বিজ্ঞাপন
ডেস্ক রিপোর্ট : সিলেট নগরীর বাগবাড়িস্থ ছোটমনি নিবাসের দুই মাস ১১ দিন বয়সী শিশু নাবিল আহমদ। গত ২২ জুলাই রাতে কান্নাকাটি শুরু করে শিমু নাবিল। এতে বিরক্ত হন শিশুদের দেখভালের দায়িত্বে থাকা আয়া সুলতানা ফেরদৌসী সিদ্দিকা। এক পর্যায়ে তাকে বিছানা থেকে তুলে ছুঁড়ে ফেলে দেন সুলতানা। এ সময় বিছানার স্টিলের রেলিংয়ে বাড়ি খেয়ে মাটিতে পড়ে যায় শিশুটি। প্রচণ্ড আঘাতে তৎক্ষণাৎ জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তখন মুখে বালিশ চেপে শ্বাসরোধ করে শিশুটির মৃত্যু নিশ্চিত করেন সুলতানা। এরপর আলামত লুকানোর চেষ্টা করেন তিনি। তাঁকে সহযোগিতার করেন ছোটমনি নিবাসের কয়েকজন কর্মকর্তা–কর্মচারী।
ছোটমনি নিবাসের সিসি ক্যামেরায় শিশু নাবিল হত্যার পুরো ঘটনাটি রেকর্ড হয়। এই রেকর্ডের ভিত্তিতে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সুলতানা ফেরদৌসীকে গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় গত ২৪ জুলাই কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করে সিলেট সমাজসেবা কার্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে এ মামলা দায়েরের তদন্ত করতে পুলিশ ছোটমনি নিবাসে গেলে বেরিয়ে আসে খুনের রহস্য। কক্ষের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে পুলিশ জানতে পারে শিশুটিকে আসলে হত্যা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সিলেট কোতোয়ালি থানার ওসি এসএম আবু ফরহাদ বলেন, অপমৃত্যুর মামলার পর আমরা তদন্তে যাই। তখন ছোটমনি নিবাসের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। সেই ফুটেজে শিশুটিকে হত্যার প্রমাণ পাওয়া যায়। এরপর এ ব্যাপারে এসপি, ডিসি, সমাজসেবা কর্মকর্তাসহ সবাইকে জানানো হয়। পরে ওই নারীকে আটকের সিদ্ধান্ত হলে বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। আমরা সমাজসেবা কার্যালয় কর্তৃপক্ষকে বলেছি মামলা করতে। তাঁরা যদি মামলা না করেন, পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দেবে।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনা এখনো তদন্তাধীন। তদন্তে যদি ছোটমনি নিবাসের কোনো কর্মকর্তা–কর্মচারীর বিরুদ্ধে হত্যার ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে তাঁদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, সিলেট সমাজসেবা কার্যালয়ের অধীনে ছোটমনি নিবাসে বর্তমানে আছে ৪২টি শিশু। এদের বয়স শূন্য থেকে সাত বছর পর্যন্ত। শিশুগুলোর তত্ত্বাবধানে আয়া রয়েছেন পাঁচজন।