বিজ্ঞাপন
জাহিদ উদ্দিন : গোলাপগঞ্জের ভাদেশ্বর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ফকিরটুল জায়গীরদার বাড়ি থেকে পূর্বভাগ প্রাইমারি স্কুল পর্যন্ত মাত্র ১০০মিটার রাস্তা পাকাকরণের অভাবে দুর্ভোগের শিকার হাজারো মানুষ। স্বাধীনতার পর থেকে ওই কাঁচা রাস্তা পাকা না হওয়ায় চরম দুর্ভোগে যাতায়াত করছেন কয়েকটি গ্রামের হাজারো মানুষ।
জানা যায়, এ রাস্তার একদিকে পূর্বভাগ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি বেসরকারি হাসপাতাল ও অন্যদিকে পূর্ব ফকিরটুল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থান হওয়ায় রাস্তাটি জনগুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। এছাড়াও এ রাস্তা দিয়ে ফকিরটুল, নোয়াই, ফুলসাইন্দ, করগ্রাম, ফতেহখানি, মাইজভাগ, কলাশহরসহ প্রায় ১০/১২টি গ্রামের হাজারো মানুষ এ রাস্তা দিয়ে ভাদেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদ, ভাদেশ্বর হাফিজিয়া দাখিল মাদ্রাসায় যাওয়া আসা করেন। রাস্তাটি জনগুরুত্বপূর্ণ হওয়ার পরেও পাকাকরণে জনপ্রতিনিধিদের কোন উদ্যোগ নেই।
সরজমিনে গেলে এলাকাবাসী জানান, তারা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েন বর্ষা মৌসুমে। অল্প বৃষ্টিতে রাস্তায় পানি উঠে যায়৷ এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন তারা। ছোট ছোট শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়ে খুবই আতঙ্কে থাকে তারা। অভিবাবকদের হাটু পানি মাড়িয়ে তাদের কাধে নিয়ে স্কুলে পৌছে দিতে ও আনতে হয়। বেশি কষ্টে পড়তে হয় রোগী ও লাশ নিয়ে যেতে। দীর্ঘদিন থেকে তারা এ রাস্তাটির পাকাকরণে জনপ্রতিনিধিদের কাছে বার বার ধরনা দিয়েছেন।
কিন্তু জনগুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি পাকাকরণে কেউ উদ্যোগ গ্রহণ করছেননা বলেও জানান তারা। এছাড়াও এলাকাবাসী সর্বশেষ গত কয়েকদিন আগে রাস্তাটি পাকাকরণে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের নিকট একটি আবেদন করেছেন।
এব্যপারে ভাদেশ্বর পূর্বভাগ ফকিরটুল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাহেদ আহমদ রউফ জানান, রাস্তাটির বেহাল দশার জন্য মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই।
তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে আরো বলেন, গত কয়েকদিন আগে আমার পিতা মারা যান। তাঁর লাশ খুব কষ্ট করে এই রাস্তা দিয়ে হাটু পানি মাড়িয়ে কবরস্থানে নিতে হয়েছে। রাস্তার জন্য উপজেলা চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন দপ্তরে অনেক আবেদন করলেও সরকারীভাবে কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছেনা। ফলে অসহায় হয়ে আমরা এলাকার লোকজনদের সহায়তায় কিছু মাটি ভরাটের কাজ করছি।
ময়নুল হক নামের আরেক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, একটু বৃষ্টি হলেই এই রাস্তায় হাটু পানি হয়ে যায়। রাস্তার কোন অস্তিত্ব থাকেনা। কাদা আর পানি মাড়িয়ে এলাকাবাসীকে চলতে হয়। রাস্তাটি পাকাকরণে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিকামনা করেছেন।
করগ্রাওয়ের বায়োবৃদ্ধ আফতাব আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের কোন বিকল্প রাস্তা না থাকায় এ রাস্তা দিয়ে আমদের যাতায়াত করতে হচ্ছে। এ রাস্তা যেন আমাদের অভিশাপ। তিনি বলেন, উপজেলার অন্যান্য রাস্তার কাজ হলেও এ রাস্তার কোন উন্নয়ন হয়না।
ভাদেশ্বর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আলা উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান জানান, আমি এ রাস্তার বিষয়ে অবগত নই। এটা সম্ভববত এলজিডির আওতাধীন রাস্তা নয়। তবুও খোঁজ নিয়ে দেখবো।