বিজ্ঞাপন
ডেস্ক রিপোর্ট : সাইমন (১০), হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান। বাবা নুরুজ্জামান রিকশাচালক। সারা দিনে যা আয় হয় তা দিয়ে কোনো রকমে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। বাবার অভাবের সংসার। তাই গ্রামের বিভিন্ন জায়গা থেকে শাকসবজি সংগ্রহ করে মাকে দিত শিশু সাইমন। সেই শাক তরকারি হিসেবে রান্না করা হতো। কিন্তু শাক তুলতে গিয়ে খালে ডুবে প্রাণ হারাল সাইমন। বুধবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে নাঙ্গলিয়া খালে এ ঘটনা ঘটে। সাইমন উপজেলার নারায়াণপুর গ্রামের নুরুজ্জামানের ছেলে ও স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, দুপুরে সাইমন তার সহপাঠী রিফাত, নাজিম ও তৌসিরকে নিয়ে কলমি শাক তুলতে নাঙ্গলিয়া খালের পারে যায়। একপর্যায়ে পা পিছলে সে খালের পানিতে ডুবে যায়। সহপাঠীরা তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করলেও গভীরতা থাকায় ব্যর্থ হয়। খবর পেয়ে স্বজন ও স্থানীয়রা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পায়নি। পরে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট গিয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় সাইমনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মনির হোসেন বলেন, পরিবারটি হতদরিদ্র। পাঁচ সদস্যের সংসার নুরুজ্জামানের। আয়-রোজগার কম হতো। সাইমন গ্রামের বিভিন্ন জায়গা থেকে সবজি তুলে এনে মাকে দিত। সেই শাকসবজি রান্না করে জীবিকা নির্বাহ করত পরিবারটি। আজ শাক তুলতে গিয়ে শিশুটি মারা যাওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক।
উদ্ধার অভিযানে থাকা ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার দিদার হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সহায়তায় শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। খালের গভীরতা বেশি হওয়ায় উদ্ধারে অনেকটা বেগ পেতে হয়।’
চৌদ্দগ্রাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিহতের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।