বিজ্ঞাপন
জি ভয়েস ডেস্ক: ‘ও সুমিরে তোমায় ছাড়া ভালো লাগে না। তুমি যে আমারই, শুধু যে আমারই চিরদিন কাছে থাক না। ইতি তোমার স্বামী মজিবর রহমান।’ স্বামী-স্ত্রীর ছবিসহ এমন একটি ফেস্টুন ঝুলছে নরসিংদী সদর উপজেলার মানিক রোড এলাকায়। একই রকম আরও কয়েকটি ফেস্টুন দেখা গেছে নরসিংদী পৌর এলাকার বিভিন্ন মোড়ে ও গাছে।
স্ত্রীকে ফিরে পেতে এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন মজিবর রহমান নামে এক স্বামী। পেশায় অটোচালক মজিবর রহমানের বাড়ি নরসিংদী পৌর শহরের ইউএমসি জুট মিল এলাকায়। স্ত্রী সুমি বেগম রায়পুরা উপজেলার মরজাল ইউনিয়নের কুমারটেক গ্রামের নজরুল ইসলামের মেয়ে।
মজিবর রহমানের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের শুরুর দিকে মোবাইল ফোনের রং নম্বরের কল থেকে পরিচয় হয় সুমি বেগমের সঙ্গে। পরিচয় থেকে প্রেম এবং এক বছরের মাথায় সেই সম্পর্ক গড়ায় বিয়েতে। অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে মা এবং স্ত্রীকে নিয়ে ভালোই চলছিল মজিবরের সংসার। এর মধ্যে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে শ্যালিকা তার বাড়িতে বেড়াতে আসে।
পরে বাবার বাড়ি ২-৩ দিন থাকবে বলে সুমি বোনের সঙ্গে রায়পুরার মরজালের কুমারটেক গ্রামে যায়। সেখান থেকে আর ফেরেনি সুমি বেগম। বেশ কিছু দিন পর শ্বশুর বাড়িতে যোগাযোগ করে মজিবর। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। স্ত্রী চলে যাওয়ার মাসখানেক পর স্ত্রীকে ফিরে পেতে শ্বশুরবাড়ির এলাকাসহ নরসিংদী ও আশপাশে ২৩টি ফেস্টুন লাগায় মজিবর।
মজিবর রহমান বলেন, ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম। তিন বছর সংসার করেছি। প্রথমে জানতাম সুমির বাবা-মা কেউ নেই। বিয়ের ছয় মাস পরে জানতে পারি, তার বাবা-মা আছে। গরিব বলে বলেনি এতদিন। সেখানেও আমার কোনো সমস্যা ছিল না। আমরা খুব ভালোই ছিলাম। সমস্যা হয় আমার শ্যালিকার তালাকের পর। তালাকপ্রাপ্ত শ্যালিকার বিয়ের খরচাসহ বিভিন্ন কারণে আমার শ্বশুর ঋণগ্রস্ত পড়ে। আমার বউকে সহজ-সরল পেয়ে শ্যালিকা আর শাশুড়ি ফুসলিয়ে গার্মেন্টসে কাজে দেয়।
তিনি আরও বলেন, সুমির সঙ্গে আমার প্রতিনিয়ত যোগাযোগ হয়। কিন্তু কই আছে, কী কাজ করে কিছুই বলে না। আমি দেখা করতে চাইলেও দেখা করতে চায় না। আমার শ্যালিকা আর শাশুড়ির জন্যই আমার বউ আমার কাছে আসতে পারছে না। এই বিষয়ে মজিবরের স্ত্রী সুমির মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
মজিবর রহমানের মা রাশিদা বেগম বলেন, আমরা বউকে কোনো কষ্ট দেইনি। বউটাও ভালো ছিল। কিন্তু সমস্যাটা হলো সুমির পরিবারের।
মরজাল ইউপি চেয়ারম্যান সানজিদা সুলতানা বলেন, কামারটেক আমার ইউনিয়নে পড়েছে। সেই গ্রামের নজরুল ইসলামের মেয়ে সুমি বেগমকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। তবে আমি বিষয়টির খোঁজ নেবো। কীভাবে কী করা যায়, কী সমস্যা তাদের তা খুঁজে বের করে সমাধান করার চেষ্টা করব।