বিজ্ঞাপন
জাহিদ উদ্দিন : গোলাপগঞ্জে ১০টি ইউনিয়নে নির্বাচন রোববার (২৬ডিসেম্বর) । চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ২ লাখ ১৫ হাজার ৮৭৮ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
ইতিমধ্যে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা শেষ হয়েছে শুক্রবার রাত ১২টায়। প্রচারণার শেষ দিনে পৌষের হাড় কাঁপানো শীতকেও হার মানিয়েছে নির্বাচনী উত্তাপ।
ওইদিন প্রার্থী, সমর্থক ও নেতাকর্মীদের নির্ঘুম প্রচার প্রচারণায় মুখরিত গোলাপগঞ্জ উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন। প্রচারণার শেষ দিনে প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী ইশতেহার তুলে ধরেন। বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করার অঙ্গিকার দেন ভোটারদের।
তবে ভোটাররা জানিয়েছেন, তারা সৎ যোগ্য প্রার্থীকেই বাঁছাই করে তাদের মূলবান ভোট প্রয়োগ করবেন। সর্বত্র এখন আলোচনার বিষয় প্রার্থীদের মধ্যে কে হাসবেন শেষ হাসি? জানতে হলে অপেক্ষা করতে হবে ২৬ তারিখ বিকেল বেলা পর্যন্ত।
গোলাপগঞ্জ উপজেলায় ১০ ইউনিয়নে ৫৪ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী ছাড়াও সাড়ে ৪ শতাধিক সাধারণ সদস্য (পুরুষ) এবং সংরক্ষিত সাধারণ সদস্য (নারী) প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত ১০ জন, জাতীয় পার্টির ৩ জন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের একজন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের একজন, জাসদের একজন, বিদ্রোহী ৪ জন, বিএনপির (স্বতন্ত্র) ১৫ জন, জামায়াতের (স্বতন্ত্র) ৮ জন, (সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দল নয় এমন) স্বতন্ত্র ১৩ জন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচনে ভোটারদের সাথে কথা বলে ও বিভিন্ন সূত্রের ভিত্তিতে যারা শেষ মূহুর্তে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন তারা হলেন ১নং বাঘা ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান, বিএনপি নেতা ছানা মিয়া (টেলিফোন প্রতীক), আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আব্দুস সামাদ (নৌকা প্রতীক) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল কাদির বাবুল (আনারস)।
২নং গোলাপগঞ্জ সদর ইউনিয়নে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তমজ্জুল আলী (নৌকা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের (ঘোড়া)।
৩নং ফুলবাড়ী ইউনিয়নে বিএনপির ঘরানার স্বতন্ত্র প্রার্থী মামুন আহমদ রিপনের (ঘোড়া), নৌকার প্রার্থী আব্দুল হানিফ খান ও জামাতের ঘরানার প্রার্থী ইসমেইল হোসেনের মধ্যে ত্রিমুখী লড়াউয়ের আভাস পাওয়া গেছে।
৪নং লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দুই বিদ্রোহী প্রার্থী মাহতাব উদ্দিন (আনারস) ও বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম তুহিনের (মোটরসাইকেল) মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
৬নং ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান জামাত সমর্থিত এস এম আব্দুর রহিম (ঘোড়া প্রতীক) ও বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান নোমান উদ্দিন মুরাদের (অটোরিকশা) কঠিন লড়াই হবে বলে সাধারণ ভোটারদের অভিমত।
৭ নং লক্ষ্মনাবন্দ ইউনিয়নে বিএনপির ঘরানার প্রার্থী অজি মোহাম্মদ কাওছার (ঘোড়া) ও জাতীয় পার্টির স্বতন্ত্র প্রার্থী খলকুর রহমান (লাঙ্গল) মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।
৮নং ভাদেশ্বর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সেলিম আহমদ (নৌকা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম আহমদের (আনারস) মধ্যে মূল যুদ্ধ হবে।
৯নং পশ্চিম আমুড়া ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান রুহেল আহমদ (সিএনজি অটোরিকশা) ও বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী (আনারস) মোহাম্মদ নুরুল ইসলামের মধ্যে লড়াই হবে এমন ধারণা পাওয়া যায় সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে আলাপ করে।
১০নং বাদেপাশা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মোস্তাক আহমদ (নৌকা), জামাত সমর্থিত প্রার্থী৷ জাহিদ হোসেন ও বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমানের (ঘোড়া) মধ্যে ত্রিমুখী লড়াইয়ের আভাস দিয়েছেন ভোটাররা।
১১নং শরীফগঞ্জ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত বর্তমান চেয়ারম্যান এমএ মুমিত হীরা (নৌকা) ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এম কবির উদ্দিনের (ঘোড়া) মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।
এদিকে নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নির্বাচন যাতে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার শান্তিপূর্ণ ভাবে দিতে পারে এবং সব ধরনের বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে মাঠে প্রশাসনকে চার স্তরের নিরাপত্তায় ঢেলে সাজানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ হারুনূর রশীদ চৌধুরী জি ভয়েস টোয়েন্টিফোরকে জানান, উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে অবাধ নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। এ নির্বাচনে কোন কারচুপির সুযোগ নেই। ইতিমধ্যে আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে ব্রিফিং করেছি।
গোলাপগঞ্জ উপজেলা রিটার্নিং অফিসার, ইউএনও মো: গোলাম কবির বলেন, 'নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। সবকটি ভোটকেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। আশাকরছি গোলাপগঞ্জ উপজেলায় শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।