বিজ্ঞাপন
স্টাফ রিপোর্ট : বিয়ানীবাজারে গত ৩-৪ দিন থেকে তীব্র অক্সিজেন সংকট দেখা দিয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালসহ অন্যান্য অক্সিজেন সরবরাহকারি প্রতিষ্টানের সাথে আলাপ করে এমন তথ্য জানা গেছে। ক্রমাগত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় উপজেলায় অক্সিজেনের এ সংকট দেখা দেয়। তবে রোগীর সংখ্যা আরো বেড়ে গেলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, বিয়ানীবাজারে মাত্র দু’টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর রয়েছে। এগুলো প্রতিদিন ১০-১২লিটার অক্সিজেন সরবরাহ-সংরক্ষণ করতে পারে। অথচ উপজেলায় এখন প্রতিদিন ১শ’ লিটারের বেশী অক্সিজেন প্রয়োজন। বেসরকারি বিভিন্ন জায়গা থেকে এ চাহিদা মেটানো হচ্ছে। তবে গত বুধবার থেকে স্থানীয়ভাবে অক্সিজেনের সংকট দেখা দেয়।
বিয়ানীবাজারের চিকিৎসক ডা. শিব্বির অহমদ সোহেল অক্সিজেন সংকট নিয়ে তার উদ্বেগের কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তুলে ধরেন এভাবে- রাত ১১.৪০ যখন, এই মুহূর্তে ২ জন রোগী। শ্বাসকষ্ট কিন্তু অক্সিজেন নাই। আরেকজন ইনডোর এ ভর্তি কিন্তু সন্তানরা দৌড়াচ্ছে এদিক থেকে ওদিক অক্সিজেন ওর জন্য। আর এখন ১.৫৫ মিনিট । রোগী যাবে সিলেট, কিন্তু বিয়ানীবাজারে একটাও এম্বুলেন্স নাই, একটা আছে তাও আবার অক্সিজেন নাই। হাহাকার অক্সিজেন এর জন্যে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোয়াজ্জেম আলী খান জানান, অক্সিজেনের চাহিদা বেড়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে পরিস্থিতি খারাপ হবে। তিনি বলেন, উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতাল হওয়ায় এখানে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন, হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা, অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ অক্সিজেন সরবরাহকারী যন্ত্রপাতির সংকট রয়েছে। ডা. মোয়াজ্জেম জানান, সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন দিয়ে সাধারণ শয্যায় ভর্তি থাকা একজন রোগীকে মিনিটে ১৫ লিটার অক্সিজেন সরবরাহ করা যায়। আর অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে মিনিটে ১০ লিটার সরবরাহ করা যায়। তবে হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা দিয়ে একজন রোগীকে মিনিটে ৮০ লিটার পর্যন্ত অক্সিজেন সরবরাহ করা সম্ভব। অক্সিজেন কনসেনট্রেটর দিয়ে প্রতি মিনিটে সর্বোচ্চ পাঁচ লিটার পর্যন্ত অক্সিজেন সরবরাহ করা যায়। অক্সিজেন কনসেনট্রেটর নিজেই অক্সিজেন উৎপাদন করে রোগীর চাহিদা মিটিয়ে থাকে। মিনিটে পাঁচ লিটার অক্সিজেন প্রয়োজন- এমন রোগীকে অক্সিজেন কনসেনট্রেটরের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব। কিন্তু চাহিদা বাড়তে থাকলে পর্যায়ক্রমে সিলিন্ডার ও হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলার প্রয়োজন পড়ে।
সংশ্নিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্বাভাবিক সময়ে বিয়ানীবাজারের রোগীর জন্য ১০-১২টি অক্সিজেন সিলিন্ডারের প্রয়োজন হয়। করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের পর গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন এখানে ১০০-১৩০টি অক্সিজেন সিলিন্ডারের প্রয়োজন হচ্ছে। বেসরকারিভাবে অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহকারি প্রতিষ্টানের পরিচালক প্রণব কুমার সাহাও বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, অক্সিজেন সরবরাহ না বাড়ালে আমরাও অসহায়।
বিয়ানীবাজার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আবু ইসহাক আজাদ বলেন, উপজেলায় মোট ৭৬ জন করোনা পজিটিভ রোগী রয়েছেন। বৃহস্পতিবার আরো ৭জনের করোনা শনাক্ত হয়। উপজেলায় মোট ৩৭জন করোন রোগী মারা গেছেন। মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৬৮২জন।