বিজ্ঞাপন
ডেস্ক রিপোর্ট : চতুর্থ ধাপের নির্বাচন শেষে হঠাৎ করেই থমকে গেছে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের চিত্র।
রোববার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত উৎসবের আমেজ থাকলেও রাত থেকে সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে। ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের বৈটিকর বাজারে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় আব্দুস সালাম (৬০) নামে একজনের মৃত্যু হওয়ায় পুলিশের করা মামলার কারণে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে বৈটিকর বাজারসহ আশপাশের গ্রামগুলো।
নিহতের ঘটনায় সোমবার রাতে গোলাপগঞ্জ থানার এসআই মহরম আলী বাদী হয়ে ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৪০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তারা হলেন- উপজেলার রফিপুর দক্ষিণ মাইজভাগ গ্রামের তোয়ারিছ আলীর ছেলে ফলিক আহমদ (৩০), রনকেলী দিঘীরপার গ্রামের সাদেক আলীর ছেলে মিরন আহমদ (২৮), ফুলবাড়ি টিকরপাড়া গ্রামের মস্তুর আলির ছেলে আব্দুর রহিম (৩৮) ও একই গ্রামের শফিক আহমদের ছেলে কামরান।
জানা যায়, নিহত আব্দুস সালাম উপজেলার লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়নের দক্ষিণভাগ রামপা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বৈটিকর বাজারে সাইকেল ও রিকশা মেরামতের কাজ করতেন।
পুলিশের করা মামলার কারণেই গ্রেফতার আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছে বৈটিকর বাজারের আশপাশের গ্রামের পুরুষরা। এতে করে প্রায় পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে গ্রামগুলো।
সরেজমিনে মঙ্গলবার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের বৈটিকর বাজারে দেখা যায়, দোকানপাট সব বন্ধ রয়েছে। রাস্তার মধ্যে পড়ে থাকতে দেখা গেছে ভাঙা গ্লাস, ইটপাটকেল, কংক্রিট- যা দেখে সহজেই বোঝা যায় ওইদিনের সহিংসতার পরিমাণ।
বৈটিকর বাজারস্থ ফুলবাড়ি আজিরিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসা এবার ইউপি নির্বাচনের কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। কেন্দ্রের আশপাশের এলাকার পরিবেশ থমথমে নিঃস্তব্ধ। অপরিচিত মানুষ দেখলে ভয়ে সেখান থেকে সরে যাচ্ছেন। ফুলবাড়ির টিকরপাড়া, দক্ষিণ পাড়া, উত্তরপাড়া, হাজিপুর গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, কিছু শিশু, নারী আর বৃদ্ধ ছাড়া পুরো গ্রামই রয়েছে পুরুষশূন্য অবস্থায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বৃদ্ধ বলেন, শান্ত প্রকৃতির একটি গ্রাম ছিল আমাদের। কিন্তু ভোটের দিন রাতে বাজারে কেন্দ্রের ফলাফল নিয়ে অসন্তোষ দেখা দেয়। এরপর মাইকে ঘোষণা করে কি থেকে কি হয়ে গেল। আমরা সংঘাত চাইনি। তবুও এই নির্বাচন আমাদের জন্য দুঃস্বপ্নের মতো এসেছে।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালের যুদ্ধকালীন নীরবতা যেন আবার আমাদের গ্রামে ভর করেছে। নিঃস্তব্ধ দুটি সকাল কাটাতে হয়েছে আমাদের। ঘরের চা পানের জন্য চিনি নেই। ঘরের বাজার সদাই নেই। মামলা হওয়ার পর থেকে সম্পূর্ণ গ্রাম ভয়ে পুরুষশূন্য হয়ে গেছে। নারীরাও ভয় পাচ্ছেন পুরুষশুন্যতায়। চোর ডাকাতদের আতঙ্ক ও ভর করেছে তাদের মনে।
সালমা বেগম (ছদ্মনাম) নামে এক নারী বলেন, বাজারের ঘটনায় আজ ভয়ে বাড়ির মানুষ বাড়িতে থাকছে না। কখন পুলিশ আসে আর কাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় বলা যায় না। বাড়িতে পুরুষ মানুষ নেই। ঘরের চাল-চুলা বন্ধ। খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে।
টিকরপাড়ার বাসিন্দা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ভোটের দিন সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হওয়ায় এলাকায় গ্রেফতার আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। পুরুষরা সবাই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এদিকে পুলিশও টহল দিচ্ছে, তল্লাশি করছে। তবে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ আলোচনা করে থানার ওসিকে জানিয়েছেন নিরপরাধ কাউকে যাতে হয়রানি না করা হয়। প্রকৃত অপরাধীরা যেন আইনের আওতায় আসে সেজন্য অনুরোধও করা হয়েছে।
গোলাপগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ চৌধুরী বলেন, এই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করেছে। চারজনকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রামে আতঙ্ক থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না। পুলিশ শুধু দোষীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
রোববার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত উৎসবের আমেজ থাকলেও রাত থেকে সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে। ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের বৈটিকর বাজারে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় আব্দুস সালাম (৬০) নামে একজনের মৃত্যু হওয়ায় পুলিশের করা মামলার কারণে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে বৈটিকর বাজারসহ আশপাশের গ্রামগুলো।
নিহতের ঘটনায় সোমবার রাতে গোলাপগঞ্জ থানার এসআই মহরম আলী বাদী হয়ে ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৪০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তারা হলেন- উপজেলার রফিপুর দক্ষিণ মাইজভাগ গ্রামের তোয়ারিছ আলীর ছেলে ফলিক আহমদ (৩০), রনকেলী দিঘীরপার গ্রামের সাদেক আলীর ছেলে মিরন আহমদ (২৮), ফুলবাড়ি টিকরপাড়া গ্রামের মস্তুর আলির ছেলে আব্দুর রহিম (৩৮) ও একই গ্রামের শফিক আহমদের ছেলে কামরান।
জানা যায়, নিহত আব্দুস সালাম উপজেলার লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়নের দক্ষিণভাগ রামপা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বৈটিকর বাজারে সাইকেল ও রিকশা মেরামতের কাজ করতেন।
পুলিশের করা মামলার কারণেই গ্রেফতার আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছে বৈটিকর বাজারের আশপাশের গ্রামের পুরুষরা। এতে করে প্রায় পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে গ্রামগুলো।
সরেজমিনে মঙ্গলবার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের বৈটিকর বাজারে দেখা যায়, দোকানপাট সব বন্ধ রয়েছে। রাস্তার মধ্যে পড়ে থাকতে দেখা গেছে ভাঙা গ্লাস, ইটপাটকেল, কংক্রিট- যা দেখে সহজেই বোঝা যায় ওইদিনের সহিংসতার পরিমাণ।
বৈটিকর বাজারস্থ ফুলবাড়ি আজিরিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসা এবার ইউপি নির্বাচনের কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। কেন্দ্রের আশপাশের এলাকার পরিবেশ থমথমে নিঃস্তব্ধ। অপরিচিত মানুষ দেখলে ভয়ে সেখান থেকে সরে যাচ্ছেন। ফুলবাড়ির টিকরপাড়া, দক্ষিণ পাড়া, উত্তরপাড়া, হাজিপুর গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, কিছু শিশু, নারী আর বৃদ্ধ ছাড়া পুরো গ্রামই রয়েছে পুরুষশূন্য অবস্থায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বৃদ্ধ বলেন, শান্ত প্রকৃতির একটি গ্রাম ছিল আমাদের। কিন্তু ভোটের দিন রাতে বাজারে কেন্দ্রের ফলাফল নিয়ে অসন্তোষ দেখা দেয়। এরপর মাইকে ঘোষণা করে কি থেকে কি হয়ে গেল। আমরা সংঘাত চাইনি। তবুও এই নির্বাচন আমাদের জন্য দুঃস্বপ্নের মতো এসেছে।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালের যুদ্ধকালীন নীরবতা যেন আবার আমাদের গ্রামে ভর করেছে। নিঃস্তব্ধ দুটি সকাল কাটাতে হয়েছে আমাদের। ঘরের চা পানের জন্য চিনি নেই। ঘরের বাজার সদাই নেই। মামলা হওয়ার পর থেকে সম্পূর্ণ গ্রাম ভয়ে পুরুষশূন্য হয়ে গেছে। নারীরাও ভয় পাচ্ছেন পুরুষশুন্যতায়। চোর ডাকাতদের আতঙ্ক ও ভর করেছে তাদের মনে।
সালমা বেগম (ছদ্মনাম) নামে এক নারী বলেন, বাজারের ঘটনায় আজ ভয়ে বাড়ির মানুষ বাড়িতে থাকছে না। কখন পুলিশ আসে আর কাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় বলা যায় না। বাড়িতে পুরুষ মানুষ নেই। ঘরের চাল-চুলা বন্ধ। খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে।
টিকরপাড়ার বাসিন্দা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ভোটের দিন সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হওয়ায় এলাকায় গ্রেফতার আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। পুরুষরা সবাই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এদিকে পুলিশও টহল দিচ্ছে, তল্লাশি করছে। তবে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ আলোচনা করে থানার ওসিকে জানিয়েছেন নিরপরাধ কাউকে যাতে হয়রানি না করা হয়। প্রকৃত অপরাধীরা যেন আইনের আওতায় আসে সেজন্য অনুরোধও করা হয়েছে।
গোলাপগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ চৌধুরী বলেন, এই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করেছে। চারজনকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রামে আতঙ্ক থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না। পুলিশ শুধু দোষীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।