বিজ্ঞাপন
ডেস্ক রিপোর্ট : সিলেটে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভাঙচুর ও আগুনের ঘটনায় ছাত্রলীগের আড়াই থেকে ৩০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন মিয়া শনিবার মধ্যরাতে বাদী হয়ে এ মামলা করেন, তবে মামলায় আসামিদের নাম উল্লেখ করা হয়নি।
সালাউদ্দিন জানান, শুক্রবার রাতে সড়ক দুর্ঘটনায় চার ছাত্রলীগ কর্মী নিহতের জেরে ওই রাতেই ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। ওই সময় ভাঙচুর করা হয় একটি অ্যাম্বুলেন্স, হাসপাতালের আসবাবপত্র এবং জরুরি বিভাগের বিভিন্ন সরঞ্জাম।
এ ছাড়াও চিকিৎসককে মারধর ও হাসপাতালের গ্যারেজে থাকা একটি নতুন জিপ গাড়িও জ্বালিয়ে দেয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এর আগে শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের ৪ নম্বর বাংলাবাজার ব্রিজের পাশে প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে চার ছাত্রলীগ কর্মী নিহত হন। ঘটনার পর আহতদের প্রাথমিকভাবে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয় এবং পরে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে সেখানে তাদের মৃত বলে জানান চিকিৎসক।
মামলার বাদী সালাউদ্দিন বলেন, ‘হামলায় সরকারি সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তা ছাড়া আমরাও এখানে কাজ করতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
ওই রাতের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সালাউদ্দিন বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর প্রথমে দুজনের মরদেহ নিয়ে হাসপাতালে আসেন তারা। ওই সময় জরুরি বিভাগের চিকিৎসক (ইএমও) হিল্লোল সাহা দুইজনকেই মৃত বলে জানান। এর কিছুক্ষণ পর আরও দুজনকে নিয়ে আসেন কয়েকজন। তবে এ দুজনও আগে থেকেই মৃত ছিলেন। তাই আমাদের কিছুই করার ছিল না।’
তিনি বলেন, ‘নেতা-কর্মীদের সামনেই আমরা ইসিজি করেও দেখিয়েছিলাম যে তাদের হাসপাতালে আনার আগেই মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু তারা তা মানতে রাজি নন।’
এ বিষয়ে জৈন্তাপুর থানার ওসি তাজুল ইসলাম বলেন, ‘নিহতের স্বজনরা আবেগ থেকে এমনটি করেছেন। এ বিষয়ে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।’
তবে এ ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের জড়িত থাকার ব্যাপারটি অস্বীকার করেছেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি নাজমুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘স্থানীয় উত্তেজিত জনতারা হাসপাতালে ভাঙচুর চালায়। পরবর্তীতে উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয়ের মধ্যস্ততায় ঘটনাটি সমাধান হয়। এখানে কোনোভাবেই ছাত্রলীগ জড়িত নয়।’
এ ঘটনায় স্থানীয় সংসদ সদস্য ইমরান আহমদ নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, ‘শুনেছি তাদের চিকিৎসা নিয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা হাসপাতালে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। তদন্তপূর্বক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায় থাকলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
শুক্রবার রাত ১টার দিকে জৈন্তাপুর থানা এলাকায় ট্রাকের ধাক্কায় একটি প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পার্শ্ববর্তী খাদে পড়ে যায়। এ ঘটনায় চারজন নিহত হন।
নিহতরা হলেন জৈন্তাপুর উপজেলার পানিহারা হাটির আরছ মিয়ার ছেলে তমাল, একই উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের রনদ্বীপ পালের ছেলে নেহাল, কমলাবাড়ি এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে জুবায়ের, নিজপাট ইউনিয়নের হারুন উর রশিদের ছেলে আলী হোসেন সুমন।
তারা সবাই ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন বলে জানান সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ।