বিজ্ঞাপন
নিজস্ব প্রতিনিধি : ইচ্ছামত ওএমআর ফরম নিয়ে নেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম না থাকলেও কিছুক্ষেত্রে নিজেদের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দেন শিক্ষকরা।
বিয়ানীবাজার আদর্শ মহিলা কলেজের পরীক্ষা কক্ষ থেকে এক ছাত্রীর উত্তরপত্র গায়েব হওয়ার ঘটনায় তোলপাড় চলছে। বিষয়টির প্রতিকার পেতে রেহানা বেগম নামের এক ছাত্রী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক নূর ওই কলেজের দায়িত্বশীল শিক্ষকদের ডেকে পাঠিয়েছেন।
জানা যায়, বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্রী রেহানা বেগম গত ৫ মার্চ বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি চলে যান। ওই দিন নির্দিষ্ঠ সময়ের আধাঘন্টা পূর্বে ওই কক্ষের সকল পরীক্ষার্থীর ওএমআর নিয়ে নেন দায়িত্বরত শিক্ষকরা। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম বহির্ভূত এমনকান্ডে পরীক্ষার হলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
পরীক্ষার্থী রেহানা বেগম (রোল নং ২০৭৫০৬৯, রেজি: নং ১৭২৭০০৭৬২৫১) জানান, পরীক্ষা শেষে হলে নিজ কক্ষের দায়িত্বশীল শিক্ষকদের হাতে উত্তরপত্র জমা দিয়ে বাড়ি চলে যান। এদিন রাত অনুমান সাড়ে ৯ টার দিকে হঠাৎ করে পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে ওই কক্ষের বেশ ক’জন পরীক্ষার্থীকে ফোন করে উত্তরপত্র পাওয়া যাচ্ছেনা বলে জানানো হয়। তিনি আরো জানান, মঙ্গলবার পরীক্ষা দিতে আসার পর তাকে কক্ষ থেকে বের করে দেন দায়িত্বরত শিক্ষকরা। এতে তিনি মধ্য যুগের কবিতা বিষয়ে পরীক্ষা দিতে পারেননি। পরীক্ষা না নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ওই ছাত্রী জানান, তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, ৫ মার্চ পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করেন প্রভাষক আতিউর রহমান, প্রভাষক আব্দুল মান্নান ও প্রভাষক সামছ উদ্দিন। পরীক্ষা কক্ষে ব্যক্তিগত বিষয়াদি নিয়ে দায়িত্বরত শিক্ষকরা ফোনালাপে ব্যস্ত সময় কাটান। তারা একে অপরের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। নিজেদের মধ্যে দলাদলি ও এক শিক্ষক অপর সহকর্মীকে ঘায়েল করতে ওই ছাত্রীর উত্তরপত্র গায়েব করতে পারেন বলে মনে করছেন অনেকে।
বিয়ানীবাজার আদর্শ মহিলা কলেজের প্রভাষক আব্দুল মান্নান বলেন, এ বিষয়ে আতিউর স্যার বলতে পারবেন। তিনি হয়তো উত্তরপত্র হারিয়ে ফেলতে পারেন।
প্রভাষক আতিউর রহমান বলেন, ও্ই ছাত্রী দরজার কাছে পরীক্ষা দিচ্ছিল। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ওই পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র হারিয়েছে বলে জানালে রেহানাকে আমরা সন্দেহ করি। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী ওই ছাত্রীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ওই ছাত্রীর উত্তরপত্র হারানো গেছে এমন তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেলে সে-ই যে তা নিয়ে গেছে, তার কোন ব্যাখা দিতে পারেননি তিনি। এ প্রতিবেদকের অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা ইচ্ছামত ওএমআর ফরম নিয়ে নেই। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম না থাকলেও আমরা কিছুক্ষেত্রে নিজের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দেই।
মঙ্গলবার পরীক্ষা দিতে না পেরে ওই ছাত্রী বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ কলেজ ক্যাম্পাসে দিনভর কান্নাকাটি করেন। পরে লিখিত অভিযোগ নিয়ে তিনি ইউএনও’র কাছে জমা দেন।
বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক নূর জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্বশীলদের তলব করা হয়েছে। তাদের ব্যাখা উপযুক্ত না হলে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।