বিজ্ঞাপন
ডেস্ক রিপোর্ট : পরিবেশকর্মীদের কাছে দুটি বানরছানা ও ৪টি বালিহাঁস বিক্রির জন্য নগরীর শাহী ঈদ্গাহ এলাকায় এসেছিলেন রাসেল সিকদার (৩৭)। কিন্তু বিক্রিতো হয়নি তাকে যেতে হয়েছে জেল-হাজতে।
শনিবার বেলা প্রায় বারোটায় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট শাখার সাধারন সম্পাদক আব্দুল করিম কিম ও পরিবেশকর্মী এডভোকেট অরুপ শ্যাম বাপ্পী ক্রেতা সেজে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে রাসেল সিকদারের সাথে যোগাযোগ করেন। দুই বানর ছানার মূল্য নির্ধারন হয় আট হাজার টাকা ও চার বাঁলিহাঁসের মুল্য দুই হাজার। তিনবার স্থান পরিবর্তন করে বিক্রেতা শাহী ঈদ্গা এলাকায় পরিবেশকর্মীদের সাথে দেখা করে। বানর ছানা ও হাঁস ‘ফ্রেশ আপেল’ লেখা দুটি বাক্স থেকে বেড় করে প্রদর্শনকালেই বন বিভাগ ও র্যাব-৯ এর যৌথ দল এসে উপস্থিত হয়। আটক করা হয় বিক্রেতা রাসেল সিকাদারকে। আটক রাসেল সিলেট নগরীর পাঠানটুলা এলাকার আতিক মিয়ার পুত্র।
অরুপ শ্যাম বাপ্পি ও আব্দুল করিম কিম জানান, ‘বালিহাঁস ও কালিম পাখি প্রেমিদের আড্ডা’ নামেরর একটি ফেসবুক গ্রুপে শিকদার এমডি রাসেল নামের ফেসবুক আইডি থেকে বানর বিক্রির জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। এতে কৌশল অবলম্বন করেন দুই পরিবেশ কর্মী। অরুপ শ্যাম বাপ্পি শিকদার রাসেলের ওই পোস্টে যোগাযোগ করে মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করেন। কথামত শনিবার সকাল সাড়ে ১১ টায় সিলেট নগরীর রিকাবীবাজারে বানর দুটি নিয়ে আসার কথা থাকলেও ১১ টায় রাসেল নামের ব্যক্তি রিকাবীবাজার অনিরাপদ উল্লেখ করে শাহী ঈদগাহ এলাকার মিনারের নিচে আসতে বলে। পরে আবার স্থান পরিবর্তন করে ‘লিহান পর্দা গ্যালারি’র ঠিকানা দিয়ে ওখানে যেতে বলে।
বন বিভাগ সিলেটের টাউন রেঞ্জ কর্মকর্তা (ওয়াইল্ডলাইফ) শহীদ উল্লাহ জানান, পরিবেশ কর্মীদের দেওয়া তথ্যে র্যাব এবং বন বিভাগের যৌথ সমন্বয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। র্যাবের পক্ষ থেকে রাসেল নামের ব্যক্তিকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার পর আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে মামলা দেওয়া হবে। তার কাছ থেকে আনুমানিক তিন মাস বয়সের দুটি বানর ছানা ও ৪টি বালিহাঁস উদ্ধার করা হয়েছে। এগুলো অবমুক্ত করা হবে।
আব্দুল করিম কিম জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক চক্র বন্যপ্রাণী ও পরিযায়ী পাখি বিক্রি করছে। দেশের আইনে এমন কাজ অপরাধ হওয়া সত্বেও এদের দমনে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তেমন কোন আগ্রহ নেই। পরিবেশকর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সিলেট থেকে দেশীয় ও পরিযায়ী পাখি শিকার ও বিক্রি বন্ধে কাজ করছেন। বন বিভাগের হাতেগোণা কিছু কর্মকর্তা এই অপরাধ দমনে আন্তরিক হলেও অধিকাংশের কোন আগ্রহ নেই।