সাধারণ সম্পাদক তাহমিদের একটি কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনার পর বিয়ানীবাজার উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
চিনি ছিনতাইকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামীরা হলেন- ছোটদেশ ছুটিয়াংয়ের ইসলাম উদ্দিনের ছেলে তারেক আহমদ (২৩), খাসাড়িপাড়ার নুরুল ইসলামের ছেলে রাসেল আহমদ (২৪), শ্রীধরার মুজিবুর রহমানের ছেলে বক্কর (২৫), একই গ্রামের আনছার আলীর ছেলে আনু (২৩) ও আজির উদ্দিনের ছেলে ছাদিক আহমদ (৩০), কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন থানার হোসাইনপুর গ্রামের (বর্তমানে পৌরশহরের দাসগ্রাম লিচুটিলা ছাত্তার মিয়ার বাড়ীর ভাড়াটিয়া) মো: খলিল মিয়ার ছেলে মো: লিটন মিয়া, মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা শাহবাজপুর এলাকার বোবারতল গ্রামের (বর্তমানে সুপাতলা) মোস্তফা উদ্দিনের ছেলে হাসান (২১), নবাং গ্রামের শরফ উদ্দিনের ছেলে জিবান (২২), চট্রগামের বাসিন্দা বর্তমানে সুপাতলার নছরুল্লাহর ছেলে ও বিয়ানীবাজার উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি শফিউল্লাহ সাগর (২৮), খাসাড়িপাড়া গ্রামের ফারুক আহমদের ছেলে ফাহাদ আহমদ (২৩) ও চারখাই জালালনগরের হেলাল মিয়ার ছেলে হাসান আহমদ (২৪)। এছাড়াও মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ৭-৮জনকে আসামী করা হয়েছে।