বিজ্ঞাপন
জি ভয়েস ডেস্ক: সিলেটের মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজের ছাত্রাবাস খোলার নয় দিনেও অর্ধেকের বেশি সিট খালি পড়ে আছে। একটানা প্রায় দেড় বছর পর ১ অক্টোবর ছাত্রাবাস খোলা হয়।
ওই দিন মাত্র চারজন ছাত্র ছাত্রাবাসে উঠেছিলেন। শনিবার পর্যন্ত১২৫ জন সিট বরাদ্দ নিয়েছেন। খালি পড়ে আছে ২১৮টি সিট। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ছাত্রাবাস তত্ত্বাবধায়কের দপ্তর।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অন্যান্য সময় খোলার দিনই ছাত্রাবাসের সব সিট বরাদ্দ নিতে রীতিমতো কাড়াকাড়ি চলত।
এ বিষয়ে ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ক জামাল উদ্দিন বলেন, ছাত্রাবাসে মোট সিট আছে ৩৪৩টি। কলেজের সশরীর পাঠদান শুরু না হওয়ায় অনেক আবাসিক শিক্ষার্থী ছাত্রাবাসে উঠছেন না। তা ছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, করোনা পরীক্ষার নমুনা নেগেটিভ থাকার বাধ্যবাধকতায় ছাত্রাবাসে বসবাস থেকে বিরত থাকছেন। কলেজে সশরীর পাঠদান স্বাভাবিক হলে ছাত্রাবাসে আবাসিক শিক্ষার্থী পরিপূর্ণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, করোনা পরিস্থিতিতে গত বছরের ১৭ মার্চ ছাত্রাবাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। বন্ধ থাকার ছয় মাসের মাথায় ছাত্রাবাসের একটি কক্ষ দখল করে ছাত্রলীগ। গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে ছাত্রাবাসের পাশের সড়কে বেড়াতে আসা এক তরুণীকে তুলে নিয়ে সেখানে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দেশে-বিদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হলে একে একে গ্রেপ্তার হন ছাত্রলীগের ছয় কর্মী। ছাত্রাবাসের বাইরে থেকে সহযোগিতা করার অভিযোগে ছাত্রলীগের আরও দুই কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। দখল করা একটি কক্ষ থেকে পাইপগানসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তার আটজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে তরুণীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেন। তাদের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। মামলাটি এখনো বিচারাধীন। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কেবল এক শিক্ষার্থী ছাত্রাবাসের বাসিন্দা ছিলেন। তার ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়েছে।
এ ঘটনার পর ছাত্রাবাস খোলার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কলেজ প্রশাসন সূত্র। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিশেষ নজরদারির জন্য সম্প্রতি কলেজের সীমানাপ্রাচীরের ভেতর মহানগর পুলিশের একটি ‘কনটেইনার বক্স’ (ফাঁড়ি) স্থাপন করা হয়েছে।
১ অক্টোবর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশে ছাত্রাবাস খুলে দেওয়া হয়। ছাত্রাবাস খোলার প্রথম দিন চারজন আবাসিক শিক্ষার্থী সিট বরাদ্দ পান। এরপর করোনার নমুনা পরীক্ষা দিয়ে নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়ে রোববার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ১০১ জন ছাত্রাবাসে সিট বরাদ্দ পেয়েছেন।
করোনা পরিস্থিতিতে ছাত্রাবাস ফি কমানো হয়েছে উল্লেখ করে এমসি কলেজের অধ্যক্ষ সালেহ আহমদ বলেন, আবাসিক শিক্ষার্থীরা ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ৫৪৪ টাকা ফি দিয়ে ছাত্রাবাসে থাকতে পারবেন। এ ছাড়া ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের জন্য ৩ হাজার ৫০০ টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।
সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আবাসিক শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে অধ্যক্ষ আরও বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানা ও বহিরাগত ব্যক্তিদের প্রবেশ বন্ধে কোনো ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। এ জন্য ছাত্রাবাসে সিট বরাদ্দ কম হলেও সব নির্দেশনা সম্পূর্ণভাবে মানা হচ্ছে।