বিজ্ঞাপন
ডেস্ক রিপোর্ট : সিলেটে বর্তমানে কোনোও ‘এক্সেল লোড কন্ট্রোলার সেন্টার’ নেই। ফলে যানবাহনে ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি পণ্য পরিবহন করা হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সড়ক-মহাসড়ক। ভাঙাচোরা সড়কের সংস্কারে ব্যয় হয় বিপুল অঙ্কের টাকা। এই পরিস্থিতিতে সিলেটের পাঁচটি সড়ক-মহাসড়কে এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর (সওজ)। এ পাঁচটি নিয়ন্ত্রণকেন্দ্রের কাজ শেষ হলে সড়ক-মহাসড়কে ট্রাক কিংবা অন্য কোনো যানবাহন দিয়ে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত পণ্য পরিবহন করা যাবে না। অতিরিক্ত পণ্য পরিবহন করলে গুনতে হবে জরিমানা।
জানা গেছে, গুরুত্বপূর্ণ সড়ক-মহাসড়কে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সারাদেশে ২৮টি এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র স্থাপনের প্রকল্প গ্রহণ করে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর (সওজ)। প্রায় আড়াই বছর আগে এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিলের নির্বাহী কমিটি (একনেক) প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়। প্রকল্পটির মেয়াদ আছে আগামী বছরের জুন অবধি। এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬৩০ কোটি ২৮ লাখ টাকা।
তবে প্রকল্প গ্রহণের পর সঠিক সময়ে কাজ শুরু করতে পারেনি সওজ। জমি অধিগ্রহণে জটিলতা ও করোনাভাইরাসের ধাক্কায় পিছিয়ে যায় প্রকল্প শুরুর বিষয়টি। গেল জুন মাসে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এই প্রকল্পের জন্য ঠিকাদার ও পরামর্শদাতা নিয়োগের বিষয়টি অনুমোদন দেয়। এরপরই মূলত কাজে কিছুটা গতি পায়।
সওজ সিলেট কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, সিলেট-ভোলাগঞ্জ সড়ক, বিমানবন্দর-বাদাঘাট সড়ক, সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক, সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক এবং শেওলা-সুতারকান্দি সড়কে পাঁচটি এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র বসানো হবে। এর মধ্যে সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক বাদে অন্য চারটি সড়ক-মহাসড়কে এই নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র বসাতে ব্যয় হবে ৬৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে যে নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র বসানো হবে, সেটি মূলত ঢাকা-সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক চার লেনে (দুটি সার্ভিস লেনসহ ছয় লেন) উন্নীতকরণ প্রকল্পে অন্তভূর্ক্ত করা হয়েছে। তবে এই নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র স্থাপনেও ১৫ কোটি টাকার কম ব্যয় হবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ হিসেবে পাঁচটি এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র স্থাপনে ৮০ কোটি টাকারও বেশি ব্যয় হবে।
সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে জানা গেছে, বর্তমানে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের লামাকাজিতে সিলেটের প্রথম এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র স্থাপনের কাজ চলমান। এটিতে ব্যয় হচ্ছে ১৫ কোটি ১২ লাখ টাকা।
সিলেট-ভোলাগঞ্জ সড়কে ১৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র বসানোর কাজও শুরু হয়েছে। পরবর্তীতে শেওলা-সুতারকান্দি সড়কে ১৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র বসানো হবে। এছাড়া বিমানবন্দর-বাদাঘাট সড়কে এই নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র বসাতে ১৮ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
পাঁচটি এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র বসানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান সিলেটভিউকে বলেন, ‘বর্তমানে সিলেটে সড়ক-মহাসড়কে কোনো এক্সেল লোড তথা অতিরিক্ত ধারণক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করার কোনো কেন্দ্র নেই। ফলে যানবাহনে দ্বিগুণেরও বেশি পণ্য পরিবহন করা হয়। এতে সড়কের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ছে, সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, স্থায়ীত্ব কমে যাচ্ছে। সড়ক সংস্কারে ব্যয় হচ্ছে কোটি কোটি টাকা।’
তিনি বলেন, ‘গৃহিত প্রকল্পের আওতায় এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র বসানোর কাজ শেষ হলে সড়ক-মহাসড়কে অতিরিক্ত পণ্য পরিবহন বন্ধ হবে। কেউ ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত পণ্য পরিবহন করলে সেটা নিয়ন্ত্রণকেন্দ্রে ধরা পড়বে। তখন তাকে নির্দিষ্ট জরিমানার মুখে পড়তে হবে।
সংবাদ সৌজন্যে : সিলেট ভিউ