বিজ্ঞাপন
ডেস্ক রিপোর্ট : সাম্প্রতিক সময়ে সিলেট নগরে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়েছে। যাত্রী হয়ে অটোরিকশায় উঠলে পড়তে হচ্ছে ছিনতাইকারী, মলম পার্টি বা প্রতারক চক্রের খপ্পরে। এতে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার (২৮ মে) সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মঈন উদ্দিন সিপন তার অফিসিয়াল ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্ট করেন। পোস্টটিতে অটোরিকশাযাত্রীদের প্রতি ছিলো কয়েকটি পরামর্শ।
পরামর্শগুলো হচ্ছে -
১. সিএনজিতে (অটোরিকশায়) উঠার আগে নাম্বার প্লেইট দেখে উঠবেন।
২. অটোরিকশায় বসে চালক যদি ভাড়া বা ১০ টাকা থাকলে দেন- এমনটা দাবি করে তবে কখনও দেবেন না।
৩. যে জায়গার কথা বলে উঠছেন কিছু দূর যেয়ে চালক যদি বলে- আমি এদিকে যাবো না তবে আপনি নেমে যান। অথবা আপনার সাথে বসা যাত্রীও যদি সুপারিশ করে তখনই গাড়িতে বসেই আপনার পকেট ও মানিব্যাগ চেক করবেন।
৪.এছাড়া আপনার সাথে গাঁ ঘেষে বসা অন্য যাত্রী থুথু বাহিরে ফেলছে বা গাড়ির চালক পারফিউম ব্যবহার করছে- তখনই আপনি সর্তক হয়ে যাবেন।
সম্প্রতি সিলেট মহানগরে অটোরিকশাযোগে বেড়েছে অপরাধ। সাধারণ যাত্রীরা অটোরিকশায় উঠে ছিনতাই, প্রতারক ও মলম পার্টির কবলে পড়েন। সম্প্রতি এমন কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে সিলেটে। এসব অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে গেছেন কিছু অটোরিকশাচালক। এ অবস্থায় অভিযুক্ত অটোচালকদের চিহ্নিত করে তাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দিতে
সিলেট জেলা অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ নিয়েছেন উদ্যোগ। কয়েক দিন আগে এ সংগঠনের সভাপতি মো. জাকারিয়া আহমদ নির্দেশন দেন- প্রত্যেকটি স্ট্যান্ডের ম্যানেজার ও সদস্য-চালক সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন এবং সন্দেহভাজন কোনো চালককে দেখলেই আটক করবেন। এই নির্দেশের পর ২১ মে মেজরটিলা থেকে এমন সন্দেহজনক দুজনকে ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
এর দুদিন পর (২৩ মে) সিলেট মহানগরের বন্দরবাজারে সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক ও পথচারীদের হাতে নকল স্বর্ণ দিয়ে প্রতারণা চক্রের ৩ সদস্য আটক হয়। এসময় এক প্রতারক দৌড়ে পালিয়ে যায়। আটক ৩ জনের মধ্যে একজন অটোরিকাশাচালক। ওই দিন দুপুরে বন্দরবাজারস্থ মধুবন মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এসময় প্রতারকদের অটোরিকশাটি জব্দ করেন জনতা।
তবে বিভিন্ন জায়গায় অটোচালকসহ সন্দেহভাজনরা ধরা পড়লে তাদের ছাড়াতে শুরু হয় অনেকের তদবির। এমন ঘটনা ঘটেছে সেদিন। ২৩ মে বন্দরবাজারে আটকরা ছিলেন- চাঁদপুর সদর মতলব উত্তর থানার নজরুল ইসলাম, সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার লায়েক আহমদ ও সুনামগঞ্জের নুর হোসেন। আর পালিয়ে যাওয়া যুবকের নাম নবী নূর। তিনি দক্ষিণ সুরমায় থাকেন আটকরা জানিয়েছেন। এদের মধ্যে অটোচালক নজরুল ইসলামকে ছাড়াতে তাদেরই সংগঠনের অনেক নেতা তদবির শুরু করেন। এতে বিভ্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় সংগঠনটির শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে।
জানা যায়, ২৩ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বন্দরবাজারের মধুবন মার্কেটের সামনে একটি অটোরিকশা এসে যাত্রী তোলার জন্য হাক-ডাক শুরু করে। এসময় গাড়িতে ৩ জন যুবক বসা ছিলেন। কিন্তু গাড়িটি ওই স্ট্যান্ডের না থাকায় এখানের লাইনম্যান রুবেল আহমদ অটোরিকশাচালককে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলে এক যুবক দৌড়ে পালিয়ে যান। এসময় পথচারী ও সেখানে থাকা অন্য অটোচালকদের সহায়তায় ৩ জনকে আটক করেন লাইনম্যান।
আটকের পর ৩ জনকে জিন্দাবাজার (মুক্তিযোদ্ধা গলি) অটোরিকশা স্ট্যান্ড কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের মুখে তারা জানান- স্বর্ণসদৃশ্য পিতলের টুকরো দিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে প্রতারণা করে থাকেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা এ কাজে জড়িত। সহজ-সরল যাত্রীকে টার্গেট করা হয়। গাড়িতে উঠলে তাদের একজন যাত্রীর স্বর্ণসদৃশ্য পিতলের টুকরোটি আসল স্বর্ণ বলে প্রলোভন দেখিয়ে বিক্রি করেন। তাদের বেশি টার্গেট থাকে গ্রামের বৃদ্ধ অথবা নারী।