বিজ্ঞাপন
ডেস্ক রিপোর্ট : জান্নাতুল বৃষ্টির বয়স এখন প্রায় ৮ বছর। এই বয়সে তার খেলাধুলা করার কথা, ছুটে বেড়ানোর কথা। অন্য শিশুদের মতো স্কুলে যাওয়ার কথা। কিন্তু জন্মের বছর দুইয়ের পর থেকেই তাকে বেঁধে রাখতে হচ্ছে। যে দৃশ্য সহ্য করতে পারছেন না বৃষ্টির মা–বাবাও।
বৃষ্টির বাড়ি নেত্রকোনার দুর্গাপুর পৌরসভার দশাল এলাকায়। জন্মের পর থেকেই শিশুটি মানসিক সমস্যায় ভুগছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু দিনমজুর বাবা শাহজাহান টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। ফলে কখনো দুহাত একসঙ্গে আবার কখনো দুই হাত দুই দিকে বেঁধে রাখতে হচ্ছে মা–বাবাকে। এমন পরিবেশেই বেড়ে উঠছে বৃষ্টি।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৬ জুন একজন ধাত্রীর মাধ্যমে জান্নাতুল বৃষ্টির জন্ম হয়। জন্মের পর শিশুটি সাড়াশব্দ না থাকায় তাকে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকেরা তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু হতদরিদ্র পরিবারটির সামর্থ্য না থাকায় ওই হাসপাতালে রেখেই চিকিৎসা করায়। সেখানে দুই দিন পর শিশুটির নড়াচড়া করে। পরে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। এক বছর বয়স থেকেই শিশুটি অস্বাভাবিক আচরণ শুরু হয়। দিনে দিনে এসব আচরণ বাড়তে থাকে। তাকে ছেড়ে দিলে নিজেই মাথায় চাপড়ায় ও হাত কামড়ায়। যেদিকে খুশি চলে যেতে চায়। অন্যকে মারধর করে, রাতে না ঘুমিয়ে অস্বাভাবিক আচরণ করে। ফলে শিশুটির দুহাত বেঁধে রাখা হচ্ছে।
শিশুটির মা আয়েশা খাতুন বলেন, ‘আমি এই মেয়েডারে লইয়া অনেক কষ্টে আছি। রাইতে ঘুমাইতে পারি না। রাইত–দিন হাত বাইন্দা রাখতে হয়। মা হইয়া এই দৃশ্য দেখতে কষ্ট হয়। টেহার লাইগ্গা ডাক্তার দেহাইতে পারি না। যদি সরকার আমার মেয়েডার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিত তাহলে সুস্থ হয়ে যেত।’