বিজ্ঞাপন
ডেস্ক রিপোর্ট : ঈদুল আজহার আগের দিন থেকে বৃষ্টি হচ্ছে সিলেটে। ঈদের দিন এবং পরদিন শুক্রবারও বৃষ্টি অব্যাহত ছিল। বৈরি আবহাওয়ার কারণে পর্যটনস্পটগুলোতে কমেছে পর্যটকদের আনাগোনা। তবে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের জৈন্তাহিল পাহাড়ের পাদদেশে সিলেটের ভোলাগঞ্জে ‘সাদা পাথর’ দেখতে ভিড় জমিয়েছেন ঈদের ছুটি উপভোগ করা মানুষজন।
ধলাই নদীর বুকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা পাথরের বিছানা আর ভারত থেকে নেমে আসা ঝর্ণার পানির তীব্র স্রোত দেখতে কয়েক হাজার পর্যটক ভিড় জমান সেখানে।
সীমান্তবর্তী কোম্পানিগঞ্জে অবস্থিত ভোলাগঞ্জ দেশের সর্ববৃহৎ পাথর কোয়ারির অঞ্চল। ভোলাগঞ্জ সীমান্তে প্রাকৃতিক দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের উঁচু উঁচু পাহাড়। সেই পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝর্ণাধারা একদিকে ধলাই নদীর পানির যোগানদাতা অন্যদিকে এই পানি প্রবাহই ভোলাগঞ্জের রূপের উৎস। সবুজ পাহাড়, মেঘের হাতছানি আর বর্ষার পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে খাসিয়া জৈন্তিয়া পাহাড় থেকে নেমে আসা সাদা পাথর ধলাই নদীর বুকে মিলে মিশে ভোলাগঞ্জের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ।
ধলাই নদীর উৎস মুখের পাথর পরিবেষ্টিত ভোলাগঞ্জ জিরো পয়েন্ট বা সাদা পাথর এলাকাটি দেখতে অনেকটা ব-দ্বীপের মতো। ধলাই নদী বাংলাদেশ অংশে প্রবেশ করে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে আবার মিলিত হয়েছে। ভারত থেকে বাংলাদেশে নেমে আসা ধলাই নদীর দুই পাড়ে সারি সারিভাবে বসে আছে অসংখ্য সাদা রঙের পাথর। উপরে নীল আকাশ আর তার ঠিক নিচেই সবুজ পাহাড়-পাশে জলকেলি আর সাদা পাথর।
প্রকৃতিকন্যা সিলেটের অন্যতম দর্শনীয় এই স্থানে শুক্রবার বিকেলে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। টানা কয়েকদিনের ছুটিতে ধলাই নদীর শীতল পানির স্পর্শ নিতে এসেছেন পর্যটকরা। এ ছাড়া সিলেটের চা-বাগানগুলোতেও পর্যটকদের ঘুরে বেড়ানো আর ছবি তুলতে দেখা গেছে।
ঢাকা থেকে ঘুরতে গেছেন রুবেল আহমদ। তিনি বলেন, এখানে আমি ছুটি পেলেই ছুটে আসি। কারণ এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য আর শীতলজলে গোসল করতে অনেক ভালো লাগে। সাদা পাথর দেখতে এসে আমি বার বার মুগ্ধ হই। এত সুন্দর প্রকৃতি, সবুজ পাহাড়ের বুক চিরে ভারত থেকে নেমে আসা ধলাই নদীর পানির শীতল স্পর্শ আমি বার বার নিতে আসি।
সিলেট শহর থেকে সাড়ে ৩৭ কিলোমিটার দূরত্বে এই সাদা পাথরের অঞ্চল। স্থানীয়দের কাছেও জনপ্রিয় এই অঞ্চল। ঈদুল আজহার এ ছুটিতে সিলেটেরও বিভিন্ন এলাকার অনেকেই পরিবার নিয়ে ছুটে গেছেন সেখানে।
সাদা পাথর দেখতে যাওয়া সিলেট নগরের নবাবরোড এলাকার তালেব আহমদ বলেন, আমরা ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে প্রায় সারাবছরই ব্যস্ত সময় পার করি। তাই ঈদের ছুটিতে পরিবার নিয়ে একটু ঘুরতে আসলাম। সাদা পাথরের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকায় ও এখানকার পরিবেশ সুন্দর হওয়ায় এখানে মাঝে-মধ্যে আসি। তবে বৃষ্টির কারণে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে।