বিজ্ঞাপন
ডেস্ক রিপোর্ট : সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনের আমেজে টান পড়েছে। দলের সিদ্ধান্ত মেনে বর্তমান মেয়র ও বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ায় ভোট ঘিরে সাধারণ নাগরিকদের আগ্রহে ভাটা পড়েছে।
স্থানীয়রা মনে করছেন এই নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে না। মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সহজেই জিতে যাবেন। জাতীয় পার্টি ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীর পাশাপাশি স্বতন্ত্র আরও কয়েকজন মেয়র প্রার্থী থাকলেও তারা সরকার দলের প্রার্থীর সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারবেন না।
এছাড়া কাউন্সিলর পদে বিএনপির অনেকে শুরুতে নির্বাচনে আগ্রহী হলেও এখন তাদের মধ্যে থেকেও অনেকেই সরে দাঁড়াচ্ছেন। ফলে কাউন্সিলর পদের নির্বাচনও উত্তাপ হারানোর শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় সিসিক নির্বাচনের প্রায় ১ মাস আগেই এখানে ভোট উৎসব অনেকটা ফিকে হয়ে গেছে। আজ রবিবার সিলেটের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অনেকের সঙ্গে কথা বলে এমন মত পাওয়া গেছে।
শুরু থেকেই আরিফুল হক চৌধুরীর প্রার্থী হওয়া নিয়ে সংশয় ছিল। নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলতে তিনি ছুটে যান লন্ডনে। সেখান থেকে ফিরে প্রার্থিতার ব্যাপারে তিনি স্পষ্ট কোন বক্তব্য না দেওয়ায় অনেকেই ধারণা করেন তিনি স্বতন্ত্র হিসেবে প্রার্থী হবেন।
‘আরিফুল প্রার্থী হচ্ছেন’ এমনটা ধরে নিয়েই আওয়ামী লীগ কোমর বেঁধে মাঠে নামে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ দলের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামানকে সঙ্গে নিয়ে একের পর এক কর্মিসভা, মতবিনিময়, গণসংযোগ শুরু করেন। আওয়ামী লীগের এই জোর তৎপরতা এবং আরিফুল হক প্রার্থী হচ্ছেন এমন ধারণায় সিলেটে ভোটের মাঠ গরম হয়ে ওঠে। তবে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে গত শনিবার আরিফুল ঘোষণা দেন- তিনি এবার প্রার্থী হচ্ছেন না।
আরিফুল নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আনোয়ারুজ্জামান বলেন, উনি (আরিফুল হক) ১০ বছর ধরে এই সিটির মেয়র। এবারও তিনি প্রার্থী হবেন- এমনটিই সবাই আশা করেছিল। তিনি প্রার্থী হলে নির্বাচন আরও বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হতো।
এ প্রসঙ্গে নগরের মধ্য বয়সী ভোটার জয়নাল মিয়া রবিবার বলেন, এখন তো মনে হচ্ছে নির্বাচনের এক মাস আগেই নৌকা জিতে গেছে। আর ভোটের দরকার কী।
ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ৫ বছর পর যে ভোট উৎসব হওয়ার কথা ছিল, তা আর হচ্ছে না। নির্বাচন হবে একতরফা। তাই এই নির্বাচন নিয়ে কারও কোন আগ্রহ থাকবে না।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেট শাখার সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, টানা দুই মেয়াদে নির্বাচিত বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এবারও একজন শক্তিশালী প্রতিদ্বন্ধী ছিলেন। তিনি প্রার্থী না হওয়ায় নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা কমে গেছে। স্বাভাবিকভাবেই নির্বাচনে ভোটারের অংশগ্রহণও কম হবে। এ কারণে ভোট উৎসব বলতে যা বোঝানো হয়, সেটা দেখা যাবে না।
সিসিক নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ২৩ মে। রবিবার পর্যন্ত মেয়র পদে ১১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বলে জানিয়েছেন সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা সৈয়দ কামাল হোসেন।
মনোনয়নপত্র সংগ্রহকারীরা হলেন- আওয়ামী লীগের আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবুল, ইসলামী আন্দোলনের মাওলানা মাহমুদুল হাসান, জাকের পার্টির জহিরুল আলম, স্বতন্ত্র আবদুল হানিফ কুটু, আবদুল মান্নান খান, সামছুন নুর তালুকদার, ছালাহ উদ্দিন রিমন, মাওলানা জাহিদ উদ্দিন চৌধুরী, মো. শাহজাহান মিয়া ও মোশতাক আহমদ রউফ।
নিউজ : দেশ রূপান্তর