বিজ্ঞাপন
ফাহিম আহমদ : দেড় বছর পর আগামী ১২ সেপ্টেম্বর খুলছে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় কয়েক দফায় বাড়ানো হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি। সর্বশেষ ঘোষণায় এ ছুটি ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
সারাদেশের ন্যায় গোলাপগঞ্জেও খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ দেড় বছর পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলার ঘোষণায় আনন্দ দেখা দিয়েছে উপজেলার ৪০ হাজার শিক্ষার্থী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবকদের মাঝে। এতদিন পর বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পদচারণনায় মুখরিত হয়ে উঠবে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। যেন প্রাণ ফিরবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, এখন পর্যন্ত উপজেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৯০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। স্কুল খুলার আগে বাকি ১০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানা যায়।
উপজেলার বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বিরামহীন কাজ চলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। এতদিন বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রাঙ্গণে গর্জে উঠেছে সবুজ ঘাস। লম্বা ঘাসের মধ্যে সাপ-বিচ্ছুর আনাগোনা থাকতে পারে। এজন্য লম্বা ঘাস গুলো কেটে ছাঁটাই করা হচ্ছে। পরিস্কার করা হচ্ছে এতোদিনে ধুলো-ময়লা জমে থাকে শ্রেণি কক্ষগুলো। ভাঙাচোরা ডেস্ক-বেঞ্চ গুলো মেরামত করা হচ্ছে। অকেজো হয়ে পড়া বিদুৎতের লাইন মেরামত করা হচ্ছে। নষ্ট হয়ে যাওয়া প্রতিটি শ্রেনী কক্ষের ফ্যানগুলো মেরামত করা হচ্ছে। এক কথায় বলতে গেলে, আগের রুপে ফিরছে উপজেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলা নিয়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা হলে তারা বলেন, 'এতদিন পরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে। খুবই আনন্দ লাগছে। আবারো প্রিয় প্রতিষ্ঠানে যেতে পারব। বন্ধু-বান্ধবদের সাথে দেখা হবে। প্রিয় ক্লাসরুমে বসে প্রিয় শিক্ষকদের ক্লাস নেব। স্কুল প্রাঙ্গণে ক্লাস শেষে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেব। মনে হলে খুবই খুশি লাগে।'
ফুলবাড়ি ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রাহেলা আক্তার বলেন, ইতিমধ্যে আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলার প্রস্তুতি প্রায় শেষের দিকে। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে আমরা নজর রাখব।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার দেওয়ান নাজমুল আলম বলেন, উপজেলার ১৮০ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৭২ টি কিন্ডারগার্ডেন স্কুলে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা চলছে। স্কুল খুলার আগেই প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। কোন কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত তেমন কোন খবর আসেনি আমাদের কাছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলার পর বুঝা যাবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার অভিজিৎ পাল বলেন, আমাদের প্রস্তুতি ৯০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী টিকা গ্রহণ করেছে। তবে কতজন শিক্ষার্থী টিকা গ্রহণ করেছে তার হিসাব নেই। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে কঠোর নজরদারি দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে স্কুল প্রধানদের নিকট আমরা চিঠি দিয়েছি।
তিনি বলেন, এতদিন পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে শিক্ষাখাতে কিছুটা ক্ষতি হয়েছে অবশ্যই। আর শিক্ষার্থীদের ঝড়ে পরার বিষয়ে এখনই বলা যাচ্ছে না। স্কুল খুলার পর দেখা যাবে। যাতে শিক্ষার্থীরা ঝড়ে না পরে সে ব্যাপারেও আমরা নজর রাখব।