বিজ্ঞাপন
ডেস্ক রিপোর্ট : একদিকে গরম অন্যদিক বিদ্যুৎ থাকে না ঘণ্টার পর ঘণ্টা। দিন ১১টায় যেমন বিদ্যুৎ চলে যায় তেমনি রাত ২টায়ও হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যায়। দিন রাত মিলিয়ে প্রায় তিন চারবার লোডশেডিং হচ্ছে সিলেটে। এটা আবার কোনো নির্দিষ্ট এলাকার জন্য নয়। সারা সিলেট বিভাগেরই একই অবস্থা।
গত দুদিন ধরে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন সিলেটর বাসিন্দারা। এই লোডশেডিং কতদিন চলবে তাও জানা নেই বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) সিলেটের কর্মকর্তাদের।
বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, তেল ও গ্যাস সংকটের কারণে অনিদির্ষ্টকলের জন্য লোডশেডিংয়ে পরেছে সিলেট। গত দুই দিন ধরে সিলেটে ৫০ মেগাওয়াট করে লোডশেডিং করা হচ্ছে। তেল ও গ্যাস সংকট নিরসন হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রতিদিন ৫০ মেগাওয়াট করে লোডশেডিং করার নির্দেশনা দিয়েছে ন্যাশনাল লোড ডেসপাস সেন্টার। লোডশেডিং সিলেটের কুমারগাও গ্রিড উপকেন্দ্র থেকে কন্ট্রোল করা হচ্ছে।
জানা যায়, ইউক্রেন যুদ্ধের পর তেল সংকট দেখা দিয়েছে। তাই তেল ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এতে প্রায় ১৫শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে বিবিয়ানা গ্যাস প্লান্ট সাটডাউনে আছে তাই গ্যাসের চাপ কম। এজন্য গ্যাসের যে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র আছে সেগুলোও বন্ধ হয়ে গেছে। যার ফলে প্রায় সারা দেশে বিদ্যুতের চাহিদার চেয়ে ১৫শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম উৎপাদন হচ্ছে। এই ঘাটতি পূরণ করতে সারা দেশে লোড ভাগ করে দিয়েছে ন্যাশনাল লোড ডেসপাস সেন্টার (এনএলডিসি)।
সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) সূত্রে জানা যায়, তেল ও গ্যাস সংকটের কারণে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে না। তাই সারা দেশেই লোডশেডিং করতে বলা হয়েছে। সিলেটে ৫০ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে বলা হয়েছে এনএলডিসি থেকে। তাই পিক আওয়ারে লোডশেডিং হবে। এই লোডশেডিং সিলেট কুমারগাও গ্রিড উপকেন্দ্র থেকে কন্ট্রোল করা হয়।
এদিকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ তার ভেরিফাইড ফেসবুক আইডি থেকে রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে এ ব্যাপারে একটি পোস্ট শেয়ার করেন। ওই পোস্টে তিনি লিখেন, ‘ গ্যাস স্বল্পতার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এতে অনেক জায়গাতেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন পুণরায় স্বাভাবিক হবে। যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির উচ্চমূল্য ও সরবরাহ অন্যান্য সব দেশের মতো আমাদেরকেও সমস্যায় ফেলেছে। এ পরিস্থিতিতে আপনাদের সাময়িক অসুবিধার জন্য আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি।’
এ ব্যাপারে সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদির বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকেই তেল সংকট দেখা দিয়েছে। তাই তেল ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এতে প্রায় ১৫শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। বিবিয়ানা গ্যাস প্লান্ট সাটডাউনে থাকায় গ্যাসের চাপ কম। গ্যাসের যে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র সেগুলোও বন্দ হয়ে গেছে। যার ফলে প্রায় সারা দেশেই আমাদের যা বিদ্যুৎ লাগে এর চেয়ে ১৫শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম উৎপাদন হচ্ছে। এই ঘাটতি পূরণ করতে সারা দেশে এটা ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। তাই পিক আওয়ারে লোডশেডিং হবে। তেল গ্যাসের এই সংকট সমাধান না হলে এভাবে চলতে হবে।
তিনি বলেন, সিলেটে ৫০ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে বলা হয়েছে ন্যাশনাল লোড ডেসপাস সেন্টার (এনএলডিসি) থেকে। এই লোডশেডিং সিলেট কুমারগাও গ্রিড উপকেন্দ্র থেকে কন্ট্রোল করা হয়। এখন আমরা যদি তাদের নির্দেশনা না মানি তাহলে এনএলডিসি ঢাকা থেকে আমাদের গ্রিডের বিদ্যুৎ বন্ধ রেখে দিবে। অনেকেই এ নির্দেশনা না মানায় ইতোমধ্যে এনএলডিসি থেকে বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হয়েছে। সিলেটের মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায়ও এভাবে একঘন্টা বন্ধ রাখা হয়েছে বিদ্যুৎ।
প্রকৌশলী আব্দুল কাদির বলেন, তেল ক্রয় করতে একটু সময় লাগবে। বিভিন্নভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে তেল ক্রয় করার। এই লোডশেডিংয়ের কবল থেকে কবে মুক্তি পাওয়া যাবে সেটা সুনির্দিষ্ট করে কেউ বলতে পারছেন না। তবে বিবিয়ানাতে প্লান্ট চালু হয়ে গেলে এই সংকট কিছুটা কাটবে।শেয়ার করুন