বিজ্ঞাপন
ডেস্ক রিপোর্ট : সিলেট সিটি করপোরেশনের নগর ভবনের ছাদ থেকে বিদ্যুতের লোহার খুঁটি পড়ে এক সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় আরও এক পথচারী আহত হয়েছেন।
শনিবার (০৩ জুন) বেলা আড়াইটার দিকে নগরভবনের পাশ্ববর্তী সিটি সুপার মার্কেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত সেনা সদস্য লেন্স কর্পোরাল দেলোয়াল হোসেন।
নগরের সিটি মার্কেটে কেনাকাটা করার সময় তিনি এ ঘটনা ঘটে। তিনি সিলেট সেনানিবাসের ১৭ পদাতিক ডিভিশনের ৫০ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি কোরে কর্মরত ছিলেন।
তার বাড়ি মেহেরপুর জেলার গাংনী থানাধীন জুগিরগোফার রায়পুর গ্রাম। তিনি স্ত্রী ও ১ ছেলে রেখে গেছেন।
সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই নির্মাণ কাজের জন্য নগরভবনের নির্মাণকাজে করায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে জড়িত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ১৯ জনকে আটক করা হয়েছে। মরদেহ ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ের ১২ তলার ছাদ থেকে হঠাৎ একটি বিদ্যুতের লোহার খুঁটি সিটি মার্কেটের ভেতরে ওই সেনা সদস্যের মাথায় এসে পড়ে। এ সময় তিনি কেনাকাটার কাজে ঘটনাস্থলে ছিলেন। তাৎক্ষণিক রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
সিলেট সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বলেন, প্রায় ২ বছর ধরে জামাল এন্ড কোং নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নগরভবনের নির্মাণকাজ করে আসছে। কিন্তু সবদিকে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করলেও সিটি মার্কেটের দিকে ছিল না। আর ১২ তলা থেকে বিদ্যুতের লোহার খুঁটি সিটি মার্কেটের ছাদ হয়ে ওই সেনা সদস্যের ওপর পড়ে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার পরপরই গাফিলতির বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে, দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে উপস্থিত সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, নগর ভবনের ১১ ও ১২ তলার নির্মাণ কাজ চলাকালেই এ দুর্ঘটনা ঘটে। নগরভবনের বহুতল ভবন থেকে নির্মাণ সামগ্রী পড়ে সেনা সদস্য ল্যান্স কর্পোরাল মো. দেলওয়ার হোসেন নিহতের ঘটনায় ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। কমিটিকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেন সিসিক মেয়র।
গণমাধ্যমকে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, এ ধরনের ঘটনায় আমি মর্মাহত। আমি নিহত সেনা সদস্যের পরিবারের প্রতি গভীর শোক জানাচ্ছি। এ ঘটনায় ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তারা প্রতিবেদন জমা দেবেন। আমি সেনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলেছি। তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দায়িদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কমিটির আহ্বায়ক সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান। সদস্য হিসেবে আছেন গণপূর্ত বিভাগ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী রিপন কুমার রায়, সিসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলী আকবর, শিক্ষা ও প্রকৌশল অধিদপ্তর সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল হাকিম, সিসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান খান, সিসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) রুহুল আলম ও সিসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী রাজি উদ্দিন খান।
সূত্র : বাংলা নিউজ