বিজ্ঞাপন
ডেস্ক রিপোর্ট : সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নির্মাণাধীন ১৫তলাবিশিষ্ট ক্যানসার বিল্ডিংয়ে এক নির্মাণশ্রমিককে চুরির অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে হ ত্যার অভিযোগ ওঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ৫ জনেকে আটক করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
আটক ব্যক্তিরা হলেন- দিনাজপুরের রুবেল, কুড়িগ্রামের আমিনুল ইসলাম, আয়নাল, সাবান আলী ও বগুড়ার আব্দুর রাজ্জাক। তারা ওসমানী হাসপাতালের নির্মাণাধীন ভবনের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জামাল অ্যান্ড কোং-এ কর্মরত ও মালিকপক্ষের আত্মীয় বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শ্রমিক জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা শ্রমিকদের থাকার রুমে হাত-পা বেঁধে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী পেটায় দুই নির্মাণশ্রমিককে। একপর্যায়ে নয়ন নামের নির্মাণশ্রমিক অজ্ঞান হয়ে পড়লে কর্মকর্তারা তাকে ফেলে রেখে চলে যান। পরে অন্য সহকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শ্রমিকদের অভিযোগ, আজ সকাল সাড়ে ৬টার দিকে নির্মাণশ্রমিক নয়ন ও আইয়ুব আলীকে ১ লাখ ৩৭ হাজার টাকা ও চারটি মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে একটি কক্ষে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর তাঁদের হাত-পা বেঁধে লাঠিসোঁটা ও রড দিয়ে নির্মম নির্যাতন চালান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মরত ঠিকাদার, ব্যবস্থাপক ও শ্রমিকেরা। নির্যাতনের সময় নয়ন চিৎকার করে পানি খাওয়ার অনুরোধ জানালে তাকে প্রস্রাব খাওয়ানো হবে বলা হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা চলে এ নির্যাতন।
অভিযোগের বিষয়ে জানাতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা সাইট প্রকৌশলী মনসুর বলেন, ‘আমি বাইরে রয়েছি। ঘটনাটি শুনেছি।’ তার কাছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রধানের নম্বর চাইলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, ‘নিহত নয়নের বাড়ি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায়। এ ছাড়া আরও এক নির্মাণশ্রমিককে আহত অবস্থা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় পাঁচজনেকে আটক করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে চুরির কোনো কিছু উদ্ধার বা স্বীকারোক্তি পাওয়া যায়নি। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অপরাধী যে-ই হোক তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।’
গত ১৯ মার্চ নির্মাণাধীন এই ভবনের তৃতীয় তলা থেকে পড়ে জুরান মিয়া নামের এক শ্রমিক মারা যান। ৩ জুন ওই প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিতে লোহার পাইপ পড়ে মারা যান দেলোয়ার হোসেন নামের এক সেনাসদস্য। ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় প্রধান আসামি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জামাল অ্যান্ড কোম্পানির স্বত্বাধিকারী মো. জামাল উদ্দিন। তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে নিয়েছেন।