বিজ্ঞাপন
জি ভয়েস ডেস্ক: আগামী বছরের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নিজ এলাকায় চাপের মুখে রয়েছেন দুই মেয়াদে শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ। দলের ভেতর ও বাইরে উভয় দিক থেকেই চাপে রয়েছেন সিলেট-৬ আসনের এ সংসদ সদস্য। নাহিদের আসনে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছেন আওয়ামী লীগের আরও অন্তত আট নেতা।
এ ছাড়াও সাবেক এ শিক্ষামন্ত্রীর জন্য ‘নতুন দুশ্চিন্তা’ হয়ে এসেছেন বিএনপির সাবেক নেতা সমশের মবিন চৌধুরী। রোববার সিলেট-৬ আসনের জন্য দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান সমশের।সিলেটের বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-৬ আসনে টানা তিনবারের এমপি নুরুল ইসলাম নাহিদ। এর আগে ১৯৯৬ সালেও এ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন সিপিবি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা এ রাজনীতিক।
ব্যক্তিগত সততার জন্য এলাকায় সুখ্যাতি ছিল নাহিদের, তবে সরকার ও দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকলেও এলাকার কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন না করানোর অভিযোগ রয়েছে নাহিদের বিরুদ্ধে। এ কারণে স্থানীয় অনেকে ক্ষুব্ধ নাহিদের ওপর। এ ছাড়া বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগেও রয়েছে বিভক্তি।দলের এ বিভক্তির প্রভাব পড়েছে এবারের নির্বাচনকালীন মৌসুমে।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বিক্রি শুরুর পর দুই দিনে সিলেট-৬ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন কেনেন ৯ জন।
নুরুল ইসলাম নাহিদ ছাড়াও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সরওয়ার হোসেন, গোলাপগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুর কাদির শাফি চৌধুরী এলিম, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ব্যারিস্টার আবুল কালাম চৌধুরী, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য মোহাম্মদ জাকির হোসেন, লন্ডন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফছার খান সাদেক, বিয়ানীবাজার উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব, সিলেট মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মুশফিক আহমদ জায়গীরদার ও গোলাপগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জাকারিয়া আহমদ পাপলু মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।
দলের ভেতরেই যখন চাপের মুখে নুরুল ইসলাম নাহিদ, তখন ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে এসেছেন তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রদূত সমশের মবিন চৌধুরী। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনে থাকা বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে না এলে তৃণমূল বিএনপিকে কিছু আসনে আওয়ামী লীগ ছাড় দিতে পারে বলে রাজনীতিতে আলোচনা রয়েছে। এমনটি হলে অগ্রাধিকার পাবেন দলটির চেয়ারপারসন সমশের মবিন। আর তাতে কপাল পুড়তে পারে নাহিদের।
রাজধানীর তোপখানা রোডের মেহেরবা প্লাজায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে রোববার মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন সমশের মবিন চৌধুরী। ওই সময় তিনি বলেন, ‘আমরা জোটবদ্ধভাবে ৩০০ আসনে নির্বাচন করব। অনেক দল আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। শক্তিশালী জোট গঠন করে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করব। আর যদি নাও পারি, আমরা হব প্রধান বিরোধী দল।’
এ বিষয়ে সোমবার সমশের মবিন চৌধুরী বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদ হিসেবে আমি সবসময়ই মানুষের কল্যাণে, এলাকাবাসীর উন্নয়নে কাজ করার চেষ্টা করেছি। এখনও এলাকার মানুষের পাশে থাকতে চাই।‘ এলাকার মানুষের কল্যাণে কাজ করতে চাই। এলাকার মানুষের কল্যাণেই আমি প্রার্থী হয়েছি।’
নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘আমি সবসময় এলাকার মানুষের পাশে আছি। গত ২০ বছরে যা হয়েছে, অতীতে তা হয়নি। সব উন্নয়নের কথা বলে শেষ করা যাবে না।‘ এলাকায় ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ গেছে। ধারাবাহিক উন্নয়ন অব্যাহত আছে। আশা করছি এবারও এলাকার মানুষ আমাকে মূল্যায়ন করবেন।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি বড় দল। এখানে প্রতিযোগিতা আছে। অনেকেই মনোনয়ন চাইতে পারেন, তবে দল যাকে মনোনয়ন দেবে, তার ব্যাপারে সবাই ঐক্যবদ্ধ।’
সংবাদ সূত্রে : সিলেট টুডে টোয়েন্টিফোর