Advertisement (Custom)

বিজ্ঞাপন
প্রকাশিত: শনিবার, ২০ আগস্ট, ২০২২
সর্বশেষ সংষ্করণ 2022-08-20T14:26:24Z
সিলেট

‘নেতারা দালাল, সমঝোতা মানি না’ : আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন সাধারণ চা শ্রমিকরা

বিজ্ঞাপন

ডেস্ক রিপোর্ট : দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে টানা ৮ দিন ধরে কর্মবিরতিতে চা শ্রমিকরা। অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও শ্রম অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপে শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ২৫ টাকা বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা বিষয়টি মেনে চুক্তিতে স্বাক্ষর করলেও তা প্রত্যাখ্যান করেছেন সাধারণ শ্রমিকরা।

হবিগঞ্জের লস্করপুর ভ্যালির ২৪টি চা বাগানের শ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন তারা চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন। সেই সঙ্গে ভ্যালির নেতাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

লস্করপুর ভ্যালির সাধারণ সম্পাদক অনুরুদ্ধ বাড়াইক বলেন, ‘চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা আমাদের সাথে আলোচনা না করেই ১৪৫ টাকা মজুরিতে স্বাক্ষর করেছে। আমরা এই চুক্তি প্রত্যাখ্যান করছি। আমরা আমাদের কর্মবিরতি চালিয়ে যাব।

‘রাতে আমরা আমাদের ভ্যালির নেতাদের নিয়ে আলোচনায় বসে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা দেব।’

জানা যায়, শনিবার (২০ আগস্ট) দুপুরে শ্রীমঙ্গলস্থ বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের অফিসে চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস‍্য উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী ও মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া।

অপরদিকে, চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল ও বিভিন্ন ভ্যালির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।

বৈঠক শেষে শনিবার বিকেলে চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল জানান, প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে তারা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছেন। শ্রমিকদের মজুরি ২৫ টাকা বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া খোদ প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর থেকে ফিরে চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করবেন। চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ এ সময় তাদের দাবিদাওয়া প্রধানমন্ত্রীর নিকট উপস্থাপন করবেন। এই আশ্বাসে তারা আপাতত ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছেন। রোববার থেকে সব বাগানে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেবে।

কিন্তু নেতাদের এই সিদ্ধান্তকে মেনে নেননি সাধারণ চা শ্রমিকরা। বৈঠকের পরপরই শ্রীমঙ্গলস্থ শ্রম দপ্তরের সামনেই বিক্ষোভ শুরু করেন স্থানীয় চা শ্রমিকরা। তারা ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ারও কথা জানান তারা। এসময় সমিতির নেতাদের প্রতিও ক্ষোভ জানান সাধারণ শ্রমিকরা।

বাংলাদেশ চা কন্যা নারী সংগঠনের সভাপতি খায়রুন আক্তার বলেন, ‘আমাদের দালাল নেতারা ১৪৫ টাকা মজুরিতে স্বাক্ষর করেছে। তারা আমাদের কষ্ট কি বুঝবে। আমরা খেয়ে না খেয়ে ১২ দিন ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছি। এখন তারা আমাদের সাথে আলোচনা না করেই ১৪৫ টাকা মজুরিতে স্বাক্ষর করেছে। আমরা এই চুক্তি প্রত্যাখ্যান করছি। সেই সাথে দালাল নেতাদের বিরুদ্ধে ধিক্কার জানাই।’

হবিগঞ্জে চা বাগানের সংখ্যা ৪২টি। এর মধ্যে লস্করপুর ভ্যালিতে শ্রমিকের সংখ্যা ৩৫ হাজার। এর মধ্যে স্থায়ী শ্রমিকের সংখ্যা ২৭ হাজার।

বৈঠকের পর সিলেটের মালনিছড়া, হিলুয়াছড়া ও তারাপুর চা বাগানে শ্রমিকরাও এ সিদ্ধান্তকে বয়কট করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। কয়েক শ চা শ্রমিক বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মালনিছড়া বাগানের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।

এসময় মিছিলে উপস্থিত থাকা চা শ্রমিক ফেডারেশনের সংগঠক অজিত রায় বলেন- আমরা এ সিদ্ধান্ত মানি না। কমপক্ষে ২০০ টাকা দৈনিক মজুরি ছাড়া মানবো না।
বিজ্ঞাপন

জনপ্রিয় সংবাদ