বিজ্ঞাপন
ডেস্ক রিপোর্ট : সিলেট নগরের কদমতলী এলাকার এক বাসিন্দা ১৮ নভেম্বর ‘গায়ে হলুদ’ করার জন্যে সিলেট শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারও ফাঁকা পান নি। একজন কমিউনিটি সেন্টারের ম্যানেজার বলেন নগরের ২২টি কমিউনিটি সেন্টারই বুকড হয়ে গেছে বিএনপির নেতাকর্মিরা রাতে থাকার জন্যে।
ওই বাসিন্দা বলেন, ‘ওই রাতের জন্যে নগরের কোনো সেন্টারই ফাঁকা পাওয়া যাচ্ছে না। সব বুকিং হয়ে গেছে।’
জানা যায়, সোমবার সিলেট নগরের আগ্রা, মালঞ্চ, নুরে আলা, সাজিদ আলীসহ অন্তত ৮টি কমিউনিটি সেন্টারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সবগুলোই ১৮ নভেম্বর রাতের জন্য ভাড়া হয়ে গেছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর পক্ষে এগুলো বুকিং নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
১৯ নভেম্বর সিলেটে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ। ওইদিন দুপুরে নগরের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে সমাবেশ শুরু হবে। ওই সমবেশ সফলে ৬টি কমিটি করেছে বিএনপি। মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী হলেন- আবাসন ব্যাস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক।
বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে সমাবেশের দিন সকালেই বিভাগের ৪ লাখ নেতা-কর্মী সিলেটে আসবেন। তবে অন্যান্য বিভাগে যেভাবে সমাবেশের দুদিন আগে থেকে পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে, সিলেটেও এমনটি হতে পারে ধরে নিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এ ক্ষেত্রে আগেই সিলেট চলে আসবেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। নগরের কমিউনিটি সেন্টারগুলোতে তারা থাকবেন। এ উদ্দেশেই কমিউনিটি সেন্টারগুলো বরাদ্দ নেয়া হয়েছে।
সিলেট জেলা বিএনপির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর পক্ষ থেকে নগরের অন্তত ২৫টি কমিউনিটি সেন্টার ১৮ নভেম্বর রাতের জন্য বুকিং নেয়া হয়েছে। সেখানেই কর্মীদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে।
এ ছাড়া নগরের খোলা মাঠগুলোতেও কর্মী-সমর্থকদের রাত্রি যাপনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
নেতা-কর্মীদের জন্য বিএনপির কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া নেয়ার বিষয়টি অবগত আছেন জানিয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরাও এমনটি শুনেছি। কয়েকটি সেন্টার ভাড়া নেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিতও হয়েছি। বাকিগুলোর বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি।’
কমিউনিটি সেন্টার ছাড়াও বিএনপির নেতা-কর্মীদের জন্য নগরের বিভিন্ন মসজিদে রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে নতুন তথ্যও দেন পুলিশের ওই কর্মকর্তা।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে সিলেটের সমাবেশে ৪ লাখ লোক সমাগম হবে বললেও বিএনপি নেতা এ নগরীতে দুই থেকে আড়াই লাখ লোক সমাগম ঘটানোর লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছেন বলে জানা গেছে।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘এ পর্যন্ত যতগুলো বিভাগে বিএনপি গণসমাবেশ করেছে সবগুলোতে আগে থেকে সরকার ধর্মঘট ডাকিয়েছে। সিলেটেও এমনটি হতে পারে বলে আমাদের শঙ্কা। তাই আগে থেকেই আমার বিভিন্ন বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছি।’
এদিকে, সিলেটে বিএনপির সমাবেশের আগে পরিবহন ধর্মঘট ডাকা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ বিষয়ে সোমবার ঢাকায় সিলেটের পরিবহন শ্রমিক সংগঠনগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য শাহজাহান খান।
বৈঠক শেষে সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. মইনুল ইসলাম বলেন, ‘সিলেটে ধর্মঘটের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা বিএনপির গণসমাবেশের সময়ও গাড়ি স্বাভাবিকভাবে চলাচল করার পক্ষে।’