বিজ্ঞাপন
ডেস্ক রিপোর্ট : সিলেটকে এক সময় বলা হতো ‘দিঘীর শহর’। পুরো শহরজুড়ে ছিল দিঘী। অধিকাংশ এলাকায় বিশাল আকৃতির দিঘী থাকায় ওই সব দিঘীর নামেই নামকরণ হয়েছে পাড়া-মহল্লার। এখন মহল্লার পরিচিতি থাকলেও বেশিরভাগ দিঘীর কোনও অস্তিত্ব নেই। তবে এবার ছয় একরের ধোপাদিঘী সংস্কারের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে নান্দনিক রূপ। ভারত সরকারের অর্থায়নে পুকুরের চারপাশে নির্মাণ করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে। বাঁধানো হয়েছে একাধিক ঘাঁট। স্থাপন করা হয়েছে লাইট।
সংস্কারের কাজ শুরুর পূর্বে ঐতিহ্যবাহী এই দিঘীতে পানি ছিল ৩ দশমিক ৪১ একর জায়গাজুড়ে। চারপাশে দখল হওয়া জায়গা উদ্ধারের পর পানির সীমানা বেড়ে কমপক্ষে ৩ দশমিক ৭৫ একরে উন্নীত হয়েছে।
সংস্কারের পর ঐতিহ্যবাহী নান্দনিক এই ধোপাদিঘীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হতে যাচ্ছে শনিবার (১১ জুন)। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী মিলে ‘নান্দনিক ধোপাদিঘীর’ উদ্বোধন করবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ধোপাদিঘী রক্ষা করতেই সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। দিঘী খনন, ওয়াকওয়ে নির্মাণ, ঘাট বাঁধানো আর পাড় সংরক্ষণই ছিল প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। এখন এটি নগরের অন্যতম আকর্ষনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। নির্মল পরিবেশে হাঁটাচলার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে দিঘীর চারদিকে।
তিনি বলেন, দিঘী এলাকা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এর প্রবেশপথ থাকবে সিটি করপোরেশনের মসজিদের উত্তর পাশে। রাতের বেলা আলোকসজ্জার ব্যবস্থা থাকবে।
সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, ধোপাদিঘী ওয়াকওয়ের পাশাপাশি আরও তিনটি প্রকল্প উদ্বোধন করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ভারতের হাইকমিশনার ও সিসিক মেয়র। বাকি প্রকল্প দুটি হচ্ছে, ৬তলা বিশিষ্ট চারাদিঘীরপার স্কুল ও কাস্টঘর সুইপার কলোনি।
জানা যায়, এক সময় সিলেটের পুরনো কারাগারের পাশের দিঘীটিতে স্থানীয় ধোপারা কাপড় ধোয়ার কাজ করতেন। এ থেকেই নাম হয় ধোপাদিঘী, আর এলাকার নাম হয় ধোপাদিঘীরপাড়। দিঘীটি সংরক্ষণ ও সৌন্দর্যবর্ধনের লক্ষ্যে ভারত সরকারের অর্থায়নে ‘বিউটিফিকেশন অব ধোপাদিঘী’ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে। প্রকল্পের অধীনে দিঘী খনন, চারপাশে দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে নির্মাণ, রেলিং ও লাইটপোস্ট বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে ২০১৮ সালের শেষদিকে ধোপাদিঘী দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালায় সিটি করপোরেশন। ২০২০ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে কাজে ধীরগতি দেখা দেয়। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুরোদমে শুরু হয় প্রকল্পের কাজ। প্রকল্পে ভারত সরকার ২১ কোটি ৮৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা অর্থায়ন করে।