বিজ্ঞাপন
নিজস্ব প্রতিবেদক : সিলেটের গোলাপগঞ্জ থেকে ৫দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছে এক মাদ্রাসা ছাত্র। উপজেলার জামেয়া ইসলামিয়া বহরগ্রাম মাদ্রাসা থেকে নিখোঁজ হয় সে। নিখোঁজ ছাত্র আবদুর রহিম তানিম (১৩) উপজেলার আমুড়া ইউনিয়নের কদমরসুল গ্রামের রাজন আহমদ রাজার ছেলে।
এ ঘটনায় তার বাবা ২২ ফেব্রুয়ারি গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন। মাদ্রাসা থেকে ছাত্র নিখোঁজের ৪ দিন হলেও মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা এনামুল হকের ভূমিকা রহস্যজনক বলে অভিযোগ করেছেন তানিমের পরিবারের সদস্যরা। তিনি কোন ধরনের সহযোগীতা না করে উল্টো তানিমের পিতা ও আত্মীয়-স্বজনদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে।
তানিমের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত রমজানের পর আব্দুর রহিম তানিম জামেয়া ইসলামিয়া বহরগ্রাম মাদ্রাসার ৫ম শ্রেণীতে ভর্তি হন। তানিম মাদ্রাসার বোর্ডিংয়ে থেকেই পড়াশোনা করত। মাস-দেড়েক অন্তর অন্তর বাড়ীতে আসত। গত ২০ ফেব্রুয়ারি (রোববার) দেড়টার পর থেকে তাকে আর পাওয়া যায়নি। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক তানিম বাবা ও পরিবারের লোকজন তার সন্ধানে বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তাকে পাননি।
পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, রহিম তানিম নিখোঁজের ঘটনায় মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা এনামুল হকের সাথে যোগাযোগ করলেও তিনি কোন ধরনের সহযোগীতা না করে উল্টো দায়িত্বহীন এবং খারাপ ব্যবহার করেন।
তানিমের পিতা প্রতিবেদককে জানান, নিখোঁজের খবর পাওয়ার পর প্রিন্সিপালের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে বিষয়টি তিনি আমলে না নিয়ে ছাত্রকে দোষারোপ করেন। প্রিন্সিপাল বলেন, সে কোথায় পালিয়ে গেছে, আপনারা খোঁজ করেন।
পরদিন তানিমের পরিবারের সদস্যরা মাদ্রাসায় গিয়েও প্রিন্সিপালের কাছ থেকে কোন ধরনের সহযোগীতা পাননি। সেখানেও দূর্ব্যবহারের করেন প্রিন্সিপাল।
এ ব্যাপারে জামেয়া ইসলামিয়া বহরগ্রাম মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা এনামুল হকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ঘটনার দিন আমাদের মাদ্রাসায় একটি অনুষ্ঠান ছিল। রাতে আব্দুর রহিম তানিমকে রুমে না পাওয়ায় তার খোঁজ করলে জানতে পারি সে যোহরের পর থেকে মাদ্রাসায় নেই। পরদিন তার পরিচিত শিক্ষার্থী বদরুল আমিনকে দিয়ে বাড়ীতে খোঁজ করলে তাকে সেখানেও পাওয়া যায়নি।
তানিমের পরিবার আত্মীয়-স্বজনদের সাথে খারাপ ব্যবহার ও কোন ধরনের সহযোগীতা না করার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। তিনি আরো জানান, সে আগেও একাধিকবার মাদ্রাসা না জানিয়ে বাড়ীতে গিয়েছে। এবারও আমরা এমনটি হতে পারে মনে করেছিলাম।
তবে বদরুল আমিনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে সে জানায়, মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল বা কারো কথায় নয়, আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে আব্দুর রহিম তামিমের খোঁজ নিতে তার বাড়ীতে ফোন দিয়েছিলাম।
গোলাপগঞ্জ মডেল থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই এখলাছুর রহমান জানান, জিডি এন্ট্রির পরপরই তার সন্ধানে বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করেছি। মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও দায়িত্বরত গ্রাম পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেছি। বৃহস্পতিবার তদন্তের জন্য ঘটনাস্থল জামেয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসায় যাব। এছাড়া বিষয়টি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করবেন বলে জানান তিনি।
তানিমের বাবা রাজন আহমদ রাজা সমাজের সকলের কাছে পুত্রের সন্ধানে সহযোগীতা কামনা করেন। কোন হৃদয়বান ব্যক্তি তার সন্ধান পেলে ০১৭১৯-৯৪৯৮৯৯ এই নাম্বারে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করেছেন।