বিজ্ঞাপন
ডেস্ক রিপোর্ট: সিলেটের গোলাপগঞ্জে মন্দিরের সেবায়েত কর্তৃক ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত পরেশ চৌহান ও পলাতক তপনকে রক্ষা করতে তপনের আত্মীয় লিংকন দেব ও তাদের সহযোগিরা নিজেদের ‘ভক্ত’ পরিচয় দিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাছাড়া ধর্মকে পুঁজি করে ওই চক্রটি সত্য ঘটনাকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। এছাড়াও রয়েছে ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় পলাতক তপন প্রায়ই ধর্ষণ চেষ্টার শিকার কিশোরীর বাড়িতে এসে তার পরিবারকে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকীর অভিযোগ।
বুধবার (২১ এপ্রিল) সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এমনই অভিযোগ করেছেন গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাঘা কালাকোণা গ্রামের ঋষিময় দেবের বড় মেয়ে তুলি রাণী দেব।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গোলাপগঞ্জের কালাকোনা গ্রামে নির্মাণাধীন মন্দিরের এক কোনে বসবাস করে মন্দিরের সেবায়েত দাবিদার লম্পট ও নারীলোভী পরেশ চৌহান। গত ১৩ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টায় তার বোন প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে ঘর থেকে বের হয়। এ সময় সেবায়েত দাবিদার লম্পট পরেশ চৌহান ও তার সহযোগি কালাকোনা গ্রামের দীপঙ্কর দেব তপন তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। তার স্কুল পড়ুয়া বোন চিৎকার দিলে পরিবারের ও আশপাশের লোকজন গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। এসময় পরেশ চৌহান ও তপন দেব পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ১৩ এপ্রিল গোলাপগঞ্জ থানায় অভিযোগ দিলে প্রাথমিক তদন্ত শেষে মামলা রেকর্ড করে ১৪ এপ্রিল পুরোহিত দাবিদার লম্পট পরেশকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিন্তু তার সহযোগী দীপঙ্কর দেব তপন এখনো পলাতক রয়েছে।
ঘটনার পর একটি কুচক্রী মহল লম্পট পরেশ চৌহান ও তপনকে রক্ষা করতে তাদের সহযোগি লিংকন দেবসহ তাদের কয়েকজন নিকট আত্মীয় নিজেদের ‘ভক্ত’ পরিচয় দিয়ে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। যে মন্দিরের ভক্ত দাবি করেছে, সে মন্দির এখনো নির্মাণাধীন সেখানে ‘ভক্ত’ আসে কিভাবে। যারা সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যাচার করছে তারা ধর্ষক ও লম্পটদের সহযোগি।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, মন্দিরের পুরোহিত বা সেবায়েত পরেশ চৌহান স্থানীয় বাসিন্দা নয়। তার বাড়ি কোথায় কেউ জানে না। সে আসলেই সেবায়েত, পুরোহিত কী না- কেউ জানে না। সে কয়েক বছর আগে সিলেট শহরতলির মেজরটিলার দেবপাড়া এলাকার একটি মন্দিরে ছিলো। ওই মন্দিরেও নারী কেলেঙ্কারীর নানা ঘটনা সে বিতর্কিত হয় এবং নারী গঠিত ঘটনার কারনে তাকে এলাকার মানুষ তাড়িয়ে দিয়েছিলো। এরপর সে আশ্রয় নিয়েছিলো গোলাপগঞ্জের বাঘা ইউনিয়নের কান্দিগাওয়ের মন্দিরের। ওখানেও নারী ঘটিত ঘটনায় ধরা পড়লে তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, কান্দিগাঁওয়ের মন্দিরের থাকার সময় কালাকোনা গ্রামের দীপঙ্কর দেব তপনের সঙ্গে সংখ্যতা গড়ে উঠে লম্পট পরেশ চৌহানের। কান্দিগাও থেকে বিতারিত হওয়ার পর পরেশ চৌহানের পরামর্শে তপন দেব গত ২০১৯ সালের আগষ্ট মাস থেকে মন্দির নির্মান শুরু করে। নির্মাণাধীন মন্দিরের দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয় পরেশ চৌহানকে। ওখানে যে মন্দির নির্মাণ হচ্ছে সেটি ব্যক্তি মালিকানাধীন মন্দির। এলাকার কোনো মানুষ এই মন্দিরের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। মন্দিরের জায়গা জমি নিয়ে তাদের কোনো বিরোধও নেই।
তুলি বলেন, পরেশ চৌহান মন্দির স্থাপন কাজ শুরু করলে প্রায় সময় নানা ছলনার আশ্রয় নিয়ে ভুক্তভোগিদের বাড়িতে যেতো। প্রায় এক দেড় বছর আগে তার কু-নজর পড়েছিলো তুলি রাণীর উপর। তখন সে নানাভাবে উত্যক্ত করে। পরেশ চৌহানের এ আচরনের কারণে এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিলেন। এ ক্ষোভ থেকে রক্ষা পেতে চতুর পরেশ চৌহান চাঁদাবাজি সহ নানা অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করে। সম্প্রতি সময়ে পরেশ চৌহান ও তপন দেবের চোখ পড়ে স্কুল পড়ুয়া বোনের উপর। যার ফলে ১৩ এপ্রিল জোর পূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালায় পরেশ ও তপন। বর্তমানে দীপঙ্কর দেব তপন গ্রেপ্তার না হওয়ায় ‘পলাতক’ থাকা অবস্থায় তপন দেব মাঝে মধ্যে গ্রামে চলে আসে। এখন সে বলছে- ছোটো বোনের জীবন নষ্ট করে দেবে। প্রকাশ্য এলাকায় এসব বলে বেড়াচ্ছে তার সহযোগী লিংকন দেব ও আত্মীয়রা। এতে ভোক্তভোগিরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। যে কোনো সময় তাদের উপর হামলা সহ নানা ঘটনা ঘটাতে পারে পরেশ চৌহানের সহযোগিরা।
এ অবস্থায় প্রশাসনের কাছে নিজেদের নিরাপত্তা ও ন্যায় বিচার দাবি এবং পলাতক দীপঙ্কর দেব তপনের গ্রেপ্তারের অনেুরোধ করেন তুলি রাণী দেব ও তার বাবা ঋষিময় দেবসহ পরিবারের সদস্যরা।