বিজ্ঞাপন
ডেস্ক রিপোর্ট : আমরা নিত্যদিনের কাজকে সহজ করতে কতো কিনা করি। তেমনি প্রতিদিন বাজার করার ঝামেলা এড়াতে বর্তমানে কমবেশি সবাইএকদিনে বেশি পরিমাণে বাজার করে ফ্রিজে সংরক্ষণ করেন। কারণ খাবার সতেজ আর ভালো রাখতে ফ্রিজ অতুলনীয়। রান্না বান্না, ফল, সবজি, পানি, দুধ, মিষ্টি, কাঁচা বাজার সবকিছুই ফ্রিজে সংরক্ষণ করা যায়।
তবে সবকিছু যে ফ্রিজে রাখলেই ভালো থাকে, তেমন কিন্তু নয়। বেশ কিছু খাবার আছে, যেগুলো ফ্রিজে রাখলেই বরং নষ্ট হয়ে যায়। বেশি শীতল তাপমাত্রায় এই খাবারগুলোর স্বাদ এবং গুণাগুণ ভালো থাকে না। তাই খাবারের ধরন বুঝে তা সংরক্ষণ করা উচিত। চলুন এবার জেনে নেয়া যাক কোন খাবারগুলো ফ্রিজে রাখা উচিত নয়-
ড্রাই ফ্রুটস : শুকনো ফল বা ড্রাই ফ্রুটস কখনোই ফ্রিজে রাখা উচিত নয়। এতে শুকনো ফলগুলো নরম হয়ে স্বাদ হারিয়ে ফেলে।
কুমড়া : কুমড়া সবসময় বাতাস চলাচল করে এমন জায়গায় রাখা উচিত। ফ্রিজে কুমড়া রাখলে তা দ্রুত নষ্ট হয়ে যায় বা শুকিয়ে যায়।
গুঁড়া মশলা : শুকনা গুঁড়া মশলা ফ্রিজে রাখলে দ্রুত নষ্ট হয়। এর মেয়াদ অক্ষুন্ন রাখতে অন্ধকার এবং শুষ্ক স্থানে রাখা উচিত। তাপমাত্রা হবে স্বাভাবিক।
সয়া সস : সয়া সস ফ্রিজে রাখেন অনেকেই। বিশেষ করে সয়া সস ফ্রিজে রাখার পরিবর্তে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখলে সেটি অনেকদিন ভালো থাকে।
পিঠা বা মিষ্টি বা কেক : পিঠা, মিষ্টি, কেক, কুকিজ ফ্রিজে রাখলে ঠাণ্ডায় তার স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়। সে কারণে এগুলো খোলা না রেখে এয়ারটাইট বাক্সে রাখা উচিত।
রুটি : রুটি ফ্রিজে রাখলে তার স্বাদ এবং গঠনে পরিবর্তন হয়। রুটি শুকিয়ে পাঁপড়ভাজার মতো হয়ে যায়। এমনকি রুটিতে ছত্রাকও জন্মে যায়।
কফি : ফ্রিজে কফি রাখলে তার সুগন্ধ নষ্ট হয়ে যায়। কফি জমে যায়। স্বাদও নষ্ট হয়ে যায়। তাই ফ্রিজের পরিবর্তেন কফি সবসময় স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখা উচিত।
পেঁয়াজ : পেঁয়াজ সব সময় খোলা রাখাই ভালো। ফ্রিজে পেঁয়াজ রাখলে তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। তাছাড়া ফ্রিজে খোলাভাবে পেঁয়াজ রাখলে বিচ্ছিরি গন্ধ হয়ে যায়। তার চেয়ে এয়ার টাইট পাত্রে পেঁয়াজ কেটে রেখে দিলে দিন দুয়েক ভালো থাকে।
রসুন : একই অবস্থা হয় রসুনের ক্ষেত্রেও। রসুনের খোসা না ছাড়িয়ে ফ্রিজে রেখে দিলে আর্দ্রতার কারণে তা তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। পেঁয়াজ, আলুর মতো রসুনকেও খোলা জায়গায় রাখা উচিত। রসুনের খোসা ছাড়িয়ে বা বেটে এয়ার টাইট পাত্রে রেখে ফ্রিজে রাখা যেতেই পারে। তাছাড়া রসুনের গন্ধ ফ্রিজে একবার ছড়িয়ে পড়লে সহজে যেতে চায় না।
আলু : ঠাণ্ডা তাপমাত্রায় আলুর ‘স্টার্চ’ শর্করায় পরিণত হয়। সেই আলু খেলে শরীরের শর্করার পরিমাণ বেড়ে গিয়ে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল হয়। আলু না ধুয়ে সূর্যের আলো থেকে দূরে রাখা উচিত। তবে রান্না করা আলু ফ্রিজে রাখলে বিশেষ ক্ষতি হয় না।
মিষ্টি আলু : আলুর মতো মিষ্টি আলুও ফ্রিজে রাখলে তার স্বাদ এবং গঠনে পরিবর্তন আসে। আলু তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। শর্করার পরিমাণও বেড়ে যায়। সাধারণ আলুর মতো মিষ্টি আলুকেও ছায়ায় রাখা উচিত। খেয়াল রাখবেন, সেখানে যেন ভালোমতো বাতাস চলাচল করে।
টমেটো : টমেটো ফ্রিজে রাখাও অনুচিত। বেশিদিন টমেটো রাখলে তা নরম হয়ে যায়। তার থেকে রস বেরিয়ে যায়। ফলে টমেটোর স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়। পানিতে ধুয়ে শুকানোর পর বাতাস চলাচল করে এমন জায়গাতেই টমেটো রাখা উচিত।
টমেটো সস বা কেচাপ : টমেটোর মতো টোম্যাটো সস বা কেচাপেও ফ্রিজে রাখা ঠিক নয়। সস বা কেচাপে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিনেগার, লবণ এবং চিনি। সেগুলো ফ্রিজে রাখার পরিবর্তে ঘরের তাপমাত্রায় রাখাই ভালো।
আম : ফ্রিজে কাঁচা আম রাখলে পাকতে সময় নেয়। তাই কাঁচা আম পাকাতে চাইলে তা ফ্রিজে না রাখাই ভালো। পাকা আম টুকরো করে কেটে ফ্রিজে রেখে দিলে তা কালো হয়ে যায়। দেখতে খারাপ লাগে।
মধু : মধু ফ্রিজে রাখবেন কিনা অনেকেই জিজ্ঞেস করেন। উত্তর হল একদমই নয়। ফ্রিজে মধু রাখলে তা জমে যায়। তখন সেটি খাওয়া অসুবিধাজনক হয়ে পড়ে।
অলিভ অয়েল : ফ্রিজে তেল জাতীয় জিনিস রাখা একে বারেই উচিত নয়। তার উপর তেল যদি হয় জলপাইয়ের তাহলে তো একেবারেই নয়। ফ্রিজে অলিভ অয়েল রাখলে তা ঘোলাটে এবং দানাযুক্ত এবং ঘন হয়ে যায়। অলিভ অয়েল স্বাভাবিক উষ্ণতাতেই রাখা উচিত।
শাকপাতা : তুলসি, ধনেপাতা, পুদিনা পাতা, পালং শাক, পুঁইশাক ইত্যাদি ফ্রিজে না রাখাই উচিত। ফ্রিজে এগুলো টাটকা থাকলে বাইরে নিয়ে আসা মাত্র তা শুকিয়ে স্বাদহীন হযে যায়।
বাদাম : খোলাভাবে ফ্রিজে বাদাম রাখলে তা একেবারে নরম হয়ে যাবে। তাই ফ্রিজে বাদাম রাখাটা বোকামি। তবে বেশিদিন ধরে বাদাম সংরক্ষণ করতে চাইলে এয়ারটাইট কৌটোয় বাদাম ভরে রাখা যায়। বহুদিন পর্যন্ত বাদাম ঠিক থাকবে।