বিজ্ঞাপন
ডেস্ক রিপোর্ট : পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে কবরে যাওয়ার ৬ বছর পরও পুলিশের মামলা থেকে রক্ষা হয়নি জুড়ীর লোকমানের। এ নিয়ে পুলিশের মামলার এজাহার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তোলপাড় শুরু হয়েছে পুরো এলাকায়।
উপজেলার সদর জায়ফর নগর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের লোকমান আহমদ ২০১৭ সালে মারা যান। গত ৬ অক্টোবর জুড়ীতে জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে জুড়ী থানায় করা পুলিশি কাজে বাধা দেওয়া, বেআইনি কাজ ও হত্যার উদ্দেশ্য আঘাত করা মামলায় তাকে ১১ নং আসামী করা হয়েছে।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (০৫ অক্টোবর) তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে জুড়ীতে মিছিল করে জামায়াতে ইসলামী। মিছিল থেকে পুলিশের উপর হামলা, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও হত্যার উদ্দেশ্যে পুলিশের উপর আক্রমনের অভিযোগে জুড়ী থানার এসআই খসরুল আলম বাদল বাদী হয়ে ২৮ জনের নামোল্লেখসহ আরও ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন। মামলায় মৃত আসামী ছাড়াও দীর্ঘদিন থেকে প্রবাসে থাকেন এ রকম কয়েকজন কে আসামী করা হয়েছে। জামায়াত ছাড়াও সরকার বিরোধী কয়েকজন নেতাকর্মীকে এ মামলায় আসামী করায় মামলা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
মামলার এজাহারের ১১নং আসামি উপজেলার হাসনাবাদ গ্রামের হাজী রমুজ আলীর ছেলে লোকমান হোসেনের ভাতিজা কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমার চাচা ২০১৭ সালের ৪ আগস্ট মারা যান। অথচ খবর পেলাম পুলিশের করা নাশকতা মামলায় চাচাকে আসামী করা হয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।’ পুলিশ কি চাচাকে কবর থেকে তুলে এনে বিচার করাবে; বলে প্রশ্ন করেন তিনি।
এ মামলার ১৬ নং আসামী করা হয়েছে উপজেলা যুবদলের সদস্য হাবিবুর রহমানকে। তিনি বলেন, ‘আমি জামায়াতের সাথে মিছিলে যাওয়া দূরের কথা কোনদিন জামায়াতকে সমর্থন করি না। আমি একসময় যুবদলের রাজনীতি করতাম, কিন্তু জামায়াতের সাথে কিভাবে জড়ানো হয়েছে তা জানি না।’
মামলায় ২ নম্বর আসামী করা হয়েছে পশ্চিম ভবানীপুর গ্রামের ফরমুজ আলীকে। তিনি কোন রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নয় বলে জানা গেছে। তার বড় ভাইয়ের অভিযোগ, এলাকার কিছু মানুষের সাথে পূর্ব শত্রুতার জেরে তাকে পুলিশ ধরে নিয়ে এ মামলায় আসামি করে জেলে পাঠিয়েছে।
মামলায় ২৩ নং আসামি করা হয়েছে ফুলতলার বুরহান মিয়াকে। তিনি ২ বছর থেকে আরব আমিরাতে অবস্থান করছেন। একই ইউনিয়নের নাইম আহমেদকে ২৪ নং আসামী করা হয়েছে তিনি ও ২ বছর থেকে ফ্রান্সে বসবাস করছেন। একই মামলার ৬ নং আসামী হামিদপুর গ্রামের জায়েদ আহমদ ও ৫ বছর থেকে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। মামলার ৫ নং আসামী ইদ্রিস আলীর বয়স ৮০ এর উপরে বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
মামলার বাদী জুড়ী থানার এসআই খসরুল আলম বাদল এ বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, ‘ওসি স্যারের সাথে কথা বলুন।’
উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমরা বাজারে মিছিল করেছি। সেখানে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ দূরের কথা কোন পুলিশই ছিল না। অথচ মামলা করে মৃত, প্রবাসী, আশিঊর্ধ্ব ব্যক্তিদের আসামী করা হয়েছে। ২ নং আসামী যাকে করা হয়েছে তাকে চিনিও না, সেও জামায়াতের সাথে সম্পৃক্ত নয়।’
জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের বক্তব্য অনুযায়ী আসামি করা হয়েছে। মামলার এজাহারে যদি মৃত অথবা প্রবাসী থাকে তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
খবর : সিলেট ভয়েস