Advertisement (Custom)

বিজ্ঞাপন
প্রকাশিত: শনিবার, ১২ মার্চ, ২০২২
সর্বশেষ সংষ্করণ 2022-03-12T14:23:41Z
জৈন্তাপুরলিড নিউজ

জৈন্তাপুরে ঐতিহ্যবাহী “পলো বাওয়া উৎসব” পালিত

বিজ্ঞাপন
বাড়ারডুয়ার বিলে পলো বাওয়ার মহোউৎসব

নাজমুল ইসলাম : গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য হলো পলো দিয়ে মাছ ধরা। শুষ্ক মৌসুমে পানি কমে যাওয়ায় এ সময়টাতে দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলের কম পানিতে গিয়ে আশ্রয় নেয়। তখন কম পানিতে পলো দিয়ে মাছ শিকারে আনন্দ পান সৌখিন শিকারী ও কৃষকরা। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় পালিত হলো ঐতিহ্যবাহী “পলো বাওয়া উৎসব”। 

শনিবার (১২ মার্চ) সকালে জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর-বালিপাড়া গ্রামবাসি মিলিত হয়ে বাড়ারডুয়ার বিলে এ উৎসব পালিত হয়। সাতসকালেই দূর-দূরান্ত থেকে কয়েকশ' মানুষ জড়ো হন বিলের ধারে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়ে শৌখিন মাছ শিকারীদের সঙ্গে উৎসূক দর্শকদের ভিড়। এক পর্যায়ে অনেকটা উৎসব উদযাপনের মতো পলো দিয়ে মাছ ধরতে বিলে নামেন শিকারীরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পলোসহ মাছ শিকারের নানা সরঞ্জাম নিয়ে বিলে নামেন শিকারীরা। এ সময় পলোতে আটকা পড়তে দেখা যায় দেশীয় প্রজাতির মাছের মধ্যে শোল, বোয়াল, রুই, কাতলাসহ অনেক প্রজাতির মাছ। উৎসবে অংশ নেয়া অনেক শিকারীই মাছ ধরতে পেরে যেন আনন্দে আত্মহারা। কেউ কেউ আবার মাছ না পেয়ে ফেরেন খালি হাতে। তবে এ বছর বড় মাছের সংখ্যা কম দেখা গেছে।

হরিপুর গ্রামের আনা মিয়া নামের এক গ্রবীণ মুরব্বি বলেন, প্রায় প্রতি বছর এ বিলে মাছ ধরতে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ আসে আবার কেউ আসে মাছ ধরার উৎসব উপভোগ করতে। এ উৎসব আমাদের পূর্ব পুরুষের ঐতিহ্য। আমরা এটি ধরে রেখেছি। এই বছর আমি শারীরিক কারণে অংশ নিতে না পারলেও ছেলে এবং নাতিসহ সকলের সাথে  বিলের ধারে এসে সে আনন্দ উপভোগ করছি।

কলেজ ছাত্র আলী আকবর বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নদী-নালা ও খাল-বিলের তলদেশ ভরাট হয়ে প্রতিনিয়ত পানি হ্রাস পাচ্ছে। নদী দূষণসহ নানামুখী তৎপরতার কারণে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্রগুলোর বেশির ভাগই বিনষ্ট হয়ে গেছে। নদী বেঁচে থাকলে বেঁচে থাকবে ঐতিহ্যবাহী এ পলো উৎসব। তাই পলো বাওয়া উৎসব থেকেই নদী রক্ষার দাবি জানানো হয়।

হরিপুর গ্রামের বুলবুল জানান, দিন দিন হারিয়ে যাওয়া বাঙালির ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে প্রতি বছর এই উৎসব পালন করে এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করে আসছেন। নদীমাতৃক প্রতিটি এলাকাতেই যেন ঐতিহ্যবাহী পলো বাওয়া উৎসবের আয়োজন করা হয়। শিশু ছোট শিশু শাহরিয়া আলম জানায়, আমি আব্বার লগে মাছ ধরাত আইছি। ইনো আইয়া আমার খুব ভালা লাগের, আমি পাড় থাকি ছোট মাছ ধরছি। বড় অইলে আব্বার মত বড় বড় মাছ ধরমু।

বিজ্ঞাপন

জনপ্রিয় সংবাদ