বিজ্ঞাপন
ডেস্ক রিপোর্ট: স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের সময় হেফাজতে ইসলামের দেশব্যাপী ‘মহাতাণ্ডবের কঠোর নিন্দা’ এবং ‘ধর্মের নামে সন্ত্রাসের রাজনীতি’ নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।
বুধবার (৩১ মার্চ) এক বিবৃতিতে কমিটির পক্ষ থেকে হেফাজতে ইসলামের সব ধরনের সভা সমাবেশ বন্ধ করা এবং হেফাজত-জামায়াতের মতো ‘স্বাধীনতাবিরোধী জঙ্গি মৌলবাদী সন্ত্রাসী সংগঠন’ নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি জানানো হয়।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে আসছিল হেফাজতে ইসলাম ও কয়েকটি রাজনৈতিক দল। সেই আন্দোলনে স্বাধীনতা দিবস থেকে তিন দিন ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক সহিংসতা চালায় হেফাজতে ইসলাম। সংঘাতে তিন দিনে অন্তত ১১ জন নিহত হন।
এই ‘ধর্মীয় উন্মাদনা ও উচ্ছৃঙ্খলতা’ বন্ধ না করলে সরকার কঠোর অবস্থানে যাবে বলে হুঁশিয়ার করা হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে।
অন্যদিকে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় আমির জুনাইদ বাবুনগরী হুমকি দিয়েছেন, দাবি পূরণ না হলে ভবিষ্যতে তারা ‘কঠিন কর্মসূচি’ দেবেন।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি তাদের বিবৃবিতে বলেছে, ‘পূর্বাহ্নে ঘোষণা দিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী মৌলবাদী সন্ত্রাসী হেফাজতে ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তীর উৎসব উদযাপন বানচাল করার জন্য সারা দেশে একের পর ধ্বংসাত্মক ঘটনা ঘটিয়েছে। বিশেষভাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তারা যে নারকীয় তাণ্ডব চালিয়ে সুরসম্রাট আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনে গত শতাব্দীর কিংবদন্তিতুল্য সঙ্গীতগুরু ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর স্মৃতিবিজড়িত নিদর্শনসমূহ ধ্বংস করেছে এবং যে পৈশাচিকতায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙেছে তা আমাদের একাত্তরের পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং পরবর্তীকালে আল কায়েদা ও আইএস-এর নৃশংস বর্বরতার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে।
সুনামগঞ্জ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পর্যন্ত তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপরও একইভাবে হামলা এবং উপাসনালয় ধ্বংস করেছে। দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে হেফাজতের তাণ্ডবে বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীর সম্পৃক্ততার কথা গণমাধ্যমে বলা হলেও স্থানীয় প্রশাসন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে, যা হেফাজতিদের অধিকতর নৃশংসতায় প্ররোচিত করেছে।’
সংবাদপত্রে আসা খবরের বরাত দিয়ে নির্মূল কমিটি বলেছে, ‘গত ৫ দিনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী হামলার জন্য ২৫টি মামলায় ১৫ হাজার ব্যক্তিকে আসামি করা হলেও হেফাজতের মাত্র ৩৮ জন স্থানীয় নেতাকর্মীকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। বাকিদের রাজনৈতিক পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি। আমরা বহুবার বলেছি, একাত্তরে যারা ধর্মের নামে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে, তাদেরই রাজনৈতিক ও আদর্শিক উত্তরাধিকারী হচ্ছে হেফাজতে ইসলাম, যারা ঘোষণা দিয়ে বাংলাদেশকে মোল্লা উমরের তালেবানি আফগানিস্তান বানাতে চায়।’