বিজ্ঞাপন
ডেস্ক রিপোর্ট : সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় গত ২ মাসে ১৭টি বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। চুরি হওয়া ১৭টির মধ্যে ৮টি ট্রান্সফরমার পাথর ভাঙার স্টোন ক্রাশার মিলে লাগানো ছিল, বাকি ৯টি ট্রান্সফরমার আবাসিক গ্রাহকদের। এতে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে বিদ্যুতের গ্রাহকদের।
পল্লী বিদ্যুৎ ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় গত প্রায় ২ মাসে ১৭টি বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। ট্রান্সফরমারগুলোর বেশির ভাগ চুরি হচ্ছে রনিখাই ও পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের গ্রাম এলাকা থেকে। গত ২ নভেম্বর থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ২ মাসে ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে মোট ১৭টি। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার তৈমুরনগর গ্রামে আবাসিক গ্রাহকদের একটি ট্রান্সফরমার চুরি হয়। এ ছাড়া নভেম্বর মাসের ২ তারিখ চুরি হয়েছিল উত্তর রাধানগর ও দয়াবাজার গ্রামের আবাসিক গ্রাহকদের একটি ট্রান্সফরমার, ১৬ নভেম্বর নয়াগাঙ্গের পাড় এলাকার আবাসিক গ্রাহকদের একটি, ২১ নভেম্বর কালীবাড়ি গ্রামের আবাসিক গ্রাহকদের একটি, ৬ ডিসেম্বর রাধানগর গ্রামের আবাসিক গ্রাহকদের একটি, ৯ ডিসেম্বর কালাইরাগ গ্রামের আবাসিক গ্রাহকদের একটি, ১০ ডিসেম্বর রাধানগর গ্রামের আরও একটি আবাসিক গ্রাহকদের, ১৭ ডিসেম্বর নয়াগাঙ্গের পাড় গ্রামের আবাসিক গ্রাহকদের একটি এবং ২৭ ডিসেম্বর রাতে তৈমুরনগর গ্রাম থেকে আবাসিক গ্রাহকদের একটি ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ঘটেছে।
গত ২২ ডিসেম্বর রাতে নতুন ডাকঘর ও পাড়ুয়া গ্রামের দুটি ক্রাশার মিল থেকে পাঁচটি ট্রান্সফরমার এবং ২৩ ডিসেম্বর রাতে কলাবাড়ি এলাকার স্টোন ক্রাশার মিল থেকে তিনটি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। ২৪ ডিসেম্বর রাতে কলাবাড়ি গ্রাম থেকে আবাসিক গ্রাহকদের একটি ট্রান্সফরমার চুরি হয়। এর আগে ২২ ডিসেম্বর রাতে পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ কলাবাড়ি গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছয়টি ও মুহিবুর রহমানের পাঁচটি গরু চুরি হয়।
সূত্র জানায়, ট্রান্সফরমার চুরি হওয়ার পর নতুন ট্রান্সফরমার পেতে গ্রাহককে অর্ধেক টাকা এবং পল্লী বিদ্যুৎকে অর্ধেক টাকা পরিশোধ করতে হয়। এতে গ্রাহক এবং পল্লী বিদ্যুৎ দুই পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ট্রান্সফরমার চুরির সঙ্গে পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের অসাধু চক্র জড়িত থাকতে পারে। ট্রান্সফরমার চুরি হওয়ার পর নতুন সংযোগ পেতে বেগ পেতে হয়। সাধারণ গ্রাহক হলে পুরো এলাকার বাসিন্দারা চাঁদা তুলে ট্রান্সফরমারের জন্য টাকা উঠিয়ে থাকেন। সে টাকা পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তরের পর নতুন ট্রান্সফরমার পাওয়া যায়। এ সময় অন্ধকারেই কাটাতে হয় বাসিন্দাদের। ট্রান্সফরমার চুরির পাশাপাশি গবাদিপশু চুরির ঘটনাও সম্প্রতি কোম্পানীগঞ্জে বৃদ্ধি পেয়েছে।
পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ বলছে, এসব ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় একটি চক্র যুক্ত রয়েছে। এ ঘটনায় পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষসহ স্থানীয়ভাবে দুটি মামলা করা হয়েছে। এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের দেওয়া তথ্যে অভিযুক্ত দুজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযুক্ত দুজনই গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা।
পল্লী বিদ্যুতের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উপমহাব্যবস্থাপক মৃণাল কান্তি চৌধুরী বলেন, চোর চক্র ট্রান্সফরমারের ভেতরে থাকা তামার কয়েল নিয়ে বাকি অংশ ফেলে যায়। কয়েলের দাম বেশি হওয়ায় চোর চক্র সেটি নিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত চুরির ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।