Advertisement (Custom)

বিজ্ঞাপন
প্রকাশিত: বুধবার, ১৪ জুলাই, ২০২১
সর্বশেষ সংষ্করণ 2021-07-14T13:49:03Z
গোলাপগঞ্জলিড নিউজ

গোলাপগঞ্জে নির্মাণশ্রমিকের ঝুলন্ত লাশ : স্বজনদের দাবী সুপরিকল্পিত হত্যা

বিজ্ঞাপন

স্টাফ রিপোর্ট : গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাদেপাশা ইউনিয়নের পশ্চিম খাগাইল গ্রামে সেলিম উদ্দিন (৫০) নামে এক নির্মাণশ্রমিকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার সকাল ১০টায় গোলাপগঞ্জ কুশিয়ারা পাড়ি পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। নিহতের বাড়ী পাশে নির্মানাধিন দ্বি-তল ভবনের ছাদের রডের সাথে ঝুলন্ত দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেয়। উপজেলার পশ্চিম খাগাইল গ্রামের মৃত আলাউদ্দিনের ছেলে সেলিম উদ্দিন।

সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, বুধবার রাত ৩টার দিকে সেলিম উদ্দিনের পাশের বাড়ির একটি নির্মাধীন দ্বিতল ভবনের বাইরের অংশে ছাদের সাথে তাঁর লাশ ঝুলতে দেখতে পান স্থানীয়রা। এঘটনায় পুলিশকে খবর দিলে সকাল ১০টায় থানা পুলিশ ও কুশিয়ারা তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেন। পরে দুপুর দেড়টায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গোলাপগঞ্জ সার্কেল) রাশেদুল হক চৌধুরী, গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ চৌধুরী ও ওসি (তদন্ত) সুশংকর পাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে লাশ ময়না তদন্তের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

ঘটনাটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড দাবি করে নিহত সেলিমের ভাই নাজিম উদ্দিন বলেন, সেলিম পেশায় রাজমিস্ত্রী ছিলেন। পাশাপাশি খাগাইল গ্রামের আখলুছ হাজীর বাড়িতে কেয়ারটেকারের দায়িত্ব পালন করতেন। বেশ কিছুদিন থেকে একটি মহল প্রবাসী আখলুছ হাজীর বাড়ির কেয়ারটেকারের দায়িত্ব থেকে তাকে সরে যাওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। সম্প্রতি তিনি সেখান থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। গত ৩/৪দিন আগে সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে তিনি সেই দায়িত্ব থেকে সরে আসেন। কিন্তু দায়িত্ব ছাড়লেও একটি মহল তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। সেই আতঙ্কে তিনি রাস্তাঘাটে ও বাজারে যাওয়া বাদ দিয়ে দে। উপায়ন্ত না পেয়ে ছোট ভাইয়ের মাধ্যমে সিগারেট পর্যন্ত বাজার থেকে নিয়ে আসত বলেন জানান নিহত সেলিমের ভাই নাজিম উদ্দিন জানান।

এদিকে তাঁর রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চলছে নানা আলোচনা। লাশ উদ্ধারের সময় ঝুলন্ত অবস্থায় নিহত সেলিমের চোখে চশমা, এক পায়ে জোতা ও নির্মনাধীন ভবনের দুটি ছিদ্রের মধ্যে তাঁর দুটি হাত ছিল বলে জানান স্থানীয়রা। তারা জানান, গত ৪/৫দিন থেকে বিষন্ন ছিলেন সেলিম। তাঁর মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছিল। তাকে হত্যা করা হতে পারে বলে স্থানীয় আছিরগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী ও পাশ্ববর্তী কয়েকটি বাড়ির লোকজনদের জানান। তিনি ভয়ে কয়েকদিন থেকে স্ত্রী সন্তানসহ তাঁর শশুড়বাড়ি বাদেপাশা ইউনিয়নের বনগাঁওয়ে গিয়েও রাত্রীযাপন করেছেন বলে জানান স্থানীয়রা। বিষয়টি আত্মহত্যা না পরিকল্পিত হত্যা তা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের দাবি জানান তারা।

তাঁর মৃত্যুটি রহস্যজনক উল্লেখ করে উত্তর বাদেপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ বলেন, সে একজন ভালো মনের মানুষ ছিল। তাঁর মৃত্যুর রহস্যটি সঠিকভাবে উদঘাটন না হলে সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভোগবে বলে তিনি জানান।

এদিকে পুলিশের একটি সূত্র তাঁর মৃত্যুটি পরিকল্পিত বলে ধারনা করছে। তবে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়না তদন্তের জন্য ওসমানীর মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সুস্পষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না। সুরতহাল রিপোর্ট অনুসারে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট যেকোন দিকেই টার্ন করতে পারে বলে তিনি জানান।
বিজ্ঞাপন

জনপ্রিয় সংবাদ