বিজ্ঞাপন
ডেস্ক রিপোর্ট : চা শ্রমিকদের দৈনিম মজুরি ১২০ টাকা। এই মজুরি ৩০০ টাকায় উন্নীত হোক, এমন দাবিতে আন্দোলন করছেন তারা। গত কয়েকদিনের আন্দোলনে মজুরি ১৪৫ টাকা করার প্রস্তাব এসেছিল দায়িত্বশীল মহল থেকে। কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করেন শ্রমিকরা। শেষ অবধি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রেখে আপাতত আন্দোলন থেকে সরে এসেছেন তারা। আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজার আগেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলতে চান চা শ্রমিক নেতারা। এর মাধ্যমে তারা নিজেদের দাবি আদায় সম্ভব বলে মনে করছেন।
মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে গত ৮ আগস্ট থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিন দুই ঘন্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন চা শ্রমিকরা। ১৩ আগস্ট থেকে শুরু হয় অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট। সেই ধর্মঘটের যবনিকাপাত ঘটেছে কাল রাতে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গতকাল রোববার রাত ৯টায় মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রশাসন ও চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের মধ্যে বৈঠক শুরু হয়। দীর্ঘ সেই বৈঠক শেষ হয় রাত তিনটার দিকে।
মূলত সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে শ্রমিক অসন্তোষ দূর করতে এই বৈঠক ডাকে স্থানীয় প্রশাসন। মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানের সভাপতিত্বে বৈঠকে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া, বিভাগীয় শ্রম দপ্তর শ্রীমঙ্গল কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল, সহসভাপতি পঙ্কজ কন্দ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে উভয়পক্ষ একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছে। সিদ্ধান্ত অনুসারে, আপাতত শ্রমিকরা ১২০ টাকা মজুরিতেই কাজে যোগ দেবেন। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলে নিজেদের দাবিদাওয়া জানাবেন তারা।
বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলো যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে জানানো হয়। মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকের প্যাডে দেওয়া বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা রেখে তাঁর সম্মানে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন তাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে আজ সোমবার কাজে যোগ দেবে। আপাতত চলমান মজুরি ১২০ টাকা হারেই শ্রমিকেরা কাজ করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে পরবর্তী সময়ে মজুরির বিষয়টি নির্ধারিত হবে। আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজার আগেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হওয়ার জন্য চা-শ্রমিক নেতারা আবেদন করেছেন, যা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জানানো হবে। চা-শ্রমিকের অন্যান্য দাবি লিখিত আকারে জেলা প্রশাসকের কাছে দেওয়া হবে, সেগুলো পাঠানো হবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। আর বাগান মালিকেরা চা বাগানের প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী ধর্মঘটকালীন মজুরি শ্রমিকদের পরিশোধ করবেন।
যৌথ বিবৃতিতে প্রশাসনের পক্ষে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া ও বিভাগীয় শ্রম দপ্তর শ্রীমঙ্গল কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলাম সই করেছেন। অন্যদিকে, বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষে ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল, সহসভাপতি পঙ্কজ কন্দ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা, অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দী সই করেছেন।