বিজ্ঞাপন
ডেস্ক রিপোর্ট : কক্সবাজারের রামু উপজেলার ঈদগড় ইউনিয়নে ভাসুরের কিল-ঘুষি, লাথিতে ছোট ভাইয়ের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মৃত ৩ নবজাতক প্রসবের ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী রাবিয়া বাসরী (৩০) মৃত ৩ সন্তানের সঠিক বিচার চেয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন। ঘটনায় জড়িত ভাসুর আবু তাহের গা ঢাকা দিয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে ঈদগড় ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের রেনুর কুল এলাকায়।
নির্যাতনকারী ভাসুর আবু তাহের ওই এলাকার আব্বাস মোহাম্মদের ছেলে। নির্যাতনের শিকার নারী আবু তাহেরের ছোট ভাই প্রবাসী ছৈয়দ আলমের স্ত্রী এবং ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের নাজির হোসনের কন্যা৷
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভিকটিম রাবিয়া বাসরী জানান, গত ১৩ সেপ্টেম্বর শাশুড়ির সাথে তার তর্কাতর্কি হয়, কিছুক্ষণ পর ভাসুর আবু তাহের এসে তাকে উপর্যুপরি লাথি, ঘুষি-কিল মেরে আহত করে। ওই সময় তিনি ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রামু থানায় অভিযোগ দায়ের করলে গত ২৪ সেপ্টেম্বর ঈদগড় পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই জাফরুল্লাহ উভয় পক্ষকে ডেকে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার কামাল উদ্দিনসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সালিসের মাধ্যমে পারিবারিক ঘটনা হওয়ায় দুই পক্ষকে সামাজিক ভাবে বসবাসের কথা বলে সুরাহা করে দেন।
এরই মধ্যে রাবিয়া বাসরী প্রসব বেদনা ও ব্যথা অনুভব করলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্বজনদের সহযোগিতায় ঈদগাঁওস্থ বেসরকারি ক্লিনিক ঈদগাঁও ডায়াবেটিস কেয়ার সেন্টারে নিয়ে আসে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে মৃত তিন নবজাতক প্রসব করে।
ঈদগাঁও ডায়াবেটিস কেয়ার সেন্টারের পরিচালক ডা. ইউছুপ আলী জানান, ভিকটিমের প্রসব বেদনা উঠলে হাসপাতালে আসে, পরীক্ষা নিরীক্ষা করে মৃত ৩ নবজাতক নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে বের করা হয়। নবজাতকের শরীরে আঘাত জনিত চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। ভিকটিম রাবিয়া বাসরীর পরিবার আইনগত ব্যবস্থা নিলে থানা অথবা আদালত যদি রিপোর্ট চাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রিপোর্ট পাঠাবে।
এদিকে একই সাথে ৩ মৃত নবজাতকের প্রসব হওয়ার ঘটনায় পুরো হাসপাতালে অপরাপর রোগী ও স্বজনদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। আত্মীয়স্বজনরা ঘাতক ভাসুর আবু তাহেরের শাস্তি দাবি করেন। মারধরের মাধ্যমে ৩ সন্তান হত্যার বিচার দাবি করেন নির্যাতনের শিকার নারী রাবিয়া বাসরী। বিদেশে অবস্থানরত স্বামীর পরামর্শক্রমে মামলা দায়ের করবেন বলে জানান রাবিয়া বাসরী।
অভিযুক্ত আবু তাহেরের সাথে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রামু থানার ওসি আনোয়ারুল ইসলাম জানান, এ ধরনের খবর তিনি এখনো পাননি। তবে ভিকটিমের পরিবার আইনগতভাবে সহযোগিতা চাইলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।