Advertisement (Custom)

বিজ্ঞাপন
প্রকাশিত: বুধবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২১
সর্বশেষ সংষ্করণ 2021-08-31T20:17:29Z
হবিগঞ্জ

হবিগঞ্জে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৪৪ পরিবারের পানির সাথে বসবাস !

বিজ্ঞাপন

ডেস্ক রিপোর্ট : জীবনের অর্ধেক সময় পার করেছি অন্যের বাড়িতে থেকে। এখন শেষ বয়সে পেয়েছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের ঘর। মাশাআল্লাহ ভালোই কাটছিল এতদিন। কিন্তু গত একসপ্তাহ ধরে কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি আব্যাহত থাকায় আমাদের ঘরে পানি উঠেছে। ঘর পেয়ে ভেবেছিলাম বাকি জীবন শান্তিতে কাটাতে পারবো। কিন্তু এখন মনে হয় আবারও পরের বাড়ি যেতে হবে। এখন এমন অবস্থা হয়েছে যে, আর এক ফুট পানি বাড়লেই ঘরে ডুকবে পানি। কথাগুলো বলছিলেন সিরাজ মিয়া (৫৫) নামের এক বৃদ্ধ।

সেলিনা বেগম নামের আরও এক গৃহবধু বলেন, রান্না করার চুলা ডুবে গেছে, টয়লেট ডুবে গেছে। অনেক কষ্ট করে রান্না-বান্না করতে হচ্ছে। পানির কারণে আমরা কত কষ্ট করে আছি আমরাই জানি। আমাদের কষ্ট কে বুঝবে?

আমেনা বেগম বলেন, এ বছর পানি খুব কম হইছে। অন্য বছরের তুলনায় অর্ধেক পানিও হইছে না। যদি অন্য বছরের মতো পানি হয় তাহলে আমাদের ঘরে কোমর পানি থাকবে।

তিনি বলেন, গতকাল ইউএনও স্যার আসছিলেন। তিনি বলে গেছেন পানি আরও বাড়লে আমাদের অন্য জায়গায় নিয়ে যাবেন।

রহিমা খাতুন নামের আরও একজন বলেন, ঘর পেয়েছি কিন্তু এঘরে উঠে এখন মহা বিপদে পরেছি। উপজেলা প্রশাসন কুশিয়ারা নদীর তীরে অত্যন্ত নিচু জায়গায় ঘর নির্মাণ করেছে। যে কারণে অল্প পানিতেই ঘরে পানি ডুকে গেছে। এখন শিশু সন্তান নিয়ে আছি বিপাকে। কখন যানি পানিতে পরে যায় সারা দিন বাচ্চাদের পেচনে লেগে থাকতে হয়।

সিরাজ মিয়া, সেলিনা বেগম আমেনা বেগম ও রহিমা খাতুনের যে গল্পগুলো শুনেছেন তারা হবিগঞ্জের ভাটি অঞ্চল আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছেও এলাকার প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা। শুধু এই ক'জনই নয়, এ প্রকল্পে বাস করছেন ৪৪টি পরিবার। সবার বক্তব্যই এমন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস সুত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে প্রথম ধাপে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছেও আশ্রয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়। ওই সময় ৫১টি ঘরের মধ্যে ৪৪টি ঘর হস্তান্তর করা হয়। তবে তালিকা জটিলতায় ৭টি ঘর এখনও হস্তান্তর করা হয়নি।

ঘরে পানি উঠার কথা অস্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেছেন, এগুলো বৃষ্টির পানি, সামান্য নালা করে দিলেই পানি নেমে যাবে।

সম্প্রতি কুশিয়ারা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পানি উঠে যায় কাকাইলছেও আশ্রয়ন প্রকল্পের ভেতরে। এতে পানিবন্দি হয়ে পরেছেন সেখানে বাস করা লোকজন। বেশ কয়েকটি ঘরে পানি উঠে গেছে। এছাড়া উঠানে অন্তত হাঁটু পানির উপরে রয়েছে। এতে সীমাহীন ভুগান্তিতে পরেছেন বাসিন্দারা। রান্নাবান্না করতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী বলেন, যখন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয় তখন আমরা যারা কমিটিতে ছিলাম বাধা দিয়েছি। আমরা বলেছিলাম এখানে পানি উঠে যাবে। কিন্তু তৎকালিন ইউএনও-এসিল্যান্ড সাহেব এই জায়গাটিকে বেস্ট মনে করেছেন। এছাড়া তখন আর কোন সরকারি খাস জায়গা না পাওয়ায় এখানেই ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়।

তিনি বলেন, যদি পানি আরও বাড়ে তাহলে তাদের সড়িয়ে নেয়া হবে। এছাড়া পানি কমার পর ওই জায়গায় মাটি ফেলে উচু করার হবে। সাথে সাথে ঘরগুলোকেও উঁচু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

এ বিষয়ে আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুলতানা সালেহা সুমী বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এসেছি। সেখানে কোন সমস্যা নেই। সামান্য বৃষ্টির পানি জমেছে। নালা করে দিলেই পানি চলে যাবে। এছাড়া কোন ঘরেই পানি উঠেনি।

তিনি বলেন, আজ আমরা সেখানের ৪৪টা পরিবারে ১০ কেজি করে চাল দিয়ে আসছি। তবে পানি বাড়লে বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে আমাদের সম্পুর্ণ ব্যবস্থা আছে।

তথ্য সূত্রে : সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর 
বিজ্ঞাপন

জনপ্রিয় সংবাদ