বিজ্ঞাপন
স্টাফ রিপোর্ট : সিলেটে শ্বাসরুদ্ধ করে এক বছর ৫ মাস বয়সী শিশুকে বালিশ চাপায় হত্যার ঘটনায় মা নাজনিন আক্তারের (২৮) বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে শিশুটির বাবা সাব্বির হোসেন। বুধবার রাতে সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরান থানায় এই হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আনিসুর রহমান।
এদিকে নাজনিন আক্তার এখনো পুলিশের শাহপরান থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে জানিয়ে ওসি বলেন, তাকে এই হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে । তাকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেওয়ার জন্য আমারা আদালতে তুলছি।
নাজনিন সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার শরীফগঞ্জ ভাদেশ্বর ইউনিয়নের কালিকৃষ্ণপুর গ্রামের মো. জিয়া উদ্দিনের মেয়ে। তিনি সিলেটের একটি বেসরকারি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের শিক্ষিকা। গতকাল বুধবার নিজের গর্ভে ধরা ১৭ মাস বয়সী সন্তানকে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। বুধবার সকালে সিলেট নগরের শাহপরান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে স্বামীর সাথে বিরোধের জেরে মেয়েকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেন বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। পরে মেয়ের কান্নার শব্দ শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে আসেন। গতকাল বিকেলে হাসপাতাল থেকে নাজমিনকে আটক করে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। একই সময় নাজমিনের স্বামী সাব্বির হোসেনকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সিলেটের দক্ষিণ সুরমার গোলাপগঞ্জ এলাকার নাজমিনের সাথে দক্ষিণ সুরমার বদলি এলাকার সাব্বির আহমদের বিয়ে হয় ২০১৫ সালে। বিয়ের পর থেকে তারা শাপরান এলাকায় থাকেন। নাজমিন একটি বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ও তার স্বামী কাতার প্রবাসী।
এর আগেও একটি বিয়ে হয়েছিলো নাজনিনের। সেই সংসারে তার একটি সন্তান রয়েছে।
এদিকে গতকাল (বুধবার) থানায় উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে নাজমিন বলেন, বিয়ের পর আমার স্বামী বিদেশ চলে যায়। এরপর চার বছর পর দেশে ফিরে। কিন্তু বিদেশ থাকা অবস্থায় তিনি আমার ভরণ পোষণের দায়িত্ব নেননি। দেশে ফিরে আমাকে অনেক বুঝিয়ে আবার সংসার শুরু করেন তিনি। তখন আমি গর্ভবতী হই। আমাকে গর্ভবতী রেখেই তিনি আবার কাতার চলে যান।
নাজমিন অভিযোগ করে বলেন, বিদেশে গিয়ে সাব্বির অভিযোগ করেন আমার গর্ভের সন্তান তার নয়। আমি তখন ডিএনএ টেস্ট করার কথা বলি। কিন্তু সাব্বির ও তার তার পরিবার আমার বিরুদ্ধে কুৎসা রটাতে থাকে।
মেয়ের চেহেরা অবিকল তার বাবার মতো হয়েছে জানিয়ে নাজমিন বলেন, সাব্বির ১৫ দিন আগে দেশে এসেছেন। কিন্তু একবারও মেয়েকে দেখতে আসেননি। বরং আমার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার করছেন। এই দুঃখে আমি আমার মেয়েকে হত্যা করেছি।
নিজের মেয়েকে হত্যার দায় স্বীকার করে নাজমিন বলেন, আমি কাউকে ফাঁসাবো না। সাব্বিরকেও ফাঁসাবো না। তাকে ফাঁসালেও সে কম শাস্তিতে পার পেয়ে যাবে। তার বিচার আল্লাহ করবেন। আমি আমার মেয়েকে খুন করছি। আমার ফাঁসি হোক।