বিজ্ঞাপন
স্টাফ রিপোর্ট : ১৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে কুশিয়ারা নদীর উপর নির্মিত সুনামগঞ্জবাসীর স্বপ্নের রাণীগঞ্জ সেতু আগামী ২৯ অক্টোবর যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুটি উদ্বোধন করবেন। সিলেট বিভাগের সর্ববৃহৎ এ সেতু দিয়ে যানচলাচল করলে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সুনামগঞ্জের দূরত্ব প্রায় ২ ঘণ্টা কমে আসবে বলে সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন। হাওরবাসীর দুঃখ ও দুর্দশার কথা চিন্তা করে বর্তমান পরিকল্পনামন্ত্রী ও সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য এমএ মান্নান এ সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেন।
তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় হাওরবাসীর স্বপ্নের সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতু উদ্বোধনকে ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে উৎসবের আমেজ বইছে। এজন্য পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান এমপিকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন স্থানীয়রা।
দীর্ঘ আড়াই কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুটি যেমন সিলেট বিভাগের সর্ববৃহৎ সেতু, তেমনি দৃষ্টিনন্দনও। সেতুর কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর থেকেই প্রতিদিন ভিড় জমান হাজার হাজার দর্শনার্থী। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ সেতুটি দেখতে আসা দর্শনার্থীদের সমাগমে মুখরিত থাকে কুশিয়ারা নদীর দুই পাড়। সেতুর কাজ শেষ হওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে বইছে আনন্দের জোয়ার।
আগামী ২৯ অক্টোবর সেতুটির উদ্বোধনের খবর শুনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্থানীয় সংসদ সদস্য পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানকে ধন্যবাদ জানিয়েছে স্থানীয় জনসাধারণসহ সুনামগঞ্জ জেলাবাসী।
সেতুটি দেখতে আসা জগন্নাথপুর বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন বেলাল জানান- গণমাধ্যমে তিনি প্রতিদিনই রাণীগঞ্জ সেতুর খবর পান। কিন্তু আজ বাস্তবে দেখার জন্য ছুটে এসেছেন পরিবার নিয়ে। সেতুতে উঠতে পারলে খুব ভালো লাগতো। কিন্তু নিরাপত্তার কারণে কাউকে সেতুতে উঠতে দেওয়া হচ্ছে না।
জগন্নাথপুর উপজেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি হাজী শাহ্ নিজামুল করিম বলেন- আমাদের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন ছিল এই রাণীগঞ্জ সেতু। শুনেছি আগামী ২৯ অক্টোবর সেতুটি উদ্বোধন হবে। আমাদের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও পরিকল্পনামন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
স্বপ্নের রানীগঞ্জ সেতু বাস্তবায়ন হওয়ায় পরিকল্পনামন্ত্রী আলহাজ্ব এম এ মান্নান এমপিকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাজী মাহতাব উল হাসান সমুজ।
তিনি বলেন- রাণীগঞ্জ সেতু শুধু জগন্নাথপুরের নয় গোটা সুনামগঞ্জবাসীর স্বপ্নের একটি সেতু। এ সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকার সাথে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সহজ হবে। সময় বাঁচবে প্রায় দুই ঘণ্টা। পরিকল্পনামন্ত্রীর প্রচেষ্টায় সুনামগঞ্জে আজ বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। তিনি না থাকলে হয়তো আরও ১০০ বছরেও এমন মেগা মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়ন সম্ভব হতো না। আমি প্রধানমন্ত্রী ও পরিকল্পনামন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সুনামগঞ্জ জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন- আগামী ২৯ অক্টোবর রাণীগঞ্জ সেতু সহ জেলায় এক সাথে কয়েকটি সেতুর উদ্বোধন হবে। স্বল্প আকারে রাণীগঞ্জ সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। সেতু উদ্বোধন করবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। আমরা চেষ্টা করবো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজন করার।
উল্লেখ্য-২০১৭ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং তৎকালীন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী, বর্তমান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি। অ্যাপ্রোচ সড়কসহ সেতুটির দৈর্ঘ্য আড়াই কিলোমিটার হলেও মুল সেতুর দৈর্ঘ্য ৭০২.৩২ মিটার ও প্রস্ত ১০.২৫ মিটার। মুল সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৯১ কোটি টাকা। বাকি ব্যয় ধরা হয়েছে অ্যাপ্রোচ সড়ক, টোলপ্লাজা, কালভার্ট ও স্থানীয় ইটাখলা নদীর উপর আরেকটি ছোট সেতু নির্মাণে। সেতুটির নির্মাণ কাজ পায় মেসার্স এমএম বিল্ডার্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড নামের এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।