Advertisement (Custom)

বিজ্ঞাপন
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২২
সর্বশেষ সংষ্করণ 2022-01-21T15:38:49Z
ওসমানীনগরলিড নিউজ

ইউপি নির্বাচনে ইভিএম নিয়ে শঙ্কিত ওসমানীনগরের ভোটাররা !

বিজ্ঞাপন

রনিক পাল, ওসমানীনগর : আগামী ৩১ জানুয়ারি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রথম বার ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতিতে ভোট দেওয়ার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে যাচ্ছেন সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলাবাসী।

আধুনিক প্রযুক্তি ইভিএমের মাধ্যমে এ উপজেলায় আগে কখনো ভোট গ্রহন হয়নি। তাই ইভিএম নিয়ে প্রার্থী, সমর্থক ও সাধারণ ভোটাররা উদ্বিগ্ন থাকলেও ইভিএম ভোট প্রদান প্রদ্ধতির প্রচারনা ও সচেতণতার বিষয়ে নানা অযুহাতে দায়সারা ভাব করছেন উপজেলার দ্বায়িত্বে থাকা নির্বাচন কর্মকর্তারা।

প্রথমবারের মতো ইভিএমের পদ্ধতিতে ভোট প্রদান নিয়ে সাধারণ ভোটারদের সচেতনতায় কোনো উদ্যোগ লক্ষনীয় নয়। ফলে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট প্রদানে ভোটারদের মনে নানা জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি হয়েছে।

নির্বাচন অফিসের প্রচারের অভাবে ভোট কেন্দ্রে ভোটারকে ভূগান্তিসহ কেন্দ্র গিয়ে নাজেহাল হওয়ার শংঙ্কা রয়েছে। অবাধ সুষ্ট নির্বাচনের স্বার্থে ইভিএম সম্পর্কে ভোটারদের ধারণা দেয়ার পাশাপাশি ইভিএম ভোট গ্রহন সম্পর্কে ব্যাপক প্রচারণা আয়োজন করার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহব্বান জানাচ্ছেন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা।

তবে, এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রচারনাসহ গনসচেতণতা সৃষ্টির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তাদের উদ্যোগ নেয়ার কথা বলা হলেও ভোট কেন্দ্রে নিয়োজিত থাকা দ্বায়িত্ব প্রাপ্তদের দুই দিনের প্রশিক্ষন ছাড়া সাধারণ ভোটার কিংবা জনসম্পৃক্ততা মূলক কার্যক্রম লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে নির্বাচন অফিসে ব্যাপক কর্মতৎপরতা দেখা গেলেও ইভিএমকে সাধারণ ভোটারদের মাঝে পরিচিত করার কোনো প্রয়াস নেই। ফলে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটে অভ্যস্ত সাধারণ ভোটাররা ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট প্রদান নিয়ে উদ্বিগ্ন।

জানা গেছে, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে উপজেলার ৮ ইউনিয়নের ৭২টি ওয়ার্ডের ৭৮টি ভোট কেন্দ্রে ৪২৯টি বোথে ৭৪ হাজার ৫৩৪ পুরুষ ও ৭২ হাজার ১৭০ জন নারীসহ মোট ১ লক্ষ ৪৬ হাজর ৭০৪ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। ইভিএম মাধ্যমে কখনো ভোট না দেয়ায় সাধারণ ভোটাররা এই পদ্ধতি সম্পর্কে তেমন একটা জানেন না। যারা ইভিএম নিয়ন্ত্রণ করবেন তারা কতটুকু নিরপেক্ষ থাকবেন সেটা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে অনেক ভোটারের। নতুন এ প্রযুক্তি কীভাবে ব্যবহার করবেন তা নিয়েও অনেক ভোটারের মধ্যে রয়েছে জানার ঘাটতি। প্রতীক কোথায় থাকবে!

কেমন করে ভোট নিশ্চিত হবে? এমন নানা প্রশ্ন সাধারণ ভোটরদের মধ্যে। বিশেষ করে নিরক্ষর,স্বল্পশিক্ষিত, গৃহিণী ও বয়স্কদের মধ্যে ইভিএম ভোট নিয়ে জড়তা ও সংশয় কাজ করছে। শুধু সাধারণ ভোটারই নন, ইভিএম নিয়ে অনেক চেয়ারম্যান ও সাধারণ সদস্য পদপ্রার্থীর মধ্যেও শঙ্কা রয়েছে। তবে, শিক্ষিত ও তরুণ ভোটারদের মধ্যে ইভিএম ভোট নিয়ে শঙ্কা কিছুটা কম লক্ষ করা যাচ্ছে।

গোয়ালাবাজারের তরুণ ভোটার রাসেল,তাজপুরের ৬০ বছর বয়সী জমির আলী ও দয়ামীর ইউনিয়নের নাজমা বেগমসহ কয়েকেজন ভোটার জানান, আগে কোন নির্বাচনেই তারা এই পদ্ধতিতে ভোট প্রয়োগ করেননি। অনেকের আবার লেখাপড়াও তেমন জানা নেই। ইভিএম সম্পর্কে ধারণা না থাকায় বয়স্করা ও মহিলারা ভোট কেন্দ্র বিপাকে পড়ারাও আশঙ্কা রয়েছে। আধুনিক পদ্ধতিতে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারব কি না, সেটাই চিন্তা হচ্ছে।

লোক মুখে জানতে পেরেছি, ভোট এক জায়গায় দিলে নাকি আরেক জায়গায় হয়ে যাবে। সাধারণ ভোটারদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন প্রশিক্ষণ বা প্রচারণার আয়োজন করলে অনেকেই কেন্দ্র গিয়ে ইভিএম সম্পর্কে ধারণা লাভ করে ভোট দিতে পারবেন।

ইউপি নির্বাচনে অংশগ্রহনকারী একাধিক চেয়ারম্যান ও সাধারণ সদস্য প্রার্থী জানান, নির্বাচনে অংশগ্রহনকরী প্রার্থীদের নিয়ে সম্প্রতি প্রশানের উদ্যোগে এক সভায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সকল প্রার্থীরাই ইভিএম নিয়ে ভোটারের শঙ্কার বিষয়টি প্রশাসনকে অবগত করেছেন। জনগুরুত্বপূর্ন স্থানে বিশেষ করে মহিলা ও বয়স্কদের ইভিএমে ভোট প্রদানের সচিত্র প্রচারের ব্যবস্থা করলে ভোটররা নিশ্চিন্তে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন।

একাধিক ইউনিয়নের সতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী অভিযোগ করে বলেন, ইভিএম নিয়ে আ.লীগের প্রার্থী ও কর্মীরা ভোটারদের মধ্যে আতঙ্কসহ মানুষের মনে ভীতি ও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। বলা হচ্ছে, ভোট দেব এক জায়গায় দিলে, আরেক জায়গায় চলে যাবে। তাহলে আর অন্য জায়গায় দিয়ে লাভ কি? যে প্রতীকেই ভোট দিন না কেন, সেটা নাকি নৌকায় চলে যাবে। এসব বিভ্রান্তিতে ভোটাররা শঙ্কায় রয়েছেন।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে বুধবার দুপুরে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটানিং কর্মকর্তার আবু লায়েশ দুলালের কার্যালয়ে গিয়ে কক্ষ বন্ধ পাওয়া যায় রাতে মঠোফোনে একাধিকবার কল করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নীলিমা রায়হানা বলেন, উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে প্রচারের মাধ্যমে সাধারণ ভোটারদের ইভিএম পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার কথা রয়েছে। যদি বাস্থবায়ন না হয় বিষয়টি নির্বাচন অফিসের সাথে কথা বলে দেখবো।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন ছিল গত ৩ জানুয়ারি। ৬ জানুয়ারি বাছাইয়ের দিনে কোন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়নি। ১৩ জানুয়ারি প্রার্থীতা প্রত্যাহার শেষ দিনে ৪জন চেয়ারম্যান প্রার্থী ও ৫জন সাধারণ সদস্য প্রার্থী তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেন। ১৪ জানুয়ারি প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আগামী ৩১ জানুয়ারী ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে।
বিজ্ঞাপন

জনপ্রিয় সংবাদ