বিজ্ঞাপন
ডেস্ক রিপোর্ট : উচ্চমাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষাকে সামনে রেখে সিলেট নগরে ২৯টি পরীক্ষাকেন্দ্র ও তার ২০০ গজ আশপাশের এলাকাকে অস্থায়ীভাবে ‘সংরক্ষিত এলাকা’ ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে মহানগর পুলিশ। বিজ্ঞপ্তিতে ৬ নভেম্বর থেকে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত এসব স্থানে সব ধরনের মিছিল–সমাবেশ সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ নিষেধাজ্ঞা জারির পর ২০ নভেম্বর সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে বিএনপি গণসমাবেশ করতে পারবে কি না, এ নিয়ে দলটির নেতা-কর্মীদের মধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
নগরের যে ২৯টি পরীক্ষাকেন্দ্র ও আশপাশের এলাকা ‘অস্থায়ী সংরক্ষিত এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, এর মধ্যে নগরের চৌহাট্টা এলাকার সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রও রয়েছে। এ মাদ্রাসা মাঠে ২০ নভেম্বর বিএনপির সিলেট বিভাগীয় সমাবেশ হওয়ার কথা রয়েছে। কেন্দ্রের ২০০ গজের ভেতরেই এ মাঠের অবস্থান। সমাবেশের দিন বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত ওই কেন্দ্রে আলিমের হাদিস ও উসূলুল হাদিস বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার বিষয়টি আমরা জেনেছি। এটি নিয়ে নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আমরা আলাপ-আলোচনা করব। এরপর প্রতিক্রিয়া জানাব। তবে ২০ নভেম্বর আমাদের সিলেট বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে, এটা এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত।’ একই কথা জানান জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরীও।
যেসব কেন্দ্রে উচ্চমাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা হবে, এগুলো সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা দিয়ে নিয়ম অনুযায়ী বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। এখন বিএনপির গণসমাবেশ যেখানে হবে, সেটা যদি ২০০ গজের ভেতরে পড়ে, তাহলে বিষয়টা উনারা (বিএনপি নেতৃবৃন্দ) বুঝবেন।
- মো. নিশারুল আরিফ, কমিশনার, সিলেট মহানগর পুলিশ।
তবে সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. নিশারুল আরিফ প্রথম আলোকে বলেন, ‘যেসব কেন্দ্রে উচ্চমাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা হবে, এগুলো সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা দিয়ে নিয়ম অনুযায়ী বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। এখন বিএনপির গণসমাবেশ যেখানে হবে, সেটা যদি ২০০ গজের ভেতরে পড়ে, তাহলে বিষয়টা উনারা (বিএনপি নেতৃবৃন্দ) বুঝবেন।’
পুলিশ জানায়, সিলেট মহানগরী পুলিশ আইন ২০০৯ সালের ধারা ২৯, ৩০, ৩১, ৩২-এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে পরীক্ষাকেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে জনসমাবেশ, মিছিল, ঢাকঢোল বাজানো, লাউড স্পিকার ব্যবহার, অস্ত্রশস্ত্র, বিস্ফোরকদ্রব্য, ইট-পাথর ইত্যাদি বহন ও ব্যবহারসহ শান্তিশৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ যেকোনো কাজ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ৬ নভেম্বর থেকে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরীক্ষার দিন সকাল সাতটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত এমন নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। এ আদেশ লঙ্ঘনকারীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার বিষয়টিও বিজ্ঞপ্তিতে বলা আছে।
বিজ্ঞপ্তিতে সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা পরীক্ষাকেন্দ্র ছাড়াও সিলেট মঈনুন্নেসা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, সিলেট মদনমোহন কলেজ, সিলেট ব্লুবার্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সিলেট সরকারি মহিলা কলেজ, শাহ খুররম ডিগ্রি কলেজ, মঈন উদ্দিন আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজ, সিলেট সোনাতলা সিরাজুল ইসলাম আলিম মাদ্রাসা, সিলেট আম্বরখানা গার্লস উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ, সিলেট পাঠানটুলা দ্বি–পাক্ষিক উচ্চবিদ্যালয়, সিলেট সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সিলেট টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সিলেট ক্যাডেট কলেজ, দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজ, রেবতী রমন উচ্চবিদ্যালয়, শাহপরাণ সরকারি কলেজ, দক্ষিণ সুরমার ইছরাব আলী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, দক্ষিণ সুরমার নুরজাহান মেমোরিয়াল মহিলা কলেজ, দক্ষিণ সুরমার কুচাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ সুরমার মোহাম্মদ মকন উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ, দক্ষিণ সুরমার জালালপুর ডিগ্রি কলেজ, সিলেট সরকারি কলেজ, হাজী মোহাম্মদ রাজা চৌধুরী উচ্চবিদ্যালয়, এমসি কলেজ, দক্ষিণ সুরমার কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, সিলেট জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, জালালিয়া সিনিয়র ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসা, সিলেট ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও জালালপুর উচ্চবিদ্যালয় এলাকাকে ‘সংরক্ষিত এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।