বিজ্ঞাপন
নিজস্ব প্রতিবেদক: গোলাপগঞ্জে ঢাকাদক্ষিণ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ফুটবল খেলায় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা নিয়ে সিলেট জেলা রেফারি এসোসিয়েশনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ঢাকাদক্ষিণ ক্রীড়া চক্র সংবাদ সম্মেলন করেছে।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায় সংগঠনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঢাকাদক্ষিণ ক্রীড়া চক্রের সভাপতি মোঃ মজির উদ্দিন চাকলাদার।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এ ক্রেীড়া সংগঠন বিগত ৫০ বছর যাবত বহু সংখ্যক ফুটবল, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন ইত্যাদি টুর্ণামেন্ট ও খেলোয়াড় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এলাকার সম্ভাবনাময় ক্রীড়া প্রতিভা অন্বেষনের উদ্যোগ অব্যাহত রেখেছে।
সংগঠনের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আমার বিগত পহেলা জানুয়ারী বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগীতা আয়োজনের পদক্ষেপ গ্রহন করেছি। এ উপলক্ষে আয়োজিত "স্বপ্ন সুপার মার্কেট মিশিগান” ইউএসএ ফুটবল টুর্ণামেন্ট ২০২৩ বিগত ১১ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত ফাইনাল ম্যাচের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়েছে। উক্ত ফাইনাল ম্যাচে ভুল বুঝাবুঝি থেকে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঢাকাদক্ষিণ ক্রীড়া চক্রকে নিয়ে বিভিন্ন অপপ্রচার ও ভিত্তিহীন মানহানিকর বক্তব্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। যা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।
ওইদিন, ফাইনাল ম্যাচ শেষ হওয়ার ৪০ সেকেন্ড আগে ঢাকাদক্ষিণ ক্রীড়াচক্র লাল দলের খেলোয়াড় শাহজাহান গোল করলে খেলায় ২-২ গোলে সমতা আসে। রেফারী আনোয়ার হোসেন সাজু গোলের বাঁশি বাজান। কিন্তু সহকারী রেফারী হাসানুজ্জামান মিলন উদ্দেশ্য প্রণিত ভাবে টুর্নামেন্টকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে হ্যান্ডবল হয়েছে বলে ফ্ল্যাগ তুলে ধরেন। এসময় রেফারী খেলা শুরুর সংকেত দিলে উভয় দল গোল মেনে নিয়ে খেলা শুরু করার প্রস্তুতি নেয়। সহকারী রেফারী মিলন তখন মাঠে ঢুকে পড়েন এবং রেফারীকে উক্ত গোল বাতিলে বাধ্য করেন। তুমুল উত্তেজনা পূর্ণ এ ফাইনাল ম্যাচে উপস্থিতি হাজার হাজার জনতা এ ঘটনায় ধৈর্য্যচ্যুত হয়ে মাঠে ঢুকে পড়ে।
উত্তেজীত জনতার হাত থেকে সহকারী রেফারী হাসানুজ্জামান মিলনকে রক্ষার জন্য উভয় দলের খেলোয়াড় এবং টুর্ণামেন্ট কমিটির সদস্যবৃন্দ সর্বাত্মক চেষ্টা করেন। এসময় সহকারী রেফারিকে বাঁচাতে ঢাকাদক্ষিণ ক্রীড়াচক্র দলের অধিনায়ক রিপন, সিরাজ আশংকাজন ভাবে আহত হন।
তিনি বক্তব্যে বলেন, সেই মূহুর্তে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমরা উত্তেজনা জনতার হাত থেকে রেফারীদের রক্ষা করে নিরাপদে ঢাকাদক্ষিণ বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অফিসে নিয়ে আসি। এসময় টুর্ণামেন্ট কমিটির কর্মকর্তাবৃন্দ, কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয় ও এলাকাবাসী মুরব্বীয়ানদের নিয়ে রেফারী মহোদয়ের কাছে বার বার দুঃখ প্রকাশ করি এবং আমাদের গৃহিত ব্যবস্থায় রেফারী গন সন্তোষ প্রকাশ করেন। অনাক এ ঘটনার জন্য কোনভাবে আয়োজক কমিটি বা কোন খেলোয়াড় দায়ী নন। রেফারীদের হঠকারী এবং বেআইনি সিদ্ধান্তই এমন পরিস্থিতির তৈরীরজন্য দায়ী ।
কিন্তু দুঃখ জনক ভাবে সিলেট রেফারী এসোসিয়েশন ঘটনার দুইদিন পর আয়োজক কর্তৃপক্ষকে কোন ভাবে অবগত না করে এবং কোন ব্যাখ্যা না শুনে একতরফা ভাবে
বেআইনি ভাবে কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছে, যা এলাকাবাসী তথা ঢাকাদক্ষিণ বাসী ক্রীড়াচক্রের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও মানহানিকর। ঢাকাদক্ষিণ ক্রীড়াচক্র কোন নতুন সংগঠন নয় ৫০ বছর থেকে আমারা ঢাকাদক্ষিণ মাঠে সুনামের সাথে বহু খেলাধুলার আয়োজন করে আসছে।
ঢাকাদক্ষিণ ক্রীড়াচক্র তথা ঢাকাদক্ষিণের ক্রীড়াঙ্গনের ধ্বংস করার জন্য এটা কোন কুচক্রি মহলের ষড়যন্ত্র কী না, তা ভেবে দেখার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে। রেফারী এসোসিয়েশন ঢাকাদক্ষিণ মাঠে কোন খেলা পরিচালনার না করার যে হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার কোন কারন ব্যাখ্যা করেননি তারা। খেলার মাঠে বিতর্কিত সিদ্ধান্তের জন্য গোলযোগ সৃষ্টি হওয়ার কোন নতুন বিষয় নয়। সিলেটের বিভিন্ন মাঠে এমনকি সিলেট স্টিডিয়ামে পর্যন্ত ইতিপূর্বে বহুবার এ ধরনের ঘটানা ঘটেছে। কিন্তু রেফারীগন উক্ত মাঠে খেলা পরিচালনা করবেন না এরকম কোন সিদ্ধান্ত ইতোপূর্বে গ্রহন করেননি। কিন্তু ঢাকাদক্ষিণ মাঠের বেলা এরকম কঠোর সিদ্ধান্ত কেন নেওয়া হলো নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, ঢাকাদক্ষিণ ক্রীড়াচক্রের তিনজন উদীয়মান তরুণ খেলোয়াড়ের ওপর বিনা অপরাধে কোন রুপ নিরপেক্ষ তদন্ত ছাড়া যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তা তাদের ক্যারিয়ার ধ্বংসের একটি গভীর ষড়যন্ত্র বলে আমার মনে করি। তারা কোন বিশেষ মহলের ইন্ধনে রেফারীগণ এ রকম একটি উত্তেজনা ফাইনাল ম্যাচ শেষ হওয়ার পূর্ব মুহুর্তে এরকম বিতর্কিত হটকারী ও অবৈধ সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছেন কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
বিতর্কিত রেফারী হাসানুজ্জামান মিলন এবং আনোয়ার হোসেন সাজু এর এ ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত ঢাকাদক্ষিণ ক্রীড়াচক্রের সূবর্ণজয়ন্তীর সকল আয়োজন ম্লান হয়ে গেছে। হাজার হাজার দর্শক এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা সদস্যদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে হতাশা ও ক্ষোভ । ঢাকাদক্ষিণ ক্রীড়াচক্র এবং ঢাকাদক্ষিণের ক্রীড়াঙ্গনের জন্য এটা এক অপূরণীয় ক্ষতি। আমার রেফারী এসোসিয়েশন সিলেটের এরুপ বিতর্কিত সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অনতিবিলম্বে এরুপ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহব্বান জানচ্ছি। অন্যতায় ঢাকাদক্ষিণ ক্রীড়াচক্র ঢাকাদক্ষিণ তথা সিলেটের সচেতন মহলকে সাথে নিয়ে এ ষড়যন্ত্রের বিরোদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বাধ্য হবো।
তিনি ঢাকাদক্ষিণ ক্রীড়াচক্রের সূবর্ণজয়ন্তীর আয়োজনকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করারও হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকাদক্ষিণ ক্রীড়া চক্রের সহ সভাপতি সাদিকুর রহমান, কনক কান্তি শর্মা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাবুল আহমদ, নির্মল কান্তি দে, কাজল কান্তি দাস, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক রেজওয়ান হোসেন রাজু, দপ্তর সম্পাদক জামাল উদ্দিন, অর্থ সম্পাদক গৌছ উদ্দিন, সদস্য বুরহান উদ্দিন, সেলিম আহমদ, আজীবন সদস্য হেলাল আহমদ, সৈয়দ এম হোসেন লায়েক প্রমুখ।