বিজ্ঞাপন
ফাহিম আহমদ : গত বছর শবেবরাতে করোনা মহামারীর কারণে বন্ধ ছিলো দেশের সকল মসজিদ। ঘর থেকে মুসলামনরা করেছিলেন মুক্তির প্রার্থনা। তবে এবার এক বছর কাটিয়ে মুসলমানরা মসজিদে মসজিদে করছেন মুক্তির প্রার্থনা।
প্রতি বছরের ন্যায় আজও সকাল থেকেই শুরু হয় বাজারে ভিড় আর গ্রামে গ্রামে কবরস্থান পরিষ্কার করা। স্থানীয়ভাবে কয়েকজন মিলে হয়েছে গরু জবাই। সব ছাপিয়ে বিকাল হতেই গ্রামের রাস্তায় মুসল্লিদের আনাগোনা বেড়েছে। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে আগরবাতি হাতে শিশুপ্রাণ দলে দলে ছুটেছে এক গোরস্থান থেকে অন্য গোরস্থানে। বড়রাও বাচ্চাদের নিয়ে করছেন স্বজনদের কবর জিয়ারত। মসজিদে মসজিদে মুসল্লিদের ভিড়। রাত গভীর হলেই শুরু হবে জিকির। ‘আল্লাহ, আল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মোহাম্মাদুর রাসুল আল্লাহ’ ইত্যাদি নানা সুরের জিকির হবে মসজিদগুলোতে। -এটি যেন গোলাপগঞ্জবাসীর জন্য অতি পরিচিত অতীত। শবেবরাতে উপজেলার সকল জায়গায় এমন দৃশ্য গতবার চুখে না পড়লে এবার ঠিকই পড়েছে।
গত বছর করোনা মহামারীর কারণে গোলাপগঞ্জে অনেকটা নীরবেই কেটেছে শবেবরাত। মসজিদে ছিলো না মুসল্লিদের ভিড়। মাইকেও ছিলো না ওয়াজের সুর। কেবল পাড়ায় মহল্লার ঘর থেকে ভেসে আসছিলো জিকিরের সুর।
সোমবার (২৯ মার্চ) বিকেল থেকে উপজেলার সর্বত্রে অন্যান্য বছর যেভাবে শবেবরাত পালন করা হয় সেই দৃশ্য চুখে পড়েছে।
এবার উপজেলার সর্ববৃহৎ কবরস্থান ‘ফুলবাড়ি বড়মোকাম’ ঘুরেও দেখা গেছে গত বছর করোনার কারণে ওয়াজ মাহফিল না হলেও এবার ঠিকই হচ্ছে। প্রতি বছরের ন্যায় আজও মুসল্লীরা বিকেল থেকে ছুটছেন ওয়াজ মাহফিলে।
গতবার শবেবরাতের সময় এ কবরস্থানে
স্থানীয় কিছু মুসল্লিরাই নিজেদের স্বজনদের কবর জিয়ারত করছেন নীরবে দাঁড়িয়ে। তবে এবার সেখানে মুসল্লিদের ঢল নেমেছে। প্রত্যেক মসজিদে মসজিদে ওয়াজ মাহফিল।
একই দৃশ্য উপজেলার পৌর এলাকার রণকেলী ঘুগারকুল মোকামেও। স্বজনদের কবর জিয়ারতে মানুষের আনাগোনা ছিল চুখে পড়ার মত। মন খুলে করছেন কবর জিয়ারত। পুরো এলাকার মানুষের জন্য এ কবরস্থান হওয়ায় এখানে স্থানীয় লোকজনই স্বজনদের কবর জিয়ারত করছেন। অন্য এলাকার মুসল্লিদের সংখ্যা ছিল অন্যান্য বছরের মত।
এসময় কথা হয় শরীফ মিয়া নামের একজনের সাথে। তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে গতবার আতঙ্ক ছিলো। তাই ঘর থেকে বের হওয়া নিরাপদ ছিলো না। এবার ঘর থেকে বের হয়ে মসজিদে যাচ্ছি, স্বজনদের কবর জিয়ারত করতে পারায় অনেক খুশি লাগতেছে।
সব মিলিয়ে গোলাপগঞ্জে গতবার করোনার কারণে শবেবরাতের চিরচেনা রুপ দেখা না গেলেও এবার ঠিকই আগের মত দেখা যাচ্ছে। মসজিদে গিয়েই জিকির আর ভাব গম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে পালন করছেন ভাগ্য রজনী। সেই সাথে মহামারী করোনার হাত থেকে বিশ্বের মুসলিম উম্মাহের মুক্তি আর সকলের শান্তির প্রার্থনা করছেন।