বিজ্ঞাপন
সিলেটে পর্যটকদের উপস্থিতি বাড়ায় মাইক্রোবাসের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। আজ দুপুরে নগরের চৌহাট্টা প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসস্ট্যান্ডে। |
ডেস্ক রিপোর্ট : শীতকালীন অবকাশ যাপন করতে অনেক পর্যটক এখন ভিড় করছেন সিলেটে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছাড়াও প্রায় প্রতিদিনই সিলেটে পর্যটকদের ঢল চোখে পড়ছে। এই সুযোগে পর্যটকবাহী যানবাহনের ভাড়া বেশি আদায়ের অভিযোগ করছেন পর্যটকেরা। বিশেষ করে মাইক্রোবাসে সাধারণ সময়ের তুলনায় দ্বিগুণ কিংবা এর বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
ভাড়ায় চালিত মাইক্রোবাসের চালক ও মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একদিকে জ্বালানির দাম অনেক বেড়ে গেছে। আবার ফিলিং স্টেশনে গ্যাসের জন্য দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এসব বিবেচনায় ভাড়া বাড়ানোর বিষয়টি নায্য বলে মনে করছেন তাঁরা। এ ছাড়া পর্যটকদের উপস্থিতি বাড়ায় মাইক্রোবাসের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার অগ্রিম বুকিং না দিলে মাইক্রোবাস ভাড়া করা কঠিন হয়ে পড়ে। আবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বিয়ের অনুষ্ঠানগুলোতেও মাইক্রোবাসের চাহিদা থাকে। এতে স্ট্যান্ডগুলোতে মাইক্রোবাসের কিছুটা সংকট তৈরি হয়। এই সুযোগে চালকেরা ভাড়া বাড়িয়ে দিচ্ছেন।
সিলেটের ৪টি স্ট্যান্ডে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব স্ট্যান্ডে সব মিলিয়ে ১ হাজার ৩০০টি প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস আছে। গত মাসেও মাইক্রোবাসগুলো যেই দূরত্বে চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা ভাড়া নিত, এখন একই দূরত্বে যাতায়াতে সাত থেকে আট হাজার টাকা ভাড়া দাবি করছে। তবে প্রাইভেট কারগুলোর ভাড়া দ্বিগুণ না বাড়লেও আগের তুলনায় বেড়েছে।
আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে নগরের চৌহাট্টা স্ট্যান্ডে কথা হয় শাকিল আহমদের সঙ্গে। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদা পাথর বেড়ানোর জন্য তিনি মাইক্রোবাস ভাড়া নিতে এসেছেন। স্ট্যান্ডে তিনটি মাইক্রোবাস থাকলেও সেগুলো বেশি ভাড়া চাচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন। শাকিল বলেন, সাদা পাথরে যাতায়াতের জন্য মাইক্রোবাসগুলো ছয় হাজার টাকা চাইছে। অথচ স্বাভাবিক সময় এই পথের ভাড়া ছিল তিন হাজার টাকা।
নগরের মেন্দিবাগ এলাকার স্ট্যান্ডে মাইক্রোবাস ভাড়া নিতে এসেছেন শাওন আহমেদ। তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে জাফলং বেড়াতে যাবেন। সাধারণ সময়ে সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার টাকায় মাইক্রোবাসে জাফলং যাওয়া–আসা করা যায়। তবে আজ সকালে সাড়ে ছয় হাজার টাকার কমে তিনি কোনো মাইক্রোবাস ভাড়া পাচ্ছেন না।
মেন্দিবাগের স্ট্যান্ডের চালক জুয়েল আহমদ বলেন, বর্তমানে মাইক্রোবাসগুলোর চাহিদা বেশি। এর মধ্যে চালকসহ ৮ আসন ও ১১ আসনের মাইক্রোবাসগুলো বেশি ভাড়া হচ্ছে। তবে চাহিদা বেশি থাকায় ভাড়াও কিছুটা বেড়ে গেছে।
সিলেট শহরতলির তেমুখী স্ট্যান্ডের চালক মানিক আহমদ বলেন, মাইক্রোবাসভাড়া কিছুটা বেড়েছে ঠিক। বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় মাইক্রোবাসের চাহিদা বর্তমানে বেশি। তবে অন্য সময়গুলোতে চালকদের স্ট্যান্ডে বসেই সময় কাটাতে হয়। এটা পর্যটন মৌসুম হওয়ায় ভাড়া কিছুটা বেশি চাওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ সিলেটের হিসাব অনুযায়ী, জেলায় নিবন্ধিত মাইক্রোবাস রয়েছে এক হাজার ৭৭টি। এর বাইরে ঢাকার নিবন্ধিত কতগুলো মাইক্রোবাস সিলেটে চলছে, সেটির হিসাব কারও কাছে নেই।
ভাড়া বেশি আদায়ের বিষয়ে সিলেট জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (গণমাধ্যম) আহসানুল আলম বলেন, প্রতিবছর এই মৌসুমে সিলেটে পর্যটকেরা বেশি আসেন। তবে মাইক্রোবাসের ভাড়া বেশি নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সূত্র : প্রথম আলো