বিজ্ঞাপন
নিজস্ব প্রতিবেদক: গোলাপগঞ্জে ছুটি না নিয়েই স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য যুক্তরাজ্যে চলে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে ফাতেহা ইয়াসমিন নামের এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে ম্যানেজ করে অনেকটা গোপনেই যুক্তরাজ্যে চলে যান ওই শিক্ষক।
ফাতেহা ইয়াসমিন উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের ফুলবাড়ি ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি এ বিদ্যালয়টিতে ২০১৪ সালের ৭ জুন বিদ্যালয়ে যোগদান করেন।
জানা যায়, শিক্ষক ফাতেহা ইয়াসমিন গত ১৬ আগস্ট কাউকে না জানিয়ে গোপনে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য যুক্তরাজ্যে চলে যান। বিষয়টি সম্পর্কে সাংবাদিকরা অবগত হলে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাহেলা আক্তারকে ১৭ আগস্ট মুঠোফোনে স্থানীয় একজন সাংবাদিক কল দেন। তিনি ওই শিক্ষক কোথায় আছেন জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক রাহেলা আক্তার জানান, ফাতেহা ইয়াসমিন এক মাসের জন্য মেডিকেল ছুটিতে রয়েছেন।
এই শিক্ষকের ছুটি বা বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে বিদ্যালয়ের সভাপতি, উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার জহিরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ফাতেহা ইয়াসমিন আমার কাছে কোন ছুটির আবেদন করেননি বা যুক্তরাজ্যে স্থায়ী ভাবে বসবাসের বিষয়ে লিখিত বা মৌখিক ভাবে কোন কিছুই জানাননি।
এদিকে রোববার (২০ আগস্ট) আবারো বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাহেলা আক্তারের সাথে যোগাযোগ করা হয়। এবার তিনি মেডিকেল ছুটির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমার কাছে ফাতেহা ইয়াসমিন লোক মারফত এক মাসের মেডিকেল ছুটির জন্য দরখাস্ত দিয়েছেন। এক মাসের মেডিকেল ছুটি আপনি মঞ্জুর করতে পারেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমার এখতিয়ার নয়। আপনি শিক্ষা অফিস বরাবর দরখাস্ত প্রেরণ করেছেন কি না প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না দরখাস্ত এখনো আমার কাছে।
এসময় প্রধান শিক্ষক রাহেলা বেগমের কাছে জানতে চাওয়া হয়, গত ১৭ আগস্ট আপনি বললেন ফাতেহা ইয়াসমিন মেডিকেল ছুটিতে আছেন! কিন্তু এখন বলছেন দরখাস্ত এখনো আপনার কাছে রয়েছে, শিক্ষা অফিসার বরাবর প্রেরণ করেননি! এসময় তিনি এর কোন জবাব না দিয়েই ফোন কেটে দেন।
এ ব্যাপারে সহকারী শিক্ষক ফাতেহা ইয়াসমিনের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব না হওয়ায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
গোলাপগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার দেওয়ান নাজমুল আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এবিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে বিষয়টি সকলে জানাজানি হলে রোববার সহকারী শিক্ষক ফাতেহা ইয়াসমিনের ভাই গোলাপগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসে একটি অব্যাহতি পত্র দেন।
জানা যায়, সহকারী শিক্ষক ফাতেহা ইয়াসমিন প্রধান শিক্ষক রাহেলা আক্তারের নিকটাত্মীয়। এজন্য প্রধান শিক্ষক গোপনে তাকে বিদেশ যেতে সহযোগিতা করেন। পরবর্তী বিষয়টি জানাজানি হলে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় ওই শিক্ষকের ভাইকে দিয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিস বরাবর অব্যাহতি পত্র জমা দেওয়ান।