Advertisement (Custom)

বিজ্ঞাপন
প্রকাশিত: সোমবার, ১১ অক্টোবর, ২০২১
সর্বশেষ সংষ্করণ 2021-10-11T12:49:10Z
সিলেট

'আ'লীগেরও বাপ' নৌকার মনোনয়ন পাওয়া সিলেটের সেই শিবির নেতা

বিজ্ঞাপন

জি ভয়েস ডেস্ক: ২০১৬ সালে তিনি ছিলেন উপজেলা ছাত্রশিবিরের নেতা। ছিলেন উপজেলা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক। তিন বছরের ব্যবধানে হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা, আর পাঁচ বছর যেতে না যেতেই পেয়েছেন ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন।

আর তার এই মনোনয়ন পাওয়ার পরপরই উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। আর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফতাব আলী কালা মিয়া তো তাকে আওয়ামীলীগের বাপ বলেই আখ্যা দিয়েছেন।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তিনি জামাত করতেন তো কি হয়েছে? এখন সে আওয়ামী লীগেরও বাপ। অনেক বড় আওয়ামী লীগ; আপনার আমার কথায়তো তো তার মনোনয়ন চলে যাবে না। তাঁকে শেখ হাসিনা মনোনয়ন দিয়েছেন। সুতরাং সে অনেক বড় আওয়ামী লীগার। এতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের ভূমিকা কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের আর কি ভূমিকা থাকতে পারে। আমরাতো মনোনয়ন দিই না। আর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আমজাদ এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতেই রাজি হন নি।

এর আগে গত শনিবার আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। সিলেট জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের মধ্যে দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়নে মনোনয়ন পেয়েছেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন ইমাদ। আর এ নিয়ে বিব্রত সিলেট আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মীরা। প্রকাশ্যে কিছু না বললেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী।

জানা যায়, ইকবাল হোসেন ইমাদ ২০০৬-০৭ সেশনে কোম্পানীগঞ্জ ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার পরও সক্রিয় ছিলেন রাজপথে। এরপর কিছুদিনের জন্য যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান ইমাদ। উপজেলার রাজনৈতিক পরিস্থিতি কিছুটা নমনীয় হলে দেশে ফিরে আসেন।

দেশে রাজপথে শিবিরের রাজনীতিতে প্রকাশ্যে না থাকলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিতই সরব ছিলেন এই সাবেক শিবির নেতা। ২০১৬ সাল পর্যন্ত জামায়াত- শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও হঠাৎ করেই ২০১৮ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার হাত ধরে যোগ দেন আওয়ামী লীগে। এরপর থেকেই মূলত ইউনিয়নে নৌকার মনোয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন।

২০১৯ সালে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটিতে সদস্যপদও লাভ করেন। মূলত অঢেল টাকার কারণেই উপজেলা আওয়ামী লীগের অনেক নেতার সাথে সখ্য গড়ে ওঠে তাঁর। এরই ধারাবাহিকতায় পেয়ে যান নৌকার মনোনয়ন।

সিলেট বিভাগের ইউপি মনোনয়নের তালিকা প্রকাশ হবার আগে সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম তুষার, যুগ্ম সম্পাদক গোলাম হাছান সাজন, রেজাউল ইসলাম রেজাসহ সাবেক ছাত্রনেতারা তাদের ফেসবুক স্ট্যাটাসে জেলা ও কেন্দ্রীয় আওামী লীগ নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষন করেন। তবে নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও সেটা কারো নজরে আসে নি, কিংবা কেউ তা আমলে নেন নি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খাঁন বলেন, আমিও ব্যাপারটি শুনেছি, কিন্তু যখন মনোনয়নের জন্য তার আবেদন প্রক্রিয়াধীন ছিল তখন পর্যন্ত এমন কোনো অভিযোগ পাইনি। মনোনয়ন প্রকাশ হবার পর অপর প্রার্থীর কাছ থেকে আমরা এমন অভিযোগ পাই, তবে তিনি কোনো তথ্য প্রমাণ হাজির করতে পারেন নি।

তিনি আরও বলেন, ইমাদ যখন আওয়ামী লীগের কমিটিতে এলো তখন কোনো অভিযোগ ওঠেনি। তাছাড়া প্রার্থী বাছাই নিয়ে বৈঠকে তিনি তৃণমূলের সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন। তারপরও আমরা যাচাই বাছাই করে দেখছি।

আর এই অভিযোগ যার বিরুদ্ধে সেই ইকবাল হোসেন ইমাদকে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বিজ্ঞাপন

জনপ্রিয় সংবাদ