বিজ্ঞাপন
জি ভয়েস ডেস্ক: টিউশনির জন্য নারীর আমন্ত্রণে গিয়ে ফেঁসে গেলেন অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষক। শেষে আরেক নারীর সঙ্গে তাকে অর্ধনগ্ন করে আপত্তিকর ছবি তুলে জিম্মি করেছিল প্রতারক চক্র। সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ও করেছিল।
কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। অভিযোগ পেয়ে সোমবার (৪ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে নগরীর অলোকার মোড় এলাকা থেকে চক্রের তিন সদস্যকে ধরেছে রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার সুলতানাবাদ এলাকার আমিনুর রহমান বাবুর ছেলে আতিকুর রহমান বাপ্পি (৩২), পঞ্চবটি খড়বোনা নদীর ধারের রানার স্ত্রী কোহিনুর বেগম (৪৩) ও পবা থানার চৌবাড়ীয়া এলাকার ফরিদ হোসেনের স্ত্রী মোছা নার্গিস নাহার হেলেনা (৫২)।
তাদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া ৬ হাজার টাকা এবং প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৩টি মোবাইল ফোন জব্দ করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) দুপুরের দিকে নগর পুলিশ সদর দফতরে তাকে সাংবাদিকদের মাঝে হাজির করা হয়। সেখানে নগর পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, অবসরপ্রাপ্ত ওই শিক্ষক পাবনার সুজা নগর এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। তবে রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার কাদিরগঞ্জ এলাকায় বসবাস করেন।
ব্যক্তিগত কাজে তিনি রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে গেলে সেখানে অভিযুক্ত নার্গিস নাহার হেলেনার সঙ্গে আলাপ হয়। সেই সূত্র ধরে ওই শিক্ষককে হেলেনা তার বাসায় এসে নাতিসহ ৪-৫ শিক্ষার্থীকে ইংরেজি বিষয়ে টিউশনি করার জন্য অনুরোধ করেন। সরল বিশ্বাসে ওই শিক্ষক রাজি হয়ে যান। গত ২ অক্টোবর অভিযুক্ত হেলেনা ফোন করে ওই শিক্ষককে নগরীর শালবাগান এলাকায় তার বাসায় আসতে বলেন।
সেখানে ওই শিক্ষক পৌঁছালে তাকে কৌশলে অপহরণ করে ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে আরেক অভিযুক্ত কোহিনুরের সঙ্গে জোরপূর্বক অর্ধনগ্ন আপত্তিকর ছবি তোলেন। এরপর ওই শিক্ষকের কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে চক্রটি। টাকা না পেলে আপত্তিকর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ারও হুমকি দেয়া হয়। ওই শিক্ষক বিকাশে ১৮ হাজার ২০০ টাকা দিয়ে কোনো রকমে জিম্মি দশা থেকে মুক্তি পান।
সেখান থেকেই সোজা নগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে নালিশ করেন ওই শিক্ষক। এরপর অভিযুক্তদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হয়েছে। তবে পলাতক রয়েছেন আরেক অভিযুক্ত। এই চারজনের নামেই মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক।
নগর পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃতরা পুলিশের জেরায় স্বীকার করেছেন তারা বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার লোকজনের সঙ্গে নানান কৌশলে ভাব জমিয়ে প্রলোভন দেখিয়ে ফাঁদে ফেলেন।
এরপর আটকে রেখে চক্রের নারী সদস্যদের সঙ্গে আপত্তিকর ছবি তোলেন। সেই ছবি ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের অর্থ আদায় করেন। দীর্ঘদিন ধরেই এ অপকর্ম চালিয়ে আসছেন অভিযুক্তরা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।