বিজ্ঞাপন
হারিছ আলী : সিলেটের গোলাপগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী খাসিখালটি দিন দিন ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এক সময়ের খরস্রোত এ খালটি কচুরিপানা আর ময়লা আবর্জনায় ভরাট হয়ে যাওয়ার ফলে পানি প্রবাহ একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে খালটি এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে।
খালে স্থানীয় একটি ফ্যাক্টরির বর্জ্য আর আশপাশের বাসাবাড়ির ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণে ডাস্টবিনে পরিণত হয়েছে। এতে চরম ক্ষুব্ধ পরিবেশবাদী ও সামাজিক সংগঠনগুলো।
জানা যায়, উপজেলার পৌর সদরের পাশেই অবস্থিত খাসিখালের অবস্থান। এক সময়ে খরস্রোত এ খাল দিয়ে ডিঙ্গি নৌকা চলাচল করত প্রতিনিয়ত। আশপাশ উপজেলা ছাড়াও দূরদূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা নৌকা দিয়ে মালামাল নিয়ে আসতেন গোলাপগঞ্জ সদরে। তারা মালামাল পরিবহন করতেন ডিঙ্গি নৌকায়।
এছাড়া স্থানীয় লোকজন এ খালে সৌখিন লোকজন পলো বাওয়া উৎসব পালন করতেন প্রতি বছর। শুধু টিকরবাড়ী গ্রামের লোকজনই নয় পার্শ্ববর্তী রণকেলী ও ঘোষগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকার লোকজন আসছেন মাছ ধরতে। এতে শত শত লোকজন অংশ নিতেন পলো বাওয়া উৎসবে।
এখন কালের আবর্তে হারিয়ে গেছে সেই ঐতিহ্য। এখন পলো বেয়ে মাছ ধরাত দূরের কথা খালের পাশেই যায় না লোকজন। স্থানীয় বাসা বাড়ির লোকজন ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণে ও কচুরিপানার গন্ধে অতিষ্ঠ লোকজন।
দীর্ঘদিন থেকে খালটি ভরাট হয়ে গেলেও নব্যতা ফেরাতে তা খননের কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছেনা রহস্যজনক কারণে। বর্তমানে পুরো খালটি একবারে ভরাট হয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে। খালে পানি প্রবাহ বন্ধ থাকার ফলে স্থানীয় কৃষকরা পড়েছেন বেকায়দার মধ্যে। তারা খাল থেকে সেচ দিয়ে পানি দিতে পারছেন না।
এদিকে খালটি খনন করে নব্যতা ফেরানোর দাবি স্থানীয় পরিবেশবাদী লোকজনদের। এ নিয়ে অনেক সভা-সমাবেশ হয়েছে এলাকায়। সম্প্রতি সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড খাসিখালসহ উপজেলার ৬টি খাল খনন করে নব্যতা ফেরাতে ঢাকায় একটি প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বর্তমানে এ খালটি যেন মরা খালে পরিণত হয়েছে।
জানতে চাইলে পরিবেশবাদী আব্দুল লতিফ সরকার বলেন খাসিখালটি খননের দাবি আমাদের দীর্ঘ দিনের। কিন্তু দুঃখজনক এখনো খালটি খনন করা হচ্ছে না।
উপজেলা গণদাবী পরিষদের সভাপতি ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা এ বিষয়ে বার বার দাবি করে আসছি। কিন্তু খাসিখালটি খনন না করায় এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। দ্রুত এ খালটি খননের দাবি করেন তিনি।